সামরিক উস্কানি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য: পুতিন

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে সামরিক উস্কানির অভিযোগ এনেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার নিজ দেশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে এমন অভিযোগ করেন তিনি। এদিন ফোনে নাগরিকদের কাছ থেকে পাওয়া নানা প্রশ্নের উত্তর দেন রুশ প্রেসিডেন্ট।২০২১ সালের ২৩ জুন কৃষ্ণ সাগরে যুক্তরাজ্যের একটি যুদ্ধজাহাজকে তাড়া করার দাবি করে রাশিয়া। মস্কোর প্রতিরক্ষা বিভাগ জানায়, তাদের টহল জাহাজ থেকে ব্রিটিশ ডেস্ট্রয়ার শ্রেণির জাহাজ এইচএমএস ডিফেন্ডারকে সতর্ক করে দুইটি গোলা ছোঁড়া হয়। জাহাজের পথের সামনে জঙ্গিবিমান থেকে একটি বোমাও নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে মস্কোর এমন দাবি অস্বীকার করেছে ব্রিটিশ সরকার। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়। সেই ঘটনার সূত্র ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে সামরিক উস্কানির অভিযোগ তোলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে পুতিন বলেন, ইউক্রেনের ভেতরে কিংবা দেশটির কাছাকাছি কোনও স্থানে সামরিক ঘাঁটি তৈরির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই সেদিন ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজটি রাশিয়ার পানিসীমায় প্রবেশ করেছিল। ওই অপারেশনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা বিমানও যুক্ত ছিল।কৃষ্ণ সাগরে সেদিন রুশ বাহিনীর ভূমিকা কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি তৈরির উস্কানি ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, এই মুহূর্তে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার মতো কোনও ঝুঁকি নেই। এমনকি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজটি ডুবিয়ে দিলেও এ ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতো না।রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তারা জানে, এই সংঘাতে তারা জিততে পারবে না। আমরা আমাদের নিজেদের এলাকার জন্য লড়াই করবো। তাদের সীমান্তে যেতে আমরা কয়েক হাজার মাইল ভ্রমণ করিনি।’

পুতিনের অভিযোগ, রাশিয়া কিভাবে এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানায় সেটি দেখতেই যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সমন্বিতভাবে ওই উস্কানিমূলক ঘটনা ঘটিয়েছে।বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে কৃষ্ণ সাগরের ওই অঞ্চলটিকে জোরালোভাবে রাশিয়ার এলাকা হিসেবে উল্লেখ করেন পুতিন। তবে এটি আসলেই রাশিয়ার এলাকায় মার্কিন-ব্রিটিশ উস্কানি, নাকি সমুদ্র চলাচলে আইনগত অধিকার রক্ষার প্রচেষ্টা? এ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক বিশ্লেষক ফ্র্যাংক গার্ডনারের মতে, এটা নির্ভর করবে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর। তিনি লিখেছেন, ব্রিটেন ইউক্রেনের জোরালো সমর্থক। তাদের যুক্তি, কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের ওডেসা বন্দর থেকে জর্জিয়ায় যেতে যুক্তরাজ্যের এইচএমএস ডিফেন্ডারের জন্য ওটাই ছিল সবচেয়ে সোজা পথ। কিন্তু ওই পথটি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপের কয়েক মাইল দূর দিয়ে যায়। রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করেছে। পশ্চিমা দেশগুলো ওই দখলদারিত্বের নিন্দা জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও রাশিয়ার ওই দখলদারিত্বকে স্বীকৃতি দেয়নি।পুতিনের বুধবারের ভাষণে এটা পরিষ্কার যে, কৃষ্ণ সাগরের ওই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাশিয়া তার অবস্থানে অনড় রয়েছে। এ নিয়ে কোনওভাবেই আপোসের পথে হাঁটতে রাজি নয় মস্কো। সূত্র: বিবিসি।

Advertisement