ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তা

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

দেশে বৈষয়িক উন্নতি ক্রমাগত ঘটছে এবং ঘটতে থাকবে। সে উন্নতি হবে পুঁজিবাদী নিয়মে; তাতে মেহনতি মানুষের মুক্তির কোনো প্রতিশ্রুতি থাকবে না। পুঁজিবাদী উন্নতির নিয়ম হচ্ছে যত উন্নতি, ততই বেশিরভাগ মানুষের জন্য দুর্গতি এবং বিশ্বপ্রকৃতির জন্য শঙ্কা। উন্নতি এখন বিশেষভাবে দেখা যাচ্ছে সমরাস্ত্র এবং মাদকের উৎপাদনে। দুটিই দৈত্য এবং উভয়ের ভেতরই রয়েছে সভ্যতার অস্তিত্বের জন্য ভয়ঙ্কর হুমকি। বাংলাদেশের মতো প্রান্তিক রাষ্ট্রের পক্ষেও সমরাস্ত্র উৎপাদনে না হলেও সমরাস্ত্র ক্রয়ে ভীষণ উৎসাহ দেখা দিয়েছে। সত্য হচ্ছে, আমরা এগোচ্ছি- পুঁজিবাদ যে পথটা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে সেই পথ ধরেই। আর মাদক তো এখন বাংলাদেশকে ছেয়ে ফেলেছে। আগে কেউ কেউ গাঁজা খেত, আফিং খেত, সেসব পুরনো জিনিস; এখন ইয়াবা এসেছে, অত্যন্ত আধুনিক এবং সর্বত্র বিস্তৃত। ছেলেমেয়ে, শ্রমজীবী, কর্মজীবী, ছাত্র সবাই খাচ্ছে। খাচ্ছে ও পঙ্গু হচ্ছে। সরকার শেষ পর্যন্ত বাধ্য হলো মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করতে। পত্রিকান্তরে প্রকাশ, মাদকবিরোধী অভিযানের শুরুতেই প্রথম ১৮ দিনে ১৩১ জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়। না, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে নয়, ও জিনিস বাংলাদেশে নেই (সাক্ষী মন্ত্রীদের উক্তি)। লোকগুলো মারা গেছে ‘বন্দুকযুদ্ধে’। কত দুর্ধর্ষ ওরা! চুপি চুপি ব্যবসা করে আবার যুদ্ধও করে। অধিকার নামের একটি মানবাধিকার সংগঠন অবশ্য হিসাব করে বলেছে, এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে তাদের ভাষায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছে ২২২ জন; খবরের কাগজগুলো এ খবর ছেপেছে।

