বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৫৪ লাখ ছাড়াল

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখ যোগ্য পরিমাণে বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে রোগটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়েছে।

সর্বশেষ এক দিনে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এ দিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যথাক্রমে রাশিয়া, জার্মানি, পোল্যান্ড, ফ্রান্স এবং ভিয়েতনামের নাম। এতে বিশ্বব্যাপী কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ কোটি ৩১ লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। অপর দিকে মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৫৪ লাখ ৩০ হাজারে পৌঁছেছে।বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ছয় হাজার ৫২৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ল প্রায় দুই হাজার। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪ লাখ ৩০ হাজার ৩১৪ জনে দাঁড়িয়েছে।

নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১২ লাখ আট হাজার ৮১০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে পাঁচ লক্ষাধিক। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৮ কোটি ৩১ লাখ ৫৯ হাজার ২৮১ জনে পৌঁছে গেছে।এ দিকে শেষ ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে মহামারি করোনার থাবায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু দেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ। একই সময়ে মার্কিন ভূখণ্ডে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন তিন লাখ নয় হাজার ৭৭০ জন। আর মারা গেছেন এক হাজার ৭৯৯ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত পাঁচ কোটি ৪১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৫ জন শনাক্ত হয়েছেন। একই সময়ে মৃত্যুবরণ করেছেন আট লাখ ৪১ হাজার ৯৮৪ জন।

অন্য দিকে দৈনিক প্রাণ হারানোদের সংখ্যার তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়ার নাম। গেল এক দিনে দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৯৩৫ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ২১ হাজার ৯২২ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে এক কোটি চার লাখ ২৭ হাজার ৪৫২ জনে পৌঁছে গেছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিন লাখ ছয় হাজার ৯০ জনের।শেষ ২৪ ঘণ্টায় ব্রিটেনে নতুন করে মহামারি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন এক লাখ ২৯ হাজার ৪৭১ জন। আর মারা গেছেন ১৮ জন। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির তাণ্ডব শুরুর পর থেকে যুক্তরাজ্যে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটি ২৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৬ জন। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন এক লাখ ৪৮ হাজার ২১ জন। একই সময়ে ফ্রান্সে নতুন করে কোভিড শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৭৯ হাজার ৮০৭ জন এবং প্রাণ হারিয়েছেন ২৯০ জন।

এছাড়া ইউরোপের দেশ জার্মানিতে নতুন করে মহামারি করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩০ হাজার ৯৭৮ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৪৮ জন। কোভিডের তাণ্ডব শুরুর পর থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪৬ জন। আর মারা গেছেন এক লাখ ১১ হাজার ৭৫২ জন। একই সময়ে ইউক্রেনে নতুন করে করোনা ভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ২৪৮ জন। আর মারা গেছেন ১৩৪ জন।করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও প্রাণ হারানোদের সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪৮ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন আট হাজার ৪৩০ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দুই কোটি ২২ লাখ ৫৪ হাজার ৭০৬ জনে পৌঁছেছে। আর মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ ১৮ হাজার ৭২৩ জনের।

অপর দিকে করোনায় সংক্রমিতদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে তিন কোটি ৪৮ লাখ ৮ হাজার ৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মারা গেছেন চার লাখ ৮০ হাজার ৩২০ জন।এছাড়া করোনায় সংক্রমিত হয়ে শেষ এক দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ৪০ জন, ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ১৮৪ জন, পোল্যান্ডে ৫৪৯ জন, ইতালিতে ১৭৫ জন এবং ভিয়েতনামে ২১৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। অন্য দিকে নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৯৮ হাজার ৮১৯ জনের।উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।

Advertisement