শামীমা বেগম কি ফিরতে পারবে?

ব্রিটবাংলা ডেস্ক : ২০১৫ সালে খাদিজা সুলতানা এবং আমিরা আবাসির সঙ্গে শামীমা বেগম যখন আইএসে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে সিরিয়া পাড়ি জমিয়েছিল তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। শামীমার বয়স এখন ১৯ বছর। এরিমধ্যে সে দুটি সন্তানের জন্ম দিয়েছে। এই দু’ সন্তানের কেউ বেঁচে নেই। তবে শামীমা বর্তমানে তৃতীয়বারের মতো সন্তান সম্ভাবা। গর্বে তার ৯ মাসের সন্তান। বৃটেনের দ্যা টাইমস পত্রিকায় শামীমা বেগমের একটি সংবাদ প্রকাশের পর তাকে নিয়ে আবার তোলপাড় শুরু হয়েছে। সামনে এসেছে আবার আইএস ইস্যু। টাইমের সঙ্গে স্বাক্ষাতকারে শামীমা বেগম বৃটেনে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। শুক্রবার তার পরিবারের পক্ষ থেকেও শামীমাকে বৃটেনে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। কিন্তু শামীমা কি চাইলে ফিরে আসতে পারবেন?
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের আল হ্ওাল রিফিউজি ক্যাম্পে ইসলামিক স্টেইটগ্রুপের লড়াই থেকে পালিয়ে আসা শিশু ও মহিলাদের সঙ্গে আশ্রয় নিয়েছেন শামীমা বেগম। কুর্দিশ রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, শামীমা বেগমের সঙ্গে চার পাঁচ বছর আগে আইএসে যোগ দেওয়া অন্যান্য বৃটিশ মহিলাও এখানে রয়েছেন। এরমধ্যে শামীমা বেগম ইউকেতে ফিরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আর এ নিয়ে চলছে নানান বিশ্লেষণ। তবে শুক্রবার জার্মানির মিউনিখে সিকিউরিটি সেমিনারে যোগ দিয়ে এমআই সিক্সের প্রধান আলেক্স ইয়াঙার বলেছেন, এ রকম পরিস্থিতে কেউ একবার নিজেকে জড়িয়ে ফেললে পরবর্তীতে তার অভিজ্ঞতা এবং নেটওয়ার্কই তাকে আরো বিপদগ্রস্ত করে তুলে। সিকিউরিটি সার্ভিসের অভিজ্ঞতার আলোকেই তিনি এ কথা বলেন। শামীমা বেগমের বৃটেনে ফেরার প্রসঙ্গেই মূলত তিনি এসব কথা বলেছেন।
প্রায় ৮শ ৫০ জন ব্রিটিশ নাগরিক আইএসে যোগ দিয়েছিল। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই বৃটেনে ফিরে এসেছে। বাকীদের ফেরার ব্যাপারে কঠোর মতামত দিয়েছেন হোম সেক্রেটারী সাজিদ জাভিদও। তিনি বলেছেন, কেউ যদি বিদেশে কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহযোগিতার পর বৃটেনে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করে তবে তাকে বাধা দিতে দ্বিধা করবেন না তিনি। এরপরে কেউ বৃটেনে ফিরে আসতে সক্ষম হলেও তাকে অবশ্যই যথাযথ তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হবার জন্যে প্রস্তুত থাকতে হবে।
এমআই সিক্সের প্রধান এবং হোম সেক্রেটারীর কথার প্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠে শামীমা বেগমের ভাগ্যে আসলে কি রয়েছে?
পনের বছর বয়সে শামীমা আইএসে যোগ দিতে সিরিয়া পাড়ি জমিয়েছিল। এরিমধ্যে দুই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। দুর্ভাগ্যক্রমে দুজনই মারা গেছে। বর্তমানে সে তৃতীয়বারের মতো সন্তান সম্ভাবা। শামীমার নাগরিকত্ব কি থাকবে? এ বিষয়ে সাবেক টেরোরিজম লেজিসলেশন রিভিউয়ার লর্ড কার্লাইল জানিয়েছেন, শামীমার যদি বিশ্বের আর কোনো দেশের নাগরিকত্ব না থাকে তাহলে নৈতিকভাবেই তাকে বৃটেনে আসার সুযোগ দিতে হবে। কারণ আইন অনুযায়ী বিশ্বে কেউই স্টেইটলেস থাকতে পারে না।
তবে শামীমা বেগম বিলেতে ফিরলেও টাইমসের সঙ্গে দেওয়া স্বাক্ষাতকারে তাকে বেশ কট্টরই মনে করছেন অনেকে। যদিও কট্টর পন্থা থেকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে পারদর্শী রাশাদ আলী মনে করছেন আইএস সমর্থকদেরও সুপথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
কার্দিশ রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, শুক্রবার সকালেও এই ক্যাম্পে নতুন করে আরো এক হাজারের বেশি শিশু ও মহিলা আশ্রয় নিয়েছেন। এরমধ্যে ব্রিটিশ আইএস সমর্থকদের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি। এদিকে শামীমা বেগমকে বৃটেনে ফিরিয়ে আনতে তার পরিবার থেকে শুক্রবার এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আবেদন জানানো হয়েছে।
Advertisement