বাংলাদেশিদের নোবেল দেওয়া হলে…

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, গাড়ি ভাঙচুর করেই একদল লোক বিশেষ রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে গায়েব হয়ে যাচ্ছে। শুধু তা–ই নয়, এই রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে তারা মুহূর্তেই বিদেশেও চলে যাচ্ছে। তাই পুলিশের দায়ের করা প্রতিটি মামলায় দেখা যাচ্ছে যে বেশির ভাগ আসামিই পলাতক কিংবা ঘটনার সময় ছিল দেশের বাইরে। অথচ পুলিশের মতে, তারা তখন ঘটনাস্থলে ছিল। এই বিশেষ রাসায়নিক উপাদানের সন্ধান এবং চমকপ্রদ প্রয়োগের জন্য গায়েবি মামলার সেই আসামিরাই পেতে পারত রসায়নে নোবেল।স্যার, ঘটনাস্থলে আমি থাকব কীভাবে! আমি তো তখন কলকাতায় পেটের গ্যাসের চিকিৎসা করাতে গেছিলাম!

এই তো পাওয়া গেছে! দ্রুত এই গ্যাসের নমুনা নিয়ে রাখতে হবে, এইটাই সেই রহস্যজনক গ্যাস।

চিকিৎসাশাস্ত্র: হেলমেট বাহিনী

দৈনন্দিন জীবনে প্রতিনিয়তই পড়তে হয় নানা দুর্ঘটনায়। অথচ এসব থেকে মুক্তির উপায় একটিই, সেটা হলো হেলমেট। এই হেলমেটের সুবাদে হাত–পা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সবকিছুর নিয়ন্ত্রক মাথা তো রক্ষা পায় অন্তত। এভাবে মারামারি কিংবা হাতাহাতিতে হেলমেটের ব্যবহার কমিয়ে আনে মৃত্যুঝুঁকি। এর ফলে অতি শিগগির দেশের মানুষের মৃত্যুহার ক্রমেই হ্রাস পাবে এবং কে জানে, অদূর ভবিষ্যতে মৃত্যুহার কমতে কমতে আমরা হয়তো পেয়ে যেতে পারি অমরত্বের স্বাদও! তাই মৃত্যুঝুঁকি কমানো হেলমেটের প্রয়োজনীয়তা জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য চিকিৎসাশাস্ত্রে এ বছর নোবেল পাওয়া উচিত ছিল হেলমেট বাহিনীর।আপনাদের ব্রেন তো আইনস্টাইনের মতো!

এ কারণেই তো মাথায় হেলমেট পরে থাকি।

সাহিত্য: ‘সহমত ভাই’ কমেন্টকারী

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো যখন অল্প কথায় মনের একাত্মতা প্রকাশ করতে ব্যর্থ, ঠিক তখনই আবিষ্কার হলো গণমানুষের মনের ভাষার প্রতিলিপি ‘সহমত ভাই’। দুটি মাত্র শব্দ, ছয়টি মাত্র বর্ণ। এতেই হয়ে গেল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যকীর্তি। একই সঙ্গে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, একাত্মতা কিংবা হাতে হাত রেখে এগিয়ে চলার অন্যতম বহিঃপ্রকাশ এই ‘সহমত ভাই’। সাহিত্যের মূল উদ্দেশ্য স্বল্প কথায় মনের ভাব প্রকাশ করে একটি জাতিকে একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া । আর এই মহান দায়িত্ব পালন করায় এ বছর সাহিত্যে নোবেল পাওয়া উচিত ‘সহমত ভাই’ লিখে কমেন্টকারী প্রত্যেক ব্যক্তির।এখন আমি আমার নতুন কবিতার বই সহমত ভাই থেকে একটি কবিতা আবৃত্তি করব—সহমত ভাই,/ সহমত সহমত ভাই/ সহ সহ মত মত ভাই…

সহমত ভাই! সহমত ভাই!

অর্থনীতি: সরকারি ব্যাংকগুলো

রিজার্ভ চুরি কিংবা ঋণ কেলেঙ্কারি—এভাবেই সোনার বাংলার সমৃদ্ধ অর্থনীতিকে নানা প্রতিকূল পরিবেশে ফেলেছেন তাঁরা। যার ফলে দেশের অর্থনীতি আজ লুতুপুতু ফার্মের মুরগির মতো দুর্বল নয়; বরং দেশি মুরগির মতো সবল। অল্প কেলেঙ্কারিতেই ধসে পড়া অর্থনীতি আজ শত প্রতিকূল পরিবেশে বিশাল বিশাল কেলেঙ্কারিতেও ভেঙে পড়ে না; বরং ৪০০–৫০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারির পরও এগিয়ে যায় নিজস্ব গতিতে। প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য তাঁদের এই স্বীকৃতি অবশ্যপ্রাপ্য ছিল।দেশে এ বছর প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে…

লক্ষণ তো সুবিধার লাগে না! বাড়বে কেন? কই মুখলেছ, দুই–চারটা ব্যাংক মিলাইয়া ৫০০ কোটি নিয়া আয় তো। কয় দিন টাইট না দিলে যা হয় আর কি!

শান্তি: বিটিভি

দেশে যখন আন্দোলনের জোর হাওয়া বইছে, ঠিক তখনই মানুষের মনে একটু সুখ দিতে জুড়ি নেই বিটিভির। ‘বি পজিটিভ’ চিন্তাধারা মনেপ্রাণে লালন করা এই চ্যানেল সবকিছু ছাপিয়ে দিনাজপুরে বাতাবিলেবুর বাম্পার ফলনের সংবাদ প্রচার করে। দুর্ঘটনা বা আন্দোলনের মতো খবরগুলো লাইমলাইটে না এনে সামনে আনে শুধুই টসটসে বাতাবিলেবু চাষের সাফল্যগাথা। রাতের সংবাদে তা দেখে মানুষ স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে সকালেই জোড়ায় জোড়ায় বাতাবিলেবু কিনতে থাকে। দেশের মানুষকে এভাবে প্রতিনিয়ত শান্তির বার্তা দেওয়া আদি ও আসল বিটিভিরই নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্য।এ বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছে বিটিভি।

ধুর আজাইরা খবর খালি, বাতাবিলেবুর বাম্পার ফলন হইছে কি না, সেই খবর নাই, আছে যত আজাইরা অশান্তির খবর নিয়া!

Advertisement