লন্ডনে কুমিল্লা ৯৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বন্ধুত্বের দুই যুগ পূর্তি উৎসব

তানভীর আহমেদ।। দুই যুগের বন্ধুত্বকে উদযাপন করতে কুমিল্লার ১৯৯৪ ব্যাচের বন্ধুরা আজ লন্ডনের লুইস্যামেএকত্রিত হয়েছিলাম। এস এস সি পাশ করার পর কেউ কুমিল্লা রয়ে গিয়েছিলো, কেউ ঢাকা, কেউ বা জীবনের তাগিদে ছুটেছিলো ইউরোপ আর আমেরিকায়। সকল দূরত্ব আর সময়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইফতেখার রিপন নিউইয়র্ক থেকে ছুটে এসে প্রমান করেছে এই রিইউনিয়নটি তার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। রিপনই প্রথম ইউএসএ থেকে একটা ফেইসবুক গ্রুপ খুলে ইউরোপে রিইউনিয়নের যোগাযোগটা শুরু করে। বাংলাদেশের রিইউনিয়নের পরপর নাহিদই লন্ডনে রিইউনিয়নের প্রথম তাগিদ অনুভব করেছিলো।

বাংলাদেশ থেকে নেপথ্যে কাজ করেছে বাংলাদেশের রিইউনিয়নের সফল আয়োজক সাঈফ, ঢাকা থেকে রিইউনিয়নের টি সার্ট তৈরি করে পাঠিয়েছে অপু।গত ২১ জুলাই খালেদ, তাজুল, নাহিদ, মিঠু আর আমি মিলে লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে বসে প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করি কিভাবে এই রিইউনিয়নটিকে বাস্তব রুপ দেওয়া যায়। সেই থেকে কাজ শুরু।সিদ্ধান্ত হলো ৭ অক্টোবর লন্ডনেই প্রথম ইউরোপীয়ান রিইউনিয়ন হবে। মূলত খালেদ আর তাজুলের কঠোর পরিশ্রমের ফলেই এই মিলনমেলাটি সফলতার মুখ দেখে। এই দুইজনকে চাঙ্গা রেখেছিলো ফেইসবুক গ্রুপের বন্ধুরা। রিইউনিয়নকে সফল করতে ফিনল্যান্ড থেকে যোগ দিয়েছে মুনতাসির মামুন, লন্ডন থেকে এ কে এম মহিউদ্দীন, শাফি রিয়াজ, হাসান তারেক, নাসিম, সাঈদ মুস্তাফিজ, ইমরুল কায়েস।রিয়াজ সাফি আমাদের সবার জন্য তার কোম্পানীর টি সার্ট নিয়ে এসেছে। শেষ মুহুর্তে বাবু রেজিষ্ট্রেশন করে সেলফি তোলা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করেনি। কুমিল্লা জিলা স্কুলটি ছিলো ধর্মসাগরের পাড়েই। সময় পেলেই আমরা কুমিল্লা পার্ক সংলগ্ন ধর্মসাগরের পাড়ে যেতাম। স্কুলের বন্ধুরা মিলে একবার আমাকে জোর করে কুমিল্লার ধর্মসাগরে ফেলে দিয়েছিলো। আমি পাল্টা জবাব হিসেবে খালেদকে ফেলতে না পেরে তার স্যান্ডেল ফেলে দিয়েছিলাম। সেই বাটা স্যান্ডেল তুলতে খালেদকে স্বেচ্ছায় পানিতে নামতে হয়েছিলো। সেই গল্প বলে প্রথম পুরষ্কার জুটেছে আামার ভাগ্যে। খালেদ ও তার বন্ধুরা মিলে সবাই বেল মাথা করে স্কুলে আসবে এমন প্ল্যান করে কেউ বেল মাথা করেনি, বেল হয়েছিলো বোকা তারেক। সেই থেকে তারেকের এখন আর তেমন চুল ওঠে না। খালেদ হয়েছে দ্বিতীয়। মেয়েদের পিলো পাসিং এর পাশাপাশি তানজিনা আর শাওন ভাবীর গানের রেইট উঠেছে ৫ হাজার লাইকে। গানের তৃষ্ণা মিটেনি আমাদের। আশা করি খুব শীগগিরই শাফি আমাদের দাওয়াত দিয়ে তার বউয়ের একক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করবে। আমি কথা দিচ্ছি সাথে করে আরেকজন শিল্পীও নিয়ে আসব।


খালেদের বউ রাত জেগে নিজ হাতে কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী ছানামুখী তৈরি করে এনেছিলো সবার জন্য। ফেইসবুকের সবার প্রোফাইল ঘেঁটে ছবি ডাউনলোড করে অর্ডার দিয়েছে বন্ধুত্বের দুই যুগ পূর্তির বিশেষ চাবির রিং, বিশেষ ধন্যবাদ তার অবশ্যই প্রাপ্য।তবে এই রিইউনিয়নে আমরা ফয়জুন্নেসা, আওয়ার লেডি আর ফরিদা বিদ্যায়তনের বান্ধবীদের মিস করেছি খুব! দাবী উঠেছে পরের আয়োজনে তাদেরকেও যুক্ত করতে হবে।

Advertisement