হামলা করে ফেরার পথে ফ্লাইটেও ভীতি ছড়িয়েছিল ট্রাম্পের উগ্র-সমর্থকরা

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: ক্যাপিটল হিলে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম হামলা চালিয়ে গন্তব্যে ফেরার পথে ফ্লাইটেও ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল পরাজিত ডনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র-সমর্থকরা। জো বাইডেনকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদানে ডাকা কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন চলাকালে আচমকা বর্বর আক্রমণ চালায় তারা। অবশ্য পুলিশি কড়া প্রতিরোধের মুখে হামলাকারী ডনাল্ড ট্রাম্প-সমর্থকরা ওয়াশিংটন এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি এয়ারলাইন্সের বরাত দিয়ে আল-জাজিরার প্রতিবেদন বলছে, হামলাকারীরা ওয়াশিংটন ছেড়ে যাওয়ার পথেও উগ্রতার ছাপ রেখে গেছে। ১৭টি এয়ারলাইন্সের কর্মীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টসের প্রেসিডেন্ট সারা নেলসন এক বিবৃতিতে বলেন, বুধবার উত্তেজিত জনতার এমন আচরণের প্রভাব পড়েছিল ওয়াশিংটন ডিসি এলাকার ফ্লাইটগুলোতে। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি প্রতিটি যাত্রীর নিরাপত্তার জন্য ছিল হুমকি। ইউএস ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান রোজার ট্রাম্প সমর্থকদের সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বলেন, একটি সহিংস আচরণের সাক্ষী হলাম আমরা, যেখানে শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রের কোনো জায়গা ছিল না।

এ ধরনের নজির এই প্রথম। এখনও ওয়াশিংটন এলাকায় অবস্থানকরা অবশিষ্ট হামলাকারীরা যাতে কোন অবস্থাতেই ফ্লাইটে চড়তে না পরে সে জন্য নিষেধাজ্ঞার নোটিশ জারি করতে কতৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারলাইন্স ইউনিয়ন। নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকেই ভোট জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রের কথা বলে আসছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। একাধিকবার তিনি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন না বলেও হুংকার দেন। গত ৩রা নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হারার পর আইনি লড়াই চালিয়েও ব্যর্থ হন ট্রাম্প। এতো কিছুর পরও হোয়াইট হাউস ছাড়তে নারাজ তিনি। তার পরিকল্পনা ছিল, ৬ই জানুয়ারি কংগ্রেসের সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী ফল পাল্টে দেয়ার। কংগ্রেসের অধিবেশনে ইলেকটোরাল কলেজের ভোট প্রত্যাখ্যানের জন্য কংগ্রেস সদস্যদের রাজি করানো নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন ট্রাম্প। সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান থাকায় এ নিয়ে আশাবাদীও ছিলেন তিনি। কিন্তু অধিবেশনের এক দিন আগে জর্জিয়ার সিনেট নির্বাচনে দু’টি আসন জিতে নেয় ডেমোক্রেটরা। ফলে কংগ্রেসের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ডেমোক্রেটিক পার্টি পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেরই নিয়ন্ত্রণ পান। ট্রাম্পের খায়েশ ছিল, সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান দলের প্রার্থীরা জয়ী হয়ে যেন বাইডেনের কর্মসূচিগুলো আটকাতে পারেন। সিনেট নির্বাচনে পরাজয়ের পর আবারও তিনি টুইটারে ভোট কারচুপির দাবি করেন। সমর্থকদের উস্কে দেন। আর তার উস্কানি পেয়ে আগে থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থান করা উগ্র সমর্থকরা কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনের দিনে ক্যাপিটল হিলে হামলা করে বসে। এ সময় কয়েক শ’ সমর্থক অস্ত্র-শস্ত্রসহ পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে।

Advertisement