মাদক যুদ্ধে অবৈধ অর্থের লেনদেনও ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু মাদক ব্যবসা কমেছে এমন খবর এখনও পাওয়া যায়নি। একটু পেছনে দৃষ্টি দেই। কয়েক সপ্তাহ আগে দৈনিকের যখন প্রথম পাতাতে খবর পাওয়া গেল ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত আরও ১১ জন শিরোনামে, তখন তার পাশাপাশিই দেখা গেল আরেক শিরোনাম- ‘কড়াইল বস্তি :অবাধে চলছে মাদক কেনাবেচা’। কাগজটির ভেতরের পাতাতে ছিল- ‘সিলেটে ধরাছোঁয়ার বাইরে মাদক সম্রাটরা’, তার এক পাতা পরেই খবর ছিল, ‘আড়াইহাজারে হাত বাড়ালেই মাদক, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পুলিশের সখ্য’। চিহ্নিত গডফাদাররা ধরা পড়েন না, বলা হয় তথ্য আছে প্রমাণ নেই। বটেই তো, প্রমাণ না থাকলে ধরা যাবে কোন অজুহাতে? আর গডফাদাররা তো এমন বোকাহাবা নন যে, প্রমাণ সাজিয়ে বসে থাকবেন পুলিশের শুভাগমনের অপেক্ষায়। শুনেছি শীর্ষ গডফাদার নাকি মহাক্ষমতাবান একজন। জানা গেছে, তিনি হজ করতে সৌদি আরব চলে গেছেন; তার সহযোগী গেছেন মিয়ানমারে। মিয়ানমার রোহিঙ্গা পাঠাচ্ছে, ইয়াবাও পাঠাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিক, মাদকের কারবারিদের আশ্রয় দিতে সে ইতস্তত করবে না। সবকিছুই ঘটছে মহান পুঁজিবাদের ইচ্ছায়। মাদকের ব্যবসা কমছে না; কারণ এই ব্যবসা থেকে প্রচুর মুনাফা আসে আর এই মুনাফার ভাগ পাওয়া থেকে কতিপয় রাজনীতিক, পুলিশ, আমলা কেউই বঞ্চিত হন না। মাদক যে একটা সামাজিক ব্যাধি সেটা অত্যন্ত সত্য কথা; এটি যে সংক্রামক তা আরও বেশি সত্য; কিন্তু মূল ব্যাপারটা হলো এই যে, মাদক একটি বড় ব্যাধির প্রকাশমাত্র। শরীরের জ্বর যেমন রোগ নয়, রোগের প্রকাশ, এও তেমনি ব্যাধি নয়, ব্যাধির লক্ষণ ও প্রমাণ। ব্যাধিটির নাম পুঁজিবাদ। পুঁজিবাদ যে বঞ্চনা, বেকারত্ব ও হতাশা উৎপাদন করে, মাদকাসক্তি তারই ফল। মুনাফা-লোলুপতা এর চালিকাশক্তি। মূল ব্যাধি টিকে থাকলে তার বিভিন্ন প্রকাশ তো ঘটবেই। ঘটছেও। পুঁজিবাদের হাতে মস্ত অস্ত্র মিডিয়া। মিডিয়াও চলে মুনাফার প্রেরণায়। বাংলাদেশে প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার উন্নতির কমতি নেই, শনৈঃ শনৈঃ তারা এগোচ্ছে। কিন্তু তারা রয়েছে নিয়ন্ত্রণে; মূল নিয়ন্ত্রণ মুনাফার, তারও ওপরে আছে সরকার। মিডিয়ায় চাঞ্চল্যকর সব খবর প্রকাশিত হয়। এসব খবর দিলে মিডিয়ার জনপ্রিয়তা বাড়ে। জনপ্রিয়তা বাড়লে আয় বাড়ে। কিন্তু তারা আসল রোগের খবরটি দেয় না। বরং লুকিয়ে রাখে। আর এ সত্যটা তো তারা প্রচার করবেই না যে, সব উন্নতির মূল ভিত্তিটা হচ্ছে মেহনতিদের শ্রম এবং সেই উন্নতির নিজস্ব কাজটা হচ্ছে মেহনতিদের বঞ্চনা বৃদ্ধি।

মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশ তার উন্নতির ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায় যুক্ত করেছে। পা রেখেছে মহাকাশে, সদস্য হয়েছে স্পেস ক্লাবের। মিডিয়া কোনো কার্পণ্য করেনি; পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলকভাবে জানিয়েছে খবর। মিডিয়া বলেছে, এ নিয়ে সারাদেশ উৎসবে মাতোয়ারা হয়েছে; আনন্দের কোনো অবধি ছিল না। কিন্তু এই উন্নতির নিচে দেশের আসল অবস্থাটা কী? সেটা তো আমরা নিত্যদিন টের পাচ্ছি, মরমে ও মজ্জায়। ওই সময়েই, আকাশে যখন বঙ্গবন্ধু-১ উপগ্রহ উড়ছে এবং স্থিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে, তখনই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যে যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল, সেটাও ঐতিহাসিক। কিছুদিন আগে পত্রিকায়ই দেখলাম, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট ছিল একটি-দুটি নয়, একযোগে ১৪টি স্থানে। কাঁচপুরে যানজটের দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছিল ১৪ কিলোমিটার; ৫ ঘণ্টার পথ পার হতে সময় লেগেছে কোথাও ১৫, কোথাও ২০ ঘণ্টা। চলাচল স্থবির হয়ে গিয়েছিল। দুর্ভোগে পড়ে বেশুমার মানুষ, দাম বেড়ে গিয়েছিল পণ্যের। সেই সময়ে আবার প্রচুর বৃষ্টি হয়েছিল; ফলে ঢাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা; এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে জমা পানি তিন ঘণ্টাতেও নেমে যায়নি। পত্রপত্রিকায় আরও প্রকাশ, দেশের নানা স্থানে দেড় হাজার কিলোমিটার সড়ক বর্তমানে চলাচলের অযোগ্য অবস্থায় রয়েছে। ওদিকে মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল চলার তো কোনো শেষই নেই। প্রতিদিনই সে খবর পাওয়া যায়, যেন অতি স্বাভাবিক ঘটনা। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা দেশজুড়ে এত আন্দোলন করল, সংশ্নিষ্ট দায়িত্বশীলরা এর পরিপ্রেক্ষিতে নানা রকম উদ্যোগ ও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন। কিন্তু সড়কে-মহাসড়কে প্রাণহানি থেমে নেই। তথ্য বলছে, ঢাকায় যানজটের দরুন এখন প্রতিদিন ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়; এক বছর আগে নষ্ট হতো ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা। উন্নতি বটে। যানজটের ফলে এ বছরে ক্ষতি হয়েছে ৩৭ হাজার কোটি টাকা। এক বছর আগে এই ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা। উন্নতি তো অবশ্যই।

