মধ্যরাতে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাজির মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী

কবীর আহমদ সোহেল:  মধ্যরাতে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাজির মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। রাত দুপুরে অনুতপ্ত মেয়র আরিফ। দিন দুপুরের ঘটনায় তিনি দুঃখিত। তার উপস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। চিকিৎসাধীন ডা. আব্দুল আহাদের হাত ধরে এমন কথাই ফিস ফিস করে বল্লেন আরিফুল হক চৌধুরী। ঘটনাটি ভুলে যাবার অনুরোধ জানান উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে।ঘটনাটি সোমবার দিবাগত মধ্যরাতের।

মধ্যস্থতায় জামায়াত। সোমবার দুপুরের ঘটনা নিজের অনুকুলে নিতে বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন মেয়র আরিফ। সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র সাংবাদিকরা নেই। জনৈক সাংবাদিক প্রশ্ন করে বসলেন ‘এটা তো আপনার পকেট সাংবাদিকদের সম্মেলন”। বিব্রত মেয়র জোড়াতালি মার্কা জবাব দিলেন। উপস্থিত সাংবাদিকরা হতভম্ব। ‘পকেট সাংবাদিকে’র খেতাব পেয়ে ক্ষুব্ধ। পাকা খেলোয়াড় আরিফ অবস্থা আঁচ করতে বেশী সময় নেননি।

সন্ধ্যা পরেই দিলেন ‘ইউ টার্ন’। জামায়াত আওয়ামীলীগ লবিতে সংযোগ স্থাপনে তদবির। ‘মিটাইর মা’ খ্যাত সিলেট জেলা  জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান ‘মওকা’ হাত ছাড়া করলেন না। লুফে নিলেন বিষয়টি। ডা. মোদাব্বিরকে উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিএমএর চিকিৎসকদের ‘ম্যানেজ’ এর দায়িত্ব দিলেন। তিনি ও নগর জামায়াতের নায়েবে অামীর ফখরুল ইসলাম ‘ম্যানেজ’ করেন উইমেন্স মেডিকেল কলেজের ভাইস চেয়ারম্যান বশির আহমদকে। এরপর শুরু হয় নগর আওয়ামীলীগের ‘হাই ভল্টেজ’ দুই নেতার সাথে সংযোগ স্থাপনের প্রক্রিয়া। এক পর্যায়ে সংযোগ মেলে এক জনপ্রতিনিধি আরেক সাবেক জনপ্রতিনিধির। দেন দরবারের পর তারাও ‘ম্যানেজ’ প্রক্রিয়ায় শামিল হন। তবে শর্ত থাকে তারা থাকবেন পর্দার অন্তরালে।

জামায়াতি মুন্সিয়ানায় আওয়ামীলীগ, হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ এক প্লেটে ‘ভাত ভাড়তে” সম্মত হন। রাতভর চলে নানা সংলাপ।সোবহানিঘাট ইবনে সিনা হাসপাতালে রিমোটকন্ট্রোল রেখে কুমারপাড়া, মীরবক্সটুলা, ছড়ারপাড়ার, সদর বিভিন্ন চ্যানেল ঘুরে সিদ্ধান্তে পৌঁছেন কুশীলবরা।  সেলফোনের পাশাপাশি এ প্রক্রিয়ায় দুতিয়ালি করেন আরো ৪ কাউন্সিলর।সিগন্যাল অাসে উইমেন্স থেকে ‘পজিটিভ’। রাত ১২ টার মিনিট পাঁচেক আগেই তিনটি টিম পৌঁছে যায় উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মাওলানা হাবীবের নেতৃত্বে একটি, মেয়র আরিফের নেতৃত্বে একটি এবং উইমেন্স মেডিকেলের ভাইস চেয়ারম্যান বশির আহমদের নেতৃত্বে একটি টিম মিলিত হয়। চিকিৎসাধীন ডা. অাহাদের চেম্বারেই অাপোস নিস্পত্তির  এই প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অনুশুচনা প্রকাশের এই লগ্নে  উপস্থিত ছিলেন সিলেট দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, মহানগর জামায়াতের নায়েবে অামীর ফখরুল ইসলাম, হাসপাতালের ভাইস চেয়ারম্যান বশির অাহমদ, পরিচালক এমদাদ আহমদ, সিসিক কাউন্সিলর সোহেল আহমদ রিপন, তোফিকুল হাদী, রাজিক আহমদ ও জাবেদ অাহমদ প্রমূখ। অাজ মঙ্গলবার দিনের কোন এক সময়ে এই নিস্পত্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষনা অাসার কথা রয়েছে।

Advertisement