স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরণ শুরু

দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় যাবত বন্ধ থাকার পর সোমবার (১১ অক্টোবর) থেকে নতুন করে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের কাজ শুরু করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।যদিও কর্মকর্তারা বলছেন, সোমবার থেকে এ কাজ শুরু হলেও একজন চালককে লাইসেন্সের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকটা দিন।বিআরটিএ’র পরিচালক এবং মুখপাত্র শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেছেন, এরই মধ্যে লাইসেন্স ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে।এখন বিআরটিএ থেকে লাইসেন্স পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় সাড়ে ১২ লাখ চালক। সংস্থাটি বলছে, কারিগরি জটিলতায় তাদের লাইসেন্স ইস্যু করা যায়নি। তাই এই চালকদের এতদিন অস্থায়ী লাইসেন্স ইস্যু করে আসছিল বিআরটিএ।

যেভাবে লাইসেন্স পাবেন চালকরা :বিআরটিএ’র পরিচালক মাহবুব-ই-রব্বানী বলেছেন, লাইসেন্স ছাপানোর কাজ শেষ হলে আবেদনকারী চালককে এসএমএস বা মোবাইল বার্তার মাধ্যমে সংগ্রহের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।একই সঙ্গে প্রিন্ট হওয়া লাইসেন্স কার্ড প্যাকেজিং করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জেলা সার্কেল অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যিনি যে অফিসে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছিলেন; তিনি সেখান থেকে লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পাবেন। কিন্তু সোমবার থেকেই লাইসেন্স হাতে পাচ্ছেন না কোনো আবেদনকারী।মাহবুব-ই-রব্বানী বলেছেন, এগুলো প্রস্তুত হয়ে বিভিন্ন জেলায় সার্ভিস ডেলিভারি আউট লেটে পৌঁছাতে এবং আবেদনকারীদের হাতে দিতে আরও তিন থেকে চারদিন সময়তো লাগবেই। এভাবে কাজ চললে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পেন্ডিং সব লাইসেন্স দেওয়া শেষ করা যাবে।বাংলাদেশে বিআরটিএ’র ৫৪টি মাঠ পর্যায়ের অফিস রয়েছে, যার অধীনে মোট ৭০টি সার্ভিস ডেলিভারি আউট লেট রয়েছে। এসব সার্ভিস ডেলিভারি আউট লেট থেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্সগুলো সরবরাহ করা হবে।

এতদিন কেন আটকে ছিল লাইসেন্স দেওয়া?

কারিগরি জটিলতার কারণে গেল দুই বছরের বেশি সময় যাবত চালকদের লাইসেন্স- যা কার্যত এক ধরনের ডিজিটাইজড স্মার্ট কার্ড- দেওয়া বন্ধ রয়েছে।এর মধ্যে ১২ লাখ ৪৫ হাজার চালক লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন, যারা লিখিত, মৌখিক এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।বিআরটিএ বলছে, এই আবেদনগুলোর সবই পুরনো আবেদন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক অর্থাৎ পাঁচ লাখের মতো আবেদন করা হয়েছে ছয় মাস আগে।এর আগে দুই দফায় স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাপার জন্য অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকার চুক্তি করলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা কাজ সম্পাদনে ব্যর্থ হয়েছে।সর্বশেষ ২০২১ সালের অগাস্টের শেষে সেনাবাহিনীর অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি বিএমটিএফের সঙ্গে বিআরটিএ নতুন করে চুক্তি স্বাক্ষর করে।মূলত এরপর স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড ছাপার কাজ শুরু হয়। বিএমটিএফের কারখানায় বর্তমানে প্রতিদিন নয় হাজারের অধিক লাইসেন্স ছাপানো হচ্ছে।যদিও নতুন করে যারা ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করছেন, তাদের ক্ষেত্রে বাড়তি সময় লাগছে না বলে জানিয়েছে বিআরটিএ।তাদের নির্ধারিত তারিখেই বায়োমেট্রিক দিয়ে যথাসময়ে স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, নতুন লাইসেন্স ছাপানোর কোনো কাজ বিএমটিএফ করছে না।উল্লেখ্য, বিএমটিএফ কেবল পেন্ডিং বা আটকে থাকা লাইসেন্স ছাপিয়ে দ্রুত সরবরাহের কাজ করছে। ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে স্মার্ট লাইসেন্স দেওয়া শুরু করেছিল বিআরটিএ।

Advertisement