পাট বিশ্ব জয় করতে প্রস্তুত: জাপানে আলোচনায় বক্তারা

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট দেশের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্ব জয় করতে প্রস্তুত। জাপানে পাটের বাজার সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে পাটের পরিবেশ-বান্ধব ব্যবহার ও পাটের অপার সম্ভাবনা সংক্রান্ত এক আলোচনা এবং বিজনেস টু বিজনেস নেটওয়ার্কিং অনুষ্ঠানে বক্তারা এই আশাবাদ প্রকাশ করেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে পরিবেশবান্ধব পাট ও জাপানে বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের সম্ভাবনা নিয়ে এক গোল-টেবিল আলোচনা ও বিটুবি নেটওয়ার্কিং সেশনের আয়োজন করে বাংলাদেশ দূতাবাস, টোকিও। দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এবং সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী,  বাংলাদেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদলের সদস্য ও ব্যবসায়ীগণ এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জাপানি ব্যবসায়ী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। অনুষ্ঠানে যোগদান করায় তিনি অতিথিদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল ও বিশাল বাজার বিদ্যমান,  এছাড়া জাপানি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে নিয়ে যে জরিপ করেছে তাতেও বাংলাদেশকে ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের গন্তব্য হিসাবে উল্লেখ করেছে। দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান উল্লেখ করে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় পাট শিল্প খাতে জাপানি বিনিয়োগকারীদের অধিক হারে বিনিয়োগ করার আহবান জানান রাষ্ট্রদূত।
সাবের চৌধুরী বলেন- বাংলাদেশ এখন অনেক পরিবর্তিত, অনেক উন্নত, নতুন এক বাংলাদেশ যা বিশ্বের দ্রুত অগ্রসরমান রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিক শুধু সহজ লব্ধই না কর্মঠ ও উন্নয়নশীলও। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নির্দেশনা ও উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের মৃতপ্রায় পাট শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরে এসেছে বলে মন্তব্য করেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি। তিনি জাপানে পাটের নানাবিধ ব্যবহারের সুযোগের কথা উল্লেখ করে পরিবশেবান্ধব পাট শিল্পে জাপানি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। সাবের চৌধুরী বলেন বাংলাদেশে পাটের অতীত ছিলো ঐতিহ্যবাহী কিন্তু তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, পাটের ভবিষ্যৎ হবে উজ্জ্বল সোনালি।
এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্যও। বাংলাদেশের পাট শিল্প নিয়ে বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশনের পক্ষে উপস্থাপনা করেন উপসচিব সাদিয়া শারমিন এবং জাপান এক্সারটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন’র (জেট্রো) তাকাশি সুজুকি। আইডিই জেট্রোর পি.এইচ.ডি গবেষক কেন্মেই সুবোতা পাট সংক্রান্ত তার গবেষণালব্ধ ফলাফল ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী পাট কোম্পানি মারসান সাঙ্গিও’র প্রেসিডেন্ট কিয়োনরি নাকাজিমা বাংলাদেশের পাট ও ব্যবসার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। তিনি জানান বাংলাদেশের শ্রমিকগণ অত্যন্ত কর্মঠ এবং সৎ।
পরে উন্মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্ন-উত্তর পর্ব এবং বিজনেস টু বিজনেস নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। ছোট পরিসরে বিভিন্ন রকমের ও বৈচিত্র্যময় পাটজাত পণ্যের একটি প্রদর্শনীও করা হয়।
আগামীকাল থেকে টোকিওর বিগ সাইটে শুরু হবে ইন্টেরিয়র লাইফ-স্টাইল মেলা যেখানে বাংলাদেশ থেকে আগত পাট শিল্প উদ্যোক্তাগণ তাদের উন্নত ও আধুনিক দ্রব্যাদির প্রদর্শন করবেন।
Advertisement