সহিদুল সোহাগ এর কবিতা – লিলিথ

 

লিলিথ

স্নিগ্ধ মানবী,
কোন এক শব্দহীন তরঙ্গময় কুয়াশা ভেজা ভোরে,
প্রবেশ করেছিলো এক আদিম উদ্যানে,
সন্তর্পনে এসেছিলো লিলিথ;
শিল্পীর নিপুণ হাতে গড়া প্রথমা মানবী।

কোনো বয়স ছিলো না তার,
দেখেনি পৃথিবীর পাতায় পাতায় এতো রূপ-বিরূপের পরিহাস।
শুধু প্রথম পুরুষ শিহরিত হয়েছিলো দর্শনে!
মানবের এতো সুখ – জানতো না দুজনারই কেউ!
ঝড়, বৃষ্টি, রোদ- সবই লেগেছিলো ভালো,
মোহময় জীবনের ক্লান্তিহীন সাগরে শুধু জেগেছিলো পুরুষের ক্ষমতার ঢেউ।

পুরুষের নীল প্রভাবের ব্যাকুলতা
নিয়ম ভেঙ্গে নিয়ম না মানার জমিদারী,
বুঝে গিয়েছিলো সেই মানবী – পুরুষের প্রথম চালাকি।

প্রথম প্রতিবাদী সুর জেগেছিলো কন্ঠে তার
ডেকেছিলো পুরুষেরে তাই বিপরীত বিহারে,
– সমান অধিকারের তরে একাকী প্রথমা মানবী!
সাড়া দেয়নি পুরুষ!
প্রত্যাখ্যানের পর করেনি তাই পুনরায় করাঘাত।
অবহেলার প্রথম প্রতিরোধে মানবীর দৃশ্যলোকে জেগেছিলো ঘৃণার ক্রোধ।

আদিম সেই উদ্যানে ফুলের সৌরভে কটু গন্ধ মেশেনি তখনো,
শুভ্র বাতাসে বয়ে চলেছিলো নীলাভ নির্ঝরিণী।
চির শান্তি আর সজীবতা ছেড়ে
তাচ্ছিল্য ভরে তাই বুক পেতে নিয়েছিলো অনন্ত অভিশাপ!
– হয়েছিল মহা দানবী!
মাথা তবু করেনি নত,
ভয়ঙ্কর সুন্দর সেই প্রথমা মানবী!!

Advertisement