লম্বা নখের অরুণ

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: অরুণের বাঁ হাতের আঙুলের নখগুলোর আকার একবার দেখুন! বৃদ্ধাঙ্গুলি এবং তর্জনীর নখ লম্বায় ২ ইঞ্চি, মধ্যমার ১১ ইঞ্চি, অনামিকার ৯ ইঞ্চি এবং কনিষ্ঠার নখটি লম্বায় ৮ ইঞ্চি। শখ করে হাতের নখ অনেকেই তো বড় করে। তাই বলে অত বড়! বিস্ময়কর কথা হলো, ২৫ বছর হাতের নখ কাটেননি দিনাজপুরের এই তরুণ।

১৯৯৩ সাল। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়েন অরুণ কুমার। ইচ্ছা হলো নখ বড় করবেন। সেই যে বাঁ হাতের আঙুলের নখ কাটা বন্ধ করেছিলেন, তা আজও ধরে রেখেছেন। মাঝে কত বাধা, কত বিদ্রূপ শুনেছেন, কিন্তু নখ না কাটার সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছেন। ৩৩ বছর বয়সী অরুণ কুমার সরকার বলছিলেন, ‘প্রথম প্রথম নখগুলো ভেঙে যেত। এখন আর ভাঙে না। তবে অনেক সতর্ক থাকতে হয়। দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে তেমন অসুবিধা হয় না। তবে ভারী কোনো কাজ করার সময় সতর্ক থাকি।’
দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে অরুণ কুমার সরকারের বাড়ি। পেশায় আলোকচিত্রী। প্রায় প্রতিদিনই অরুণের লম্বা নখ দেখার জন্য মানুষ আসে দূর থেকে তাঁর বাড়ি ও ফটো স্টুডিওতে। অরুণও এসবে অভ্যস্ত। তিনিও আগ্রহ নিয়ে দেখান, নখ রাখার গল্প বলেন।
ভবিষ্যতে নখ কাটবেন কিনা? অরুণের উত্তর, ‘লম্বা নখের রেকর্ড গড়তে চাই আমি। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড না হোক অন্তত বাংলাদেশে তো রেকর্ড গড়তে পারব!’

প্রাণীপ্রেমী টমাস পাসিটমাসের ভয়ংকর সঙ্গীরা

ভয়ংকর প্রাণীর সঙ্গেই তাঁর নিবিড় সখ্য। মাকড়সা, সাপ, বিচ্ছু, টিকটিকি, কুকুর, বিড়াল—এমন প্রাণীর তালিকা গিয়ে ঠেকবে এক শতে। অবিশ্বাস্য ঠেকছে? ১৯ বছর বয়সী টমাস পাসি শতাধিক প্রজাতির প্রাণীর সংগ্রহশালা গড়ে তুলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির টমাস পাসি একজন ইউটিউবার। নিজের ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তাঁর সংগ্রহ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন প্রাণী দেখানোর পাশাপাশি তাদের খাওয়ানোর ভিডিও, পোষা প্রাণী পালনবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করে থাকেন তিনি।
এত প্রাণীকে খাওয়ানোর, যত্ন নেওয়ার দুরূহ কাজটি একা পাসিই করেন। এসব করতে গিয়ে রীতিমতো ‘প্রাণিবিজ্ঞানী’ বনে গেছেন পাসি।
পাসির সংগ্রহে সবচেয়ে বিষধর প্রাণী হলো ভিয়েতনামের বিছা। এই বহুপদী প্রাণীর জন্য বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন হয়। কারণ, অমেরুদণ্ডী বিছা লুকানোর বেলায় ওস্তাদ। তাই নিজের সুরক্ষার জন্যই বন্দী করে রেখেছেন পাসি। পাসির সংগ্রহে বেশি সংখ্যায় (১১০টি) আছে ট্যারান্টুলা প্রজাতির মাকড়সা।
প্রাণীপ্রেমী টমাস পাসি বলেন, ‘মূলধারার গণমাধ্যমে এই প্রাণীগুলো সম্পর্কে যেভাবে প্রচার করা হয়, অবুঝ প্রাণীগুলো কিন্তু তেমনটি নয়। আমি আশাবাদী, মানুষ এখন বুঝতে পারবে। সেই সঙ্গে আমি চাই মানুষ প্রাণীদের ভালোবাসুক।’
সূত্র: রিপলি’স ডটকমচি ঠি র  স্মৃ তি

স্বপ্নের মানুষের স্মৃতি
‘হায়! যদি সে লোকটি বেঁচে থাকতেন, তুই থাকতি তাঁর নয়নের পুত্তলি!’

