অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের

সিরিজের তৃতীয় টি-টুয়েন্টিতে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়াকে ১০ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই পাঁচ ম্যাচের সিরিজ জয় নিশ্চিত করল স্বাগতিকরা। যেকোনো ফরম্যাটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়।বাংলাদেশের দেওয়া ১২৮ রানে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই হোঁচট খায় সফরকারীরা। নতুন ওপেনিং জুটিতেও এদিন সফল হয়নি অজি শিবির। নাসুম আহমেদের বলে মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড।

দ্বিতীয় উইকেটেই অবশ্য দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় অজিরা। সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া বেন ম্যাকডরমটকে সাথে নিয়ে বড় জুটি গড়েন এ সিরিজে সবচেয়ে সফল অজি ব্যাটসম্যান মিশেল মার্চ। দুইজনে গড়ে তোলেন ৬৪ রানের জুটি। সফরকারীদের প্রথম জয়ের স্বপ্ন দেখানো এ জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আউট হওয়ার আগে বেন ম্যাকডরমট ৪১ বলে করেন ৩৫ রান। এরপর স্কোরবোর্ডে আর ৩ রান যোগ হতেই আবারও ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। ময়েসেজ হেনড্রিকসকে নিজের শিকারে পরিণত করেন শরিফুল।তবে একপাশ আগলে রেখে বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছিলেন মার্শ। তিনি তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। দলীয় ৯৪ রানে মার্শকে আউট করে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা জোড়ালো করেন শরিফুল। এরপর আর উইকেট না হারালেও জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারেনি অজিরা। ২০ ওভারে ১১৭ রানেই থামতে হয়েছে তাদের।

উইকেট না পেলেও এদিন বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন মোস্তাফিজ। চার ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়েছেন তিনি। ৪ ওভারে ২৯ রানে ২ উইকেট শিকার করেছেন শরিফুল। বাকি দুই উইকেট ভাগ করে নিয়েছেন সাকিব ও নাসুম।এর আগে, মিরপুরে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে তারা। প্রথম দুই ম্যাচের মতোই এ ম্যাচেও ব্যর্থ হয়েছেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও সৌম্য সরকার।দলীয় ৩ রানেই পরপর দুই বলে আউট হন এ দুইজন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে হ্যাজেলউদের করা শেষ বলে আউট হন নাঈম। এরপর তৃতীয় ওভারে অ্যাডাম জাম্পার করা প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন সৌম্য।

তৃতীয় উইকেটে হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব। এ দুইজন করেন ৪৪ রানের জুটি। ইনিংসের নবম ওভারে জাম্পার বলে সাকিব আউট হলে ভাঙে তাদের জুটি। ১৭ বলে ২৬ রান করে আউট হন সাকিব।

দলীয় ৪৪ রানে সাকিব আউট হওয়ার পর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে হাল ধরেন আফিফ। জুটি গড়ার সঙ্গে সঙ্গে মনযোগ দেন রান রেট বাড়ানোর দিকেও। তবে রান আউটে থামেন তিনি। তাতে ভাঙে মাহমুদউল্লাহ ও তার ২৯ রানের জুটি। এরপর দ্রুত ফিরে যান শামিমও।

নুরুল হাসান সোহান এসে ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত দিলেও বেশিদূর যেতে পারেননি। তিনিও সাজঘরে ফেরেন দূর্ভাগ্যজনক রান আউট হয়ে। এক ছক্কায় সোহান করেন ৫ বলে ১১ রান।দীর্ঘ সময় ক্রিজে টিকে থেকে দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন মাহমুদউল্লাহ। ৫২ বলে করেন অর্ধশতক, যদিও এটি বাংলাদেশের জার্সিতে টি-টুয়েন্টিতে সবচেয়ে ধীরগতির অর্ধশতক। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে অর্ধশতক হাঁকানোর ঠিক পরের বলেই আউট হন তিনি।শেষ দুই বলে মোস্তাফিজুর ও মেহেদী হাসানকে আউট করে অভিষেক ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব অর্জন করেন অজি পেসার নাথান এলিস।

বাংলাদেশ একাদশ সৌম্য সরকার, নাইম শেখ, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), নুরুল হাসান সোহান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শামীম পাটোয়ারী, শেখ মাহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।

অস্ট্রেলিয়া একাদশ বেন ম্যাকডরমট, অ্যালেক্স কারে, মিচেল মার্শ, ময়েসেজ হেনড্রিকস, অ্যাশটন টার্নার, ম্যাথু ওয়েড (অধিনায়ক), অ্যাশটন অ্যাগার, ড্যান ক্রিশ্চিয়ান, নাথান এলিস, অ্যাডাম জাম্পা, জশ হ্যাজলেউড।

Advertisement