বিশ্বব্যাংকের একটি গবেষণা জানাচ্ছে যে, গণপরিবহনের ক্ষেত্রে বিশ্বের ২০৩টি মহানগরের ভেতর ঢাকার অবস্থান এখন দ্বিতীয়। এ ক্ষেত্রেও সন্দেহাতীত উন্নতি ঘটেছে। কারণ ২০১৫-তে ঢাকা ছিল অষ্টম স্থানে, ২০১৬-তে উন্নীত হয় তৃতীয়তে, এবার স্থান পেয়েছে দ্বিতীয়। উন্নতির এই ধারা নিরীক্ষণ করে আমরা ভরসা রাখতে পারি যে, আগামীতে ঢাকা প্রথম স্থান অধিকারের গৌরবটা পেয়ে যাবে। বিশেষ করে এই কারণে যে, ফ্লাইওভার ও এক্সপ্রেস হাইওয়ে এ ব্যাপারে ঢাকাকে বিস্তর সহায়তা দান করবে। ওদিকে গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে, রাস্তা প্রশস্ত হচ্ছে না, রাস্তা ভালো হচ্ছে না। মানুষ যে নিজের পায়ের ওপর ভরসা করবে, তেমন উপায়ও নেই। রাস্তাতে খানাখন্দ, জলাবদ্ধতা এসব আছে; ফুটপাত আগে থেকেই ছিল হকারদের দখলে, এখন যুক্ত হয়েছে মোটরসাইকেল, তারা সবেগে চলে ও দখলদারিত্ব চায়। পথচারীদের জন্য আরও আছে চলমান দুই যাত্রীবাহী বাসের প্রতিযোগিতার মাঝখানে পড়ে প্রাণ হারানোর ঝুঁকি। বাসওয়ালাদেরও বক্তব্য : তারা ছুটবার সুযোগ পায় অল্প এবং সুযোগ পেলেই তারা ছুটতে চায় দুর্দান্ত গতিতে। কারণ তাড়া রয়েছে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর এবং যাত্রী ধরার। চাপা পড়ার ব্যাপারে পথচারীদেরও নাকি দোষ আছে, একাধিক মন্ত্রী আমাদের জানিয়েছেন সে খবর।

নিকট অতীতে একটি দৈনিকের সংবাদ শিরোনাম ছিল- ‘ছুটির দিনে সড়কে ঝরল ২০ প্রাণ’। ওই একই দিনে অপর খবর ছিল- ঝড় ও বজ্রপাতে মৃত্যু ঘটেছে ১৩ জনের। বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা এখন ক্রমবর্ধমান। বড় কারণ গাছপালা কমে গেছে। বজ্রের পতনে যারা মারা পড়ে, তাদের অধিকাংশই কৃষি শ্রমিক। কৃষি শ্রমিকদের মাঠে আসতে হয়, না এলে খাবে কী? ওদিকে উন্নয়নের নির্মম কুঠার তো কোনো কিছুকেই ক্ষমা করতে জানে না, বৃক্ষনিধন তো তার পবিত্র ও নিয়মিত কর্তব্যগুলোর অন্যতম। উন্নয়নের কোপে সুন্দরবন ইতিমধ্যে মস্ত বড় ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, কক্সবাজার অঞ্চলটি শিগগিরই বনভূমিশূন্য হয়ে পড়বে।

