ব্রিট বাংলা ডেস্ক : ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন শশীকান্ত সেন্থিল নামের এক আইএএস কর্মকর্তা। এখানেই শেষ নয়। সদ্য আইএএস-এর চাকরি ছাড়া শশীকান্ত সেন্থিল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এনআরসি হলে কোনও নথি জমা দেবেন না তিনি। সত্যাগ্রহের ডাক দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি পাঠিয়ে শশীকান্ত জানিয়েছেন, আমি নাগরিক নই বলে ঘোষণা করা হলে ডিটেনশন সেন্টারে যাব।
এদিকে আরেক সাবেক আইএস কর্মকর্তা হর্ষ মন্দার বলেছেন, আমিও মুসলিম হয়ে যাব।
মোদী সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, এনআরসি-র বিরুদ্ধে মুসলিমদের উদ্দেশে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন ভারতের সাবেক এ আমলারা। বিলটাকে তারা অমানবিক এবং অসাংবিধানিক বলছে।
তারা বলছেন, সরকারি নীতিতে আক্রান্ত হলে মুসলিমদের প্রতিবাদ করার সমস্ত অধিকার রয়েছে।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, সাবেক আমলাদের কেউ কেউ ডাক দিচ্ছেন ‘সত্যাগ্রহ’র আবার কেউ কেউ ‘আইন অমান্য আন্দোলন’।
এতদিন রাজনৈতিক স্তরে প্রতিবাদ