প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ, আইনজীবীকে এক লাখ টাকা জরিমানা

রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা নিয়ে রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে আদালতের সময় নষ্ট করায় আইনজীবী এম এ আজিজ খানকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বিভাগ এই আদেশ দেন।বেঞ্চের অন্য ৭ বিচারপতি হলেন বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম, বিচারতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আনা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আদালতের সময় নষ্ট করায় আইনজীবী এম এ আজিজ খানকে খরচা হিসেবে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে লিভ টু আপিলকারীকে বলা হয়েছে বলে জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রজ্ঞাপন জারি করে। ইসির প্রজ্ঞাপনের বৈধতা নিয়ে পৃথক দুটি রিট হয়। পৃথক রিটের ওপর একসঙ্গে শুনানি নেন হাইকোর্ট। শুনানি শেষে গত ১৫ মার্চ হাইকোর্ট রিট দুটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেন।

দুটির মধ্যে একটি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ আজিজ খান। ইসির প্রজ্ঞাপন নিয়ে আবদুল মোমেন চৌধুরীসহ সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী অপর রিটটি করেন।গত ২৪ এপ্রিল দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিন শপথ নেন। একই দিন হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশিত হয়। হাইকোর্টের আদেশ এবং গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ইসির প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে চলতি মাসে লিভ টু আপিল করেন আইনজীবী এম এ আজিজ খান। একই সঙ্গে নতুন করে নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রপতি পদ খালি রাখা নিশ্চিতের আবেদন জানানো হয়।বিষয়টি ১৫ মে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে ওঠে। আবেদনটি ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত উল্লেখ করে ১৫ মে চেম্বার কোর্ট তা (আবেদন) নামঞ্জুর করে দিয়ে লিভ টু আপিল ১৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় আজ লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি হয়।আজ আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী এম এ আজিজ খান নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ আদেশে বলা হয়, রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ‘দ্য অফিস অব প্রফিট’ ধারণ করেন। কিন্তু এটি প্রজাতন্ত্রের কর্মে একটি লাভজনক (অফিস অব প্রফিট) পদ নয়। রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণের পদ্ধতি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে অন্যদের নিয়োগের মতো নয়। তদুপরি প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মে নিয়োজিত কর্মচারীদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের যেসব বিধান ও নিয়ম রয়েছে, সেগুলো রাষ্ট্রপতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।আদেশে আরও বলা হয়, সংবিধান অনুসারে ‘নির্বাচন’ ও ‘নিয়োগ’ একই অর্থ বহন করে না। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশের ঐক্যের প্রতীক। আর সংবিধানের নবম ভাগ (বাংলাদেশের কর্ম বিভাগ) অনুসারে যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত, তারা প্রজাতন্ত্রের সেবায় নিয়োগকৃত কর্মচারী।রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে ২৪ এপ্রিল থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

Advertisement