বাংলাদেশিসহ ইউরোপগামী ৫০০ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আটকালো লিবিয়া

অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইউরোপে যাওয়ার সময় বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫০০ অভিবাসন প্রত্যাশীকে আটক করল লিবিয়ান কোস্টগার্ড বাহিনী। রবিবার (৩ অক্টোবর) আটককৃত লোকজনের মধ্যে বাংলাদেশ, সোমালিয়া, সুদান ও সিরিয়ার নাগরিক রয়েছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এরই মধ্যে বিবৃতির মাধ্যমে তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।সংস্থাটি বলছে, অভিবাসন প্রত্যাশীদের বহনকারী নৌকাটি রবিবার আটক হয়। এরপর সেই নৌকায় থাকা যাত্রীদের লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর জাভিয়ার একটি তেল পরিশোধনাগার পয়েন্টে নামিয়ে দেওয়া হয়। যদিও আটককৃত অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে ঠিক কোন কোন দেশের নাগরিক কতজন করে রয়েছেন, তা এখনো জানানো হয়নি।

এশিয়া ও আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ লিবিয়া হয়ে ইউরোপ যাওয়ার পথে আটক হওয়ার সবশেষ ঘটনাটি এটি। এর মাত্র একদিন আগে, অর্থাৎ গেল শনিবার (২ অক্টোবর) ইউরোপ যাওয়ার পথে ৯০ অভিবাসন প্রত্যাশীকে আটকা করে লিবিয়ার কোস্টগার্ড। এদের মধ্যে আট নারী ও তিনটি শিশুও ছিল। পরবর্তীকালে তাদের ত্রিপোলিতে ফেরত পাঠানো হয়।ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, নৌকাটি থেকে দুই অভিবাসন প্রত্যাশীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া সমুদ্রে নিখোঁজ রয়েছেন আরও কমপক্ষে ৪০ জন।এ ঘটনার আগের দিন (১ অক্টোবর) গারগারেশ শহর থেকে নারী-শিশুসহ প্রায় চার হাজার অভিবাসী বা ইউরোপে অভিবাসন প্রত্যাশীকে আটক করে লিবিয়া সরকার। অবৈধভাবে অভিবাসন ও মাদক পাচার রোধে অভিযানটি চালানো হয় বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। কিন্তু কোনো পাচারকারী বা মাদক কারবারিকে আটকের খবর পাওয়া যায়নি।লিবিয়ার সমুদ্রে ধরা পড়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের অনেক সময় বন্দিশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্য এবং দরিদ্র আফ্রিকার দেশগুলোর পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশের বহু মানুষের অবৈধ পথে ইউরোপ যাওয়ার অন্যতম প্রধান রুট হয়ে উঠেছে লিবিয়া। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে লিবিয়া ও তিউনিসিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করে ইউরোপে পৌঁছেছে অন্তত ৪৪ হাজার মানুষ।ভয়াবহ এই যাত্রার সময় আরও ২৫ হাজার অভিবাসন প্রত্যাশীকে আটক করেছে লিবিয়ান কোস্টগার্ড। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে সমুদ্রে নৌকাডুবিতে ১১ হাজারের বেশি অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।সূত্র : আল-জাজিরা

Advertisement