কথাটি গল্পের ছলে রোজ আমাকে শুনতে হতো। কারণ আমি তাঁর বংশের বড় নাতবউ। আমি আফসোসে ম্লান হয়ে যেতাম। গল্পটা আমার দাদাশ্বশুরের। বেঁচে থাকতে তাঁর হাতের লাঠি ছিল ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া আমার স্বামী। পরিবারের সবার কাছে শোনা গল্প থেকেই জানলাম তিনি ছিলেন ঘরের কর্তামশাই। প্রতি মাসে বিদেশে থাকা তিন সন্তানকে চিঠি লিখতেন নিয়মিত। তিনি ছিলেন সে সময়ের শিক্ষিত ও সম্মানিত জন। আর ভীষণ আমুদে মানুষ। এই মানুষকে না দেখতে পারার আফসোস যেন আমাকে কুরে কুরে খেত।
হঠাৎ একদিন চাচিশাশুড়ির বিয়ের শাড়ি দেখব বলে বায়না ধরে তাঁর আলমারি খুলিয়েছি। সেখানে দেখি আমার না–দেখা স্বপ্নের পুরুষের একগাদা চিঠি। ভীষণ খুশিতে আপ্লুত হয়ে চিঠিগুলো পড়তে থাকি। হাতের লেখা দেখে মুগ্ধ হই। চিঠিগুলো হাতে পাওয়ার পর আমার অনুভূতি ছিল নব আবিষ্কারের মতো। সঙ্গে সঙ্গেই একটি চিঠি সেখান থেকে নিলাম, যেটি আমার মেজ চাচাশ্বশুরকে লেখা চিঠি ছিল। দাদিশাশুড়িকে বললাম, ‘দাদু, এই চিঠিটি আমি আমার কাছে রাখি?’ দাদু উত্তর না দিয়ে গাইতে লাগলেন, ‘ভালো আছি ভালো থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো!’
আমি অবাক হয়ে গেলাম, জমে জমে চিড় খাওয়া ভালোবাসা দাদুর মধ্যে হঠাৎ উথলে উঠল। আলমারির কোনে অতি যত্নে জমে থাকা চিঠির কারণেই এমনটা সম্ভব হলো। আমিও স্বপ্নের মানুষটির রূপ, রং আর গন্ধ খুঁজে পেলাম এই চিঠির মাধ্যমেই।
নাজমুন নাহার
মৈশাইদ, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।সুয়েজ খালেই তি হা সে র  আ য় না য়
সুয়েজ খালের যাত্রা শুরু

খাল কেটে সত্যিই কেউ কুমির এনেছিল কি না, হলফ করে বলা কঠিন। তবে খাল কেটে জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তার প্রমাণ তো সুয়েজ খালই। আধুনিক নৌপরিবহন ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি মিসরের সুয়েজ খাল। খালটি নৌযান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ১৮৬৯ সালের আজকের এই দিনে।

