পোশাক শ্রমিককে তুলে নিয়ে রাতভর গনধর্ষণ

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: রাস্তা থেকে অপহৃত হয়ে রাতভর গণধর্ষণের শিকার হয়েছে দুই সন্তানের জননী এক নারী পোশাক শ্রমিক। অন্যদিকে চট্টগ্রামে টেলিভিশনের সাংবাদিক বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে বিবাহিতা এবং সাতমাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারী। এ ঘটনায় ধর্ষক আটক হলেও ফরিদপুরে ৮ বছর বয়সী এক শিশু ধর্ষনের ঘটনায় আটক হয়নি কেউ। এছাড়া গাজীপুরে ধর্ষনে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে এক স্কুল ছাত্রী। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদন :

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাকা জানান : নারী পোশাক শ্রমিককে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনায় ৭ জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। ধর্ষিতা বাদী হয়ে এ মামলা করেন। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত ৫ ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে। গত সোমবার রাতে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মনগাঁও এলাকায় এঘটনা ঘটে।

গ্রেফতারকৃতরা হল সোনারগাঁ উপজেলার ব্রাহ্মনগাঁও গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে আবু সাইদ ( (২৫), রেহাজ উদ্দিনের ছেলে ইমরান (২৩), নবী হোসেনের ছেলে রনি মিয়া(২০), আবু সিদ্দিকের ছেলে আবুল হোসেন (৩২), বাগবাড়ি গ্রামের ভুট্টু মিয়ার ছেলে মাসুম (২২)। এছাড়া আরিফ ও জাহাঙ্গীর নামের দুই ধর্ষক পলাতক রয়েছে।

জানা গেছে, ধর্ষিতা নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত রবিন টেক্স গার্মেন্টসে ফোন্ডিং ম্যান হিসেবে প্রতিদিন বাড়ি থেকে আসা যাওয়া করে কাজ করেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় গার্মেন্টস ছুটি হলে বাড়ি (গাউছিয়া) যাওয়ার জন্য একটি সিএনজিতে উঠেন। সিএনজিটি গাউছিয়া পৌছলে সে গাড়ি থেকে নামতে চাইলে ধর্ষক জাহাঙ্গীর বাধা দিয়ে সিএনজির ড্রাইভারকে সোনারগাঁয়ের তালতলার দিকে আসতে বলে। এসময় ধর্ষক জাহাঙ্গীর তার মুখে স্কচটেপ দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাত সাড়ে ৭ টার দিকে ব্রাহ্মনগাঁও গ্রামের জনৈক আব্দুল হালিম মিয়ার দোচালা টিনের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে ৭ জন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

ধর্ষিতা বলেন, প্রথম আবু সাইদ ও পর্যায়ক্রমে ইমরান, রনি মিয়া, আবুল হোসেন, আরিফ, মাসুম ও জাহাঙ্গীর পালাক্রমে একাধিকরার ধর্ষণ করে। পরে রাত ৩ টার দিকে বাড়ির মালিক হালিম বাহির থেকে ঘরে এসে ঘটনাটি দেখে বাধা দিলে ধর্ষকরা জোর করে আমাকে অন্য স্থানে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। এ সময় আশেপাশের লোকজন তালতলা ফাড়ি পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনার স্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

তালতলা বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আহসান উল্লাহ জানান, পোশাক শ্রমিককে পালাক্রমে ধর্ষণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করেছি। ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছি। বাকী দুই ধর্ষককে গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায় : সাংবাদিক বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে নগরীর পাহাড়তলী থানার হাজীক্যাম্প এলাকা থেকে শহীদুল ইসলাম (৪৫) নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।

পাহাড়তলী থানা পুলিশ জানায়, শহীদুল ইসলাম নিজেকে ‘এসটিভি২৪’ নামে একটি অনলাইন টেলিভিশনের মালিক ও সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন। পাহাড়তলী হাজীক্যাম্প এলাকায় কথিত অফিসের একটি কক্ষে মাদক সেবন এবং অসামাজিক কাজ করেন। সাংবাদিক বানানোর কথা বলে বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের সেখানে এনে জিম্মি করতেন।

গত রোববার রাতে এক তরুণী থানায় এসে অভিযোগ করেন, সাংবাদিক বানানোর প্রলোভনে তাকে সাতমাস ধরে অফিসে এনে প্রতিদিন যৌন নিপীড়ন করেছেন। ওই তরুণী বিবাহিতা এবং সাতমাসের অন্তঃস্বত্ত্বা। তার মামলার ভিত্তিতে শহীদুলকে গ্রেফতার করা হয়।

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানায় : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ধুলজোড়া গ্রামে ৮বছর বয়সি এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই শিশু জয়পাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ওই ভিকটিমের মা বাদি হয়ে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে শিফাত শরীফ (১৯) নামে এক বখাটে যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ ও থানা সূত্রে জানা যায় ভিকটিমের প্রতিবেশি ধুলজোড়া গ্রামের দাউদ শরীফের ছেলে শিফাত কামরাঙ্গা দেওয়ার কথা বলে বাড়ির পাশের বাগানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় ওই শিশুর বাড়িতে তার মা বাবা ছিল না। পরে শিশুটি তার মা বাবাকে বিষয়টি জানালে ওইদিন দুপুরে থানায় এসে অভিযোগ দেয়। ভিকটিম ও শিফাত গ্রাম্য সম্পর্কে চাচা ভাতিজি। পুলিশ ভিকটিমকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। এ ব্যাপারে থানা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

গাজীপুর : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১২) দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মো. ফয়সাল (২২) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। এতে করে ওই ছাত্রী দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। ধর্ষক ফয়সালের বাড়ি উপজেলার আড়াবাড়ি এলাকায়। তিনি মাওনা পিয়ার আলী ডিগ্রি কলেজের ছাত্র।

জানা গেছে, উপজেলার মৌচাক এলাকার একটি বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিল ফয়সাল। কয়েকদিন আগে ওই ছাত্রী স্কুলে ক্লাস চালকালে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় সহপাঠী ও শিক্ষকরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরদিন তাকে মৌচাক পুপুলার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেন। পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা যায়, সে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সেখানে চিকিৎসা শেষে ওই ছাত্রী বর্তমানে বাড়িতেই অবস্থান করছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় লজ্জায় স্কুলেও যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে সে। ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, মেয়ের চিকিৎসা চলছে। এখনও সে পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। সুস্থ হলে মেয়েকে নিয়ে গিয়ে থানায় অভিযোগ দেবো।

মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জামাল উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Advertisement