ভিসা না দেয়ায় জাতিসংঘের অধিবেশনে যেতে পারছেন না রুহানি!

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: আসছে সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদানে বিরত থাকতে বাধ্য হতে পারেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও তার প্রতিনিধি দল।

এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভিসা ইস্যু করেনি বলে বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে সোমবার নিউইয়র্ক যাওয়ার কথা ছিল রুহানি ও তার প্রতিনিধিদের। কিন্তু তা আর হচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে।

খবরে বলা হয়েছে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যদি ভিসা ইস্যু না করা হয়, তবে এ সফর সম্ভবত বাতিল করা হবে।

প্রতিনিধি দলে ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক মোহাম্মদ জাভেদ জারিফও রয়েছেন। যদিও তার বিরুদ্ধে গত ৩১ জুলাই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন।

শুক্রবার সকালেই নিউইয়র্ক সফরে যাওয়ার কথা ছিল ইরানি এই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।

ভিসা ইস্যু না করার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। কিন্তু ইরানিদের ভিসা অস্বীকার করা উচিত বলে তিনি আভাস দিয়েছেন।

সৌদি সফরে থাকা মাইক পম্পেও সাংবাদিকদের বলেন, ভিসা গ্রহণ কিংবা বাতিলের বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করবো না। যদি আপনি একটি বিদেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হন, তাহলে এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবো না।

‘শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক একটি বৈঠকে উপস্থিত হতে তাদের অনুমতি দেয়া হবে কিনা, এ কারণেই বিষয়টি নিয়ে আমাকে ভাবতে হচ্ছে,’ বললেন এই শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক।

স্পর্শকাতর উপসাগরীয় জলসীমায় ট্যাংকারে কয়েক দফা হামলাসহ শনিবার দুটি সৌদি তেল স্থাপনায় বিস্ফোরণের জন্য ইরানকে দায়ী করছে যুক্তরাষ্ট্র।

পম্পেওর এই মন্তব্য সত্ত্বেও জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বিশ্বসংস্থাটির হস্তক্ষেপে ইরানি প্রতিনিধি দলকে ভিসা দেয়া হবে।

তিনি বলেন, প্রতিনিধি দল সম্পর্কিত সব অস্বাভাবিক ভিসা সংকট নিয়ে আয়োজক দেশের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। আশা করছি, এতে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

দুই চিরশত্রুর মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে ইউরেপীয় চেষ্টার অংশ হিসেবে রুহানির সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের যে আয়োজন ফ্রান্স করবে বলে শোনা যাচ্ছে, ইরানি প্রতিনিধি দলকে ভিসা না দিলে তা ভেস্তে যাবে।

ইরানি সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা বলছে, যেসব চুক্তির কাঠামোর মধ্য দিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিশ্রুতি তৈরি হয়েছে, ইরানের অনুপস্থিতি তার বৈপরীত্যই প্রদর্শন করবে। এতে দেখা যাবে, জাতিসংঘে কূটনীতির কোনো মূল্য নেই।

বার্তা সংস্থাটি আরও জানায়, যদিও ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দৃশ্যপট থেকে সরে যায়নি এবং সক্রিয় কূটনীতি অব্যাহত রেখেছে, সেক্ষেত্রে মার্কিন সরকারকে তার আচরণের জবাব দিতে হবে।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের বিতর্ক আগামী মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিশ্বসংস্থাটির প্রধান কার্যালয় নিউইয়র্কে হওয়ায় আয়োজক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র কূটনীতিকদের ভিসা দিতে বাধ্য।

গত বছরের মে মাসে চার বছর আগে ছয় বিশ্ব শক্তির সঙ্গে সই করা ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে একতরফা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে দেশটির বিরুদ্ধে একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাচ্ছেন তিনি।

Advertisement