৫০ হাজার পাউন্ডের বেশী ঋণের বোঝা নিয়ে গ্র্যাজুয়েট হবেন ইংল্যান্ডের শিক্ষার্থীরা

বিশেষ প্রতিনিধি : স্টুডেন্ট লোনের ইন্টারেস্ট রেইট বাড়িয়ে ৬ দশমিক ১ শতাংশ করায়, ইংল্যান্ডের শিক্ষার্থীরা গড়ে ৫০ হাজার ৮শ’ পাউন্ডের ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে গ্র্যাজুয়েট হতে যাচ্ছেন ব’লে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর ফিসক্যাল স্টাডিজ (সংক্ষেপে আইএফএস)।

তাছাড়া দরিদ্রতম শিক্ষার্থী, যাদের জন্য অতিরিক্ত লোনের ব্যবস্থা রয়েছে, তারা ৫৭ হাজার পাউন্ডের বেশী দেনা নিয়ে স্নাতক হবেন ব’লে জানায় গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। এধরনের শিক্ষার্থীরা মেইন্টেনান্স সাপোর্ট বাবদ অতিরিক্ত অর্থ সহায়তা পেলেও এগুলো এখন অনুদান নয় বরং ঋণ। এর মানে হল দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ঋণ সর্বোচ্চ।

শিক্ষার্থীদের কোর্স শুরু হতে না হতেই এসব ইন্টারেস্ট চার্জ লাগানো হয়। আর আইএফএস বলছে, স্নাতক হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার মুহূর্তে একেকজন শিক্ষার্থীর সুদের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় গড়ে ৫ হাজার ৮শ’ পাউন্ড। সুদের হার ‘অনেক বেশী’ ব’লে বর্ণনা করেছেন প্রতিবেদন লেখক ক্রিস বেলফিল্ড। এদিকে শিক্ষা অধিদপ্তর এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। অবশ্য ইউনিভারসিটিস মিনিস্টার জো জনসন দাবী করেন, আগের যে কোন সময়ের তুলনায় এখন বেশী সংখ্যক অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন। তবে সুদের হার কমবে কিনা সে ব্যপারে মন্তব্য করতে রাজী হননি তিনি।

আইএফএস-এর এই গবেষণায়, শিক্ষার্থীদের জন্য ২০১২ সালে সূচিত আর্থিক ঋণ সহায়তা ব্যবস্থার (বর্তমান স্টুডেন্ট ফাইনান্স সিস্টেম) তুলনা করা হয়েছে ২০০৬ সালে সূচিত ব্যবস্থার সঙ্গে। আগে যেখানে শিক্ষার্থীদের ফী ছিল ৩ হাজার পাউন্ড, সেখানে তা বাড়িয়ে করা হয় ৯ হাজার পাউন্ড। স্নাতকদের জন্য ঋণ পরিশোধের নির্ধারিত সীমাও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার পাউন্ডে, তাই স্পষ্ট যে কম আয়কারীদের প্রাথমিক অবস্থা বরং স্বচ্ছল ছিল। আইএফএস এর রিপোর্টে বলা হয়, ২০১২ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের নির্ধারিত সীমা একই অবস্থানে থাকলেও সব রকমের ইনকাম লেভেলের (উপার্জন স্তরের) স্নাতকদের অবস্থা আগের টিউশন ফি আমলের চেয়ে খারাপ।

উল্লেখ্য, সাধারণ নির্বাচনের প্রচারণায় টিউশন ফি স্ক্র্যাপ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল লেইবার দল। নির্বাচনের ফলাফলেও তার প্রভাব পড়তে দেখা যায়। এমনিতেই বর্ধিত ফী, তার উপর বছর বছর সেটা আরও বাড়ানর ক্ষমতাসীনদের পরিকল্পনায় তরুণ ভোটাররা উদ্বিগ্ন ছিল। তাই তারা এই নির্বাচনে লেইবারের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তরুণ ভোটারদের জন্য উশন ফি যে একটা বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে, সেটা গত সপ্তাহে স্বীকার করেছেন সিনিয়র কন্সাভেটিভে মিনিস্টার ড্যামিয়ান গ্রিন। অন্যদিকে লেইবারের শ্যাডো এজুকেশন মিনিস্টার গর্ডন মারসডেন বলেন, ‘রিপোর্টটি প্রমাণ করেছে, চলমান টিউশন ফি ব্যবস্থাকে প্রগতিশীল বলার যে কোন যুক্তি নিতান্তই অর্থহীন।… টোরিদের অধীনে শিক্ষারতীদের দেনা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে, কমার কোন লক্ষণ নেই।’ ইউনিভারসিটিস মিনিস্টার জানান, ২০০৯ সাল থেকে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার হার রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৪৩%।

Advertisement