বৃটেন থেকে আসছে করোনা আক্রান্ত রোগী

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: বৃটেন ফেরত যাত্রীদের মধ্যে একের পর এক করোনা শনাক্ত হচ্ছে। সর্বশেষ গতকালও একজন নারী করোনা পজেটিভ হন। তিনি বৃটেন থেকে দেশে আসার পর চারদিন হোটেলে থাকার পর নমুনা দিয়েছিলেন। দেশটি থেকে আসা যাত্রীদের করোনা শনাক্ত হওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে তারা শরীরে করে নিয়ে আসা ভাইরাসটি বৃটেনে শনাক্ত নতুন স্ট্রেইন কিনা। তা নিশ্চিত হতে দেখে কোনো গবেষণার তথ্যও এ পর্যন্ত জানা যায়নি। বিমানবন্দর সূত্র বলছে, বৃটেন ফেরত যাত্রীদের একটা অংশ করোনা পজেটিভ হচ্ছেন। তাদেরকে গতানুগতিক নিয়মে শনাক্ত করে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। আশকোনা হাজী ক্যাম্পে কোয়ারেন্টিনের দায়িত্বে থাকা ক্যাপ্টেন সাব্বির এ বিষয়ে মানবজমিনকে বলেন, তার এখানেও দুইজন বৃটেন ফেরত যাত্রী করোনা শনাক্ত হয়েছেন।

তবে পরবর্তীতে তারা নেগেটিভ হন। পরে তারা চলে যান। গতানুগতিক করোনা পরীক্ষায় তারা পজেটিভ হন। এর আগে ১৬ই জানুয়ারি বৃটেন ফেরত দু’জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি মিলে। করোনার নতুন স্ট্রেইনের আতঙ্কের মধ্যেই বাংলাদেশে বৃটেন ফেরত এই দু’জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয় প্রথম। এর মধ্যে ৬৩ বছর বয়সী একজন নারী এবং ৪৭ বছর বয়সী একজন পুরুষ ছিলেন। পরবর্তীতে নেগেটিভ হলে তারা বাসায় ফেরেন। তারা দুইজনে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। পরে তারা করোনা রোগীর জন্য নির্ধারিত উত্তরায় কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। বিমানবন্দর সূত্র জানায়, করোনা আক্রান্ত দুই যাত্রী ৩রা জানুয়ারি ঢাকায় আসেন। ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক হওয়ায় তারা একটি হোটেলে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন।

কোয়ারেন্টিন সময় শেষ হওয়ায় তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হলে গত শনিবার করোনা পজেটিভ আসে। এরপর তাদের করোনা রোগীর জন্য নির্ধারিত কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই দুই যাত্রীর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এটি বৃটেনে চিহ্নিত করোনার নতুন স্ট্রেইন (প্রজাতি) কিনা? কিন্তু এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কিছু জানাতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বৃটেনে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস ধরা পড়ায় বৃটেন ফেরত যাত্রীদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও দুই সপ্তাহ থেকে তা কমিয়ে ৪ দিন কার্যকর হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ঠিক হয়নি। প্রথম দুইজন বৃটেন ফেরত যাত্রী শনাক্তের পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম মানবজমিনকে বলেন, নতুন স্ট্রেইন কিনা ওভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়নি। আরো পরীক্ষার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য, দেশের বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে মানবজমিনকে বলেন, এদের আলাদা রাখতে হবে। কেয়ারফুল থাকতে হবে। নতুন স্ট্রেইনের বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। তবে এ নিয়ে গবেষণা হচ্ছে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, বৃটেনে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস ধরা পড়ে ডিসেম্বরের শেষদিকে। নতুন স্ট্রেইনটি আগের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি গতিতে ছড়ায়। দেশটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এই ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, তা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। লন্ডনের নতুন যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ৬০ শতাংশই নতুন ভাইরাসের কবলে পড়েছেন। দেশের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা এমনিতেই মারাত্মক। ফলে করোনা হলে তাতে জীবনের ঝুঁঁকি থাকে। সে জন্যই দ্রুত করোনা ছড়ালে তা আরো মারাত্মক হয়ে উঠতে বাধ্য।

Advertisement