পুঁজিবাদী উন্নতি সর্বদাই অত্যন্ত শ্রেণিসচেতন, দুর্বল মানুষের ওপরই দাপট দেখায় সবার আগে। মেয়েদের ওপরও। মেয়েদের জন্য রাস্তাঘাট বিপজ্জনক। বাসে চড়লে ড্রাইভার-হেলপারে মিলে হয়রানি করে। ইতিমধ্যে বাসে যৌন হয়রানি, ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। গরিব মেয়েরা পাচার হয়ে যায় বিদেশে। বাংলাদেশের মেয়েরা বিদেশ যাচ্ছে জীবিকার নির্মম প্রয়োজনে। গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তাদের, সেটা তারা প্রকাশ করতে পারেনি। এক মওকায় ৮৯ জন পালিয়ে এসেছে, তারাও সবটা বলার মতো সাহস পায়নি, বললেও মিডিয়া হয়তো প্রকাশ করতে সংকোচবোধ করত; কিন্তু তাদের সবার হয়ে বক্তব্যের সারমর্মটি তুলে ধরেছেন একজন, তার একটিমাত্র উক্তিতে- ‘কোনো মেয়ে যেন ওদেশে না যায়।’ কিন্তু তবু তারা যায়, যেতে হয়, যেতে দিতে হয়; কারণ দেশ তাদের নিরাপত্তা দেয় না; জীবিকার তো নয়ই, এমনকি জীবনের নিরাপত্তাও দেয় না। উন্নতির একটি প্রমাণ সাইবার ক্রাইমের বৃদ্ধি। কিন্তু সেখানেও দেখা যাচ্ছে, যাদেরকে শিকার হতে হয় তাদের অর্ধেকেরও অধিক হচ্ছে নারী, যাদের অধিকাংশের বয়স ১৮ থেকে ৩০।

নিরাপত্তার খাতে ব্যয় যতই বাড়ূক, অনেক ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির খবর পাওয়া যায় না। ব্যাংকে টাকা রাখে লোকে, সেখান থেকে টাকা লোপাট হয়ে যায়, ব্যাংকের মহাসম্মানিত মালিকরাই হাতিয়ে নেন। ঋণখেলাপিরাও পাচার করেন। ব্যাংক বিপদে পড়ে, তখন সরকারি ব্যাংক থেকে পাবলিকের জমা রাখা ওই টাকা দিয়েই প্রাইভেট ব্যাংককে টেনে তোলা হয়। অপরাধ কার, শাস্তি কে পাচ্ছে? আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রা জমা হয়, বিদেশ থেকে মেহনতি মানুষ শ্রমের বিনিময়ে তাদের উপার্জিত অর্থ পাঠায়। ওই টাকা হাওয়া হয়ে যায়। কেমন করে হাওয়া হলো, অপরাধী কারা, সেটা জানা যায় না।

বাংলাদেশে টাকা উড়ে উড়ে বেড়ায়; কিন্তু পুঁজি পাওয়া যায় না। ফলে বিনিয়োগ বাড়ে না, বৃদ্ধি পায় না কর্মসংস্থান; উন্নয়ন দাঁড়ায় ওই ফ্লাইওভারের মতোই, উপরে শোভা, নিচে অন্ধকার। বিনিয়োগ আসার কথা ব্যাংক থেকে, সেখানে তো চলছে অপ্রতিরোধ্য লুটপাট। বিনিয়োগ আসতে পারে শেয়ারবাজার থেকে; কিন্তু সেখানে তো মূর্তিমান দরবেশদের অলৌকিক হস্তক্ষেপে ইতিমধ্যে লণ্ডভণ্ড কায়কায়বার ঘটেছে। মে মাস ছিল আমাদের মহাকাশ জয়ের মাস, অথচ সেই মে মাসজুড়েই শেয়ারবাজারে চলে অব্যাহত দরপতন।

বাংলাদেশে ‘বিচারবহির্ভূত’ হত্যা বলে কিছু নেই, এ কথা আমরা শুনি; কিন্তু হত্যা ও গুমের খবর তো ঠিকই পাওয়া যাচ্ছে, গণমাধ্যমে। চাঞ্চল্যকর কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের কোনো মীমাংসা হয়নি; গুম হয়ে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কয়েকজন ফিরে আসেননি, তাদের বিষয়ে কোনো খবরও পাওয়া যায়নি। গত সপ্তাহে পত্রিকার প্রতিবেদনে জানলাম, ২০১৮ সালের প্রথম চার মাসে গুম হয়েছেন ১৪ জন। আবার দেখা যাচ্ছে যে, ওই মাসেরই মধ্যভাগে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের এক অধিবেশনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। কমিশনে মানবাধিকার রক্ষার ব্যাপারে সুপারিশ ছিল মোট ১৬৭টি, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ ৬১টি গ্রহণ করতে সম্মত হয়নি। না করার তালিকায় রয়েছে- ১. শারীরিক নির্যাতন; ২. বৈবাহিক ধর্ষণ; ৩. গুম; ৪. মানহানি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা; ৫. শ্রমিক অধিকার।

শিক্ষাবিদ ও সমাজ বিশ্নেষক

Advertisement