যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিককে হত্যার হুমকি: লন্ডনে সংবাদ সম্মেলন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলা, হত্যার হুমকি এবং বাংলাদেশে তাদের বাড়ী ঘরে পুলিশ হয়রানীর অভিযোগ করেছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক।

২৪ মে শুক্রবার লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এম এ মালিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখনই যুক্তরাজ্য সফরে আসেন তখন তিনি তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের বক্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহিত করেন বিএনপির কর্মীদের উপর হামলার। এর প্রমান রয়েছে বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায়। এরই পরিপেক্ষিতে গ্রীসে, ফ্রান্সে ও ইতালিতে তার উপর হামলার চেস্টা এমনকি ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী ইদ্রিস ফরাজী তাকে সরাসরি হত্যার হুমকি দিয়েছেন তার প্রমান রয়েছে স্যোশাল মিডিয়ায়। এম এ মালিক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশনায় যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন রয়েছেন লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ব্রিগিডিয়ার আমিন। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রাতিক লন্ডন সফরের সময় যুক্তরাজ্য বিএনপির ডেমনস্ট্রেশনে হামলার উদ্দেশে ব্রিগিডিয়ার আমিন অপরিচিত বেশকিছু সংখ্যক দাঙ্গাবাজ লোক ভাড়া করে আওয়ামীলীগের বিক্ষোভ সমাবেশে সরবরাহ করেন। তাদেরকে আওয়ামীলীগের লোকজনও চিনতে না পেরে বিব্রতবোধ করেন কারন এরা সবাই ছিল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের কাছে অপরিচিত মুখ।

উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক ইতালী বিএনপি আয়োজিত এক সভায় যোগদেন। ইতালিতে এম এ মালিকের আগমনের সংবাদ পেয়ে তাকে প্রতিহত করার ঘোষনা দিয়ে লাইভ ভিডিওতে এই হত্যার হুমকিদেন ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী ইদ্রিস ফরাজী। গত ২৫ এপ্রিল ইতালি থেকে স্বাধীন বাংলা টেলিভিশন নামক একটি ফেইসবুক পেইজে লাইভে একটি সভা থেকে এই হুমকি দেয় হয়। তিনি তার নেতাকর্মীদের নিদের্শদেন এমন ভাবে মালিককে আঘাত করতে হবে সে যেন জীবত অবস্থায় ফিরে যেতে না পারে।

এদিকে ২৪ মে শুক্রবার লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ। উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা দলের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম এ মালেক খান, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি অশিকুর রহমান আশিক, যুক্তরাজ্য যুবদল সভাপতি রহিম উদ্দিন,যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নাসির আহমেদ শাহিন, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সহদপ্তর সম্পাদক সেলিম আহমেদ, সেন্ট্রাল লন্ডন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ, কেন্দ্রীয় ওলামা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা শামিম আহমেদ, লন্ডন মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য সেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ডালিয়া লাকুরিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ওয়েস্টমিনিস্টার হলে আওয়ামীলীগের প্রকাশ্য জনসভায়, বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলার নির্দেশ দিয়ে ছিলেন । তখন শেখ হাসিনা, নিজ দলীয় লোকজনকে আইন হাতে তুলে নিতে এবং সন্ত্রাসী হামলায় লিপ্ত হতে নির্দেশ দিয়ে, ব্রিটেনের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেছিলেন । তিনি তার বিরোধী মতকে দমন করতে এবং দেশে এক দলীয় শাসন টিকিয়ে রাখতে এবার প্রবাসের মাটিতেও এ ধরণের স্বৈরতান্ত্রিক কাজে লিপ্ত হচ্ছেন । এরই ধারাবাহিকতায় এবারো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডন সফরে এসে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকের কাছে ফোন করেন, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বললেন,” কোন- হোটেলে তাকে বুকিং দিতে চায় না। এছাড়া তিনি হুমকি স্বরুপ বললেন,” ঐ বিএনপিরে জানায় দিয়েন যে,তারেক জিয়া যদি আমার সাথে বেশী বাড়াবাড়ী করে, তার মা (বেগম খালেদা জিয়া ) আর জীবনেও জেল থেকে বের হতে পারবে না। আর এই বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমানিত হয়, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জিম্মি । তার নির্দেশেই আদালত বিএনপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা গুলোর রায় দিয়ে যাচ্ছে । এর ফলে ৭৪ বছর বয়স্ক একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সরকারের উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রতিহিংসার- উৎকট রূপ দেখল জাতি!

তারা বলেন, ব্রিটেনের কোন হোটেল কতৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীকে হোটেল ভাড়া দিতে চায় নাই । তাই এবার অন্যের নাম ব্যবহার করে হোটেল ভাড়া নিয়েছে । সেই কারনে হোটেলের সামনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড্ডয়ন ছিল না । এছাড়া শেখ হাসিনা সন্ত্রাসী হামলায় লিপ্ত হতে নির্দেশ দিয়ে, ব্রিটেনের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করায়, আগামীতে যেন ব্রিটিশ সরকার অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে- সন্ত্রাসী হিসেবে চিহিৃত করে, ব্রিটেনে প্রবেশাধিকার বাধা প্রদান করা হয় । যুক্তরাজ্য বিএনপির পক্ষ থেকে ব্রিটিশ সরকারের কাছে এই আহবান জানায় ।

তারা আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে যে ভাবে নির্মম ভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর গুম,খুন হত্যা, নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তেমনি ভাবে এবার প্রবাসের নেতাকর্মীদের উপরও হামলার জন্য বিভিন্ন ভাবে পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছে ।

সম্প্রতি ইটালী আওয়ামী নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নির্দেশে প্রবাসের বিভিন্ন স্তরের বিএনপির নেতকর্মী সহ, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিককে হত্যার হুমকি দিয়েছে । আমরা যুক্তরাজ্য বিএনপি এই ধরনের হুমকিকে রাজনৈতিক ভাবে প্রতিহত করার জন্য প্রস্তত রয়েছি । সেই সাথে সভ্য দেশে আওয়ামী বাকশালীরা প্রবাসের মাটিতেও তাদের গুন্ডা মার্কা রাজনৈতি প্রতিষ্ঠা করতে চায় ।

বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতীক। বিভক্ত-বিভাজিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সেতুবন্ধন তিনি। তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পুরোধা। এসব কারণেই তিনি ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীর রোষানলে পতিত হয়েছেন। তাই সম্পূর্ণ সাজানো রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে।

Advertisement