সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রতারণা; স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বোনের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট

সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের শত শত গ্রাহকের বিমার টাকা পরিশোধ না করার দায়ে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। কোম্পানির চেয়ারম্যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বোন এবং এমডির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে ৯টি মামলায়। কিন্তু সেটা তামিল হচ্ছে না দীর্ঘদিন।মনিরুজ্জামান ডাবলু নামের এক ব্যক্তি সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের জীবন বিমা পলিসি করেন ১০ বছর মেয়াদী কিন্তু মেয়াদপূর্তির পর তিনি একটা টাকাও পাননি। কুষ্টিয়ায় প্রায় ৫ শ’ বীমা দাবির একটি টাকারও পাননি গ্রাহকরা। এ ব্যাপারে বীমা গ্রহীতারা চাঁপ প্রয়োগ করলে বাড়িঘর ছাড়া সানলাইফের স্থানীয় কর্মকর্তারা।

মনিরুজ্জামান বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সে ১০ বছর মেয়াদি জীবন বিমা পলিসি করেছিলাম। মেয়াদপূর্তির পর তারা টাকা দিচ্ছে না। কথা ছিল মেয়াদপূর্তি হলে একবারে ডাবল (দ্বিগুণ) টাকা দেবে। কিন্তু এখনও কোনো টাকা দেয়নি, উল্টো হয়রানি করছে। তাদের কাছে ঘুরতে ঘুরতে যখন কোনো কাজ হলো না তখন আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।এ নিয়ে কুষ্টিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (দৌলতপুর) আদালতে দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের হাকিম জোয়ার্দ্দারের ছেলে বশির আহমেদ, একই ইউনিয়নের মো. শামসুর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান ও মনিরুজ্জামান ডাবলু বাদী হয়ে পৃথক মামলা দায়ের করেন।মামলার আসামিরা হলেন-সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রুবিনা হামিদ (স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বোন), প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আসলাম রেজা, অডিট অফিসার মো. সাইদুর রহমান খান ও কোম্পানি সচিব মো. রবিউল ইসলাম।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল মতিন খন্দকার এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল মতিন খন্দকার বলেন, গ্রাহক প্রতারণায় কোম্পানির চেয়ারম্যান ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বোন অধ্যাপক রুবিনা হামিদসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট (পরোয়ানা) জারি করেন কুষ্টিয়ার আদালত। এখন পর্যন্ত আমার কাছে এ সংক্রান্ত মোট ১১টি মামলা আছে। মোট গ্রাহক ৪৯৭ জন। মোট অর্থের পরিমাণ ৯০ লাখ ৬২ হাজার ৯২৬ টাকা। নয় মামলাতে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে। দুটি মামলা লকডাউনের জন্য স্থগিত আছে। এর মধ্যে ছয়টি মামলার ওয়ারেন্ট চলে গেছে।সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের মালিক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, তার স্ত্রী ও ছেলে। মালিকানা আছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মা, বোন, ভগ্নীপতি ও ভাগ্নে’র। গ্রাহক প্রতারণায় কোম্পানির চেয়ারম্যান ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বোন অধ্যাপক রুবিনা হামিদসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন কুষ্টিয়ার আদালত।ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের অফিস ঢাকার বনানীতে। কুষ্টিয়া থেকে বনানী থানায় এলেও ৬ ওয়ারেন্টের কোনোটাই তামিল হয়নি রহস্যজনক কারণে। এ বিষয়ে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হয়নি বনানী থানা পুলিশ।এছাড়াও সারা দেশে সানলাইফের কাছে ৩০ কোটি টাকার বেশি পাওনা গ্রাহকদের। কুষ্টিয়া ছাড়াও নড়াইল, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ আরও কয়েকটি জেলায় গ্রাহকরা মামলা করেছেন ইন্স্যুরেন্সটির বিরুদ্ধে। সেসব মামলার কয়েকটিতেও ওয়ারেন্ট জারি হয়।

Advertisement