কৃত্রিম এই খাল ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরকে যুক্ত করেছে। খাল খনন করার আগে পর্যন্ত ইউরোপের বিভিন্ন দেশের জাহাজগুলোকে ভূমধ্যসাগর থেকে পুরো আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে, ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ উত্তমাশা অন্তরীপ পাড়ি দিয়ে আরব সাগর হয়ে ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরে যেতে হতো। এই যাত্রা যে শুধু সময়সাপেক্ষ ছিল, তা-ই নয়, ছিল বিপজ্জনকও। আফ্রিকা মহাদেশ পাড়ি দেওয়ার সময় প্রায়ই ঝড়ের কবলে পড়ে জাহাজডুবির ঘটনা ঘটত।
এই সমস্যার সমাধানের জন্যই ১৮৫৪ সালে মিসরে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ফার্দিনান্দ দে লেসেপস (১৮০৫-১৮৯৪) মিসরের অটোমান গভর্নরের সঙ্গে আলাপ করেন। রাজি করান সুয়েজ অঞ্চলে ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরকে যুক্ত করে ১০০ মাইল দীর্ঘ একটি খাল খননের জন্য। মিসরের গভর্নরের সম্মতিতে ১৮৫৬ সালে গঠিত হয় সুয়েজ ক্যানেল কোম্পানি। একদল দক্ষ প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে শুরু হয় সুয়েজ খালের নকশার কাজ।
প্রায় তিন বছর পর, ১৮৫৯ সালের এপ্রিল মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় খালটির খননকাজ, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৮৬৫ সালে। কিন্তু কলেরার প্রাদুর্ভাব ও শ্রমিক বিদ্রোহের কারণে কাজ শেষ হতে আরও চার বছর বেশি সময় লাগে। অবশেষে ১৮৬৯ সালের ১৭ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে সুয়েজ খাল। তখন খালটির গভীরতা ছিল মাত্র ২৫ ফুট, প্রস্থে ছিল স্থানভেদে ২০০ থেকে ৩০০ ফুট। পরে জাহাজ চলাচল বাড়লে খালটির আকারও বাড়ে।

হিস্ট্রি ডট কম অবলম্বনে
আকিব মো. সাতিল

স্ট্যাচু অব ইউনিটিত থ্য  স ত্য
স্ট্যাচু অব ইউনিটি

l বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য এখন স্ট্যাচু অব ইউনিটি বা ঐক্যের ভাস্কর্য। ভারতের গুজরাট রাজ্যে অবস্থিত ভাস্কর্যটিকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
l এর আগে চীনের ১৫৩ মিটার উচ্চতার ‘স্প্রিং ট্যাম্পল বুদ্ধ’ ছিল সর্বোচ্চ উচ্চতার ভাস্কর্য।
l স্ট্যাচু অব ইউনিটি ভাস্কর্যে ভারতের সাবেক বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী সরদার বল্লভভাই প্যাটেলের (১৮৭৫-১৯৫০) প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দেশটিতে তিনি লৌহমানব হিসেবে পরিচিত।
l স্ট্যাচু অব ইউনিটির ভাস্কর ভারতের ৯৩ বছর বয়সী শিল্পী রাম ভি সুতার।
l বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতার ভাস্কর্যটি নির্মাণের জন্য সারা ভারতের মানুষদের সম্পৃক্ত করতে নানা ধরনের প্রচারণা কার্যক্রম চালানো হয়। এর মধ্যে ‘লোহা ক্যাম্পেইন’, ‘ফান্ড ফর ইউনিটি’, ‘রান ফর ইউনিটি’ উল্লেখযোগ্য। লোহা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে প্রায় ৫০ হাজার লাখ কেজি লোহা সংগ্রহ করা হয়।
l ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর কাজ শুরু হয়েছিল ভাস্কর্যটির। কাজ শেষে উদ্বোধন করা হয় গত ৩১ অক্টোবর। এটি ছিল সরদার প্যাটেলের ১৪৩তম জন্মদিন। ১ নভেম্বর থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয় ভাস্কর্যটি।
l ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ উচ্চতায় ১৮২ মিটার (৫৯৭ ফুট), যা প্রায় ৬০ তলা ভবনের সমান উঁচু। অতিকায় ভাস্কর্যটি তৈরিতে ১ হাজার ৭০০ টন ব্রোঞ্জ, ৫ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন স্টিল, ১৮ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন বিশেষ স্টিল বার এবং ২২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। খরচ হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ২ হাজার ৯৮৯ কোটি রুপি।
l ভাস্কর্য নির্মাণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৩ হাজার শ্রমিক এবং ৩০০ প্রকৌশলী।
l প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার দর্শনার্থী ঘুরে দেখতে পারবেন।
l ভাস্কর্যটির নিচ থেকে ২৫ মিটার উঁচু বা আটতলার উঁচু সমস্থানে ৪ হাজার ৭৪৭ বর্গমিটার আয়তনের প্রদর্শনী হল ও চলচ্চিত্র কেন্দ্র আছে। যেখানে বল্লভভাই প্যাটেলের জাতীয় জীবনের কৃতিত্ব চিত্রায়ণ করা হচ্ছে।

 

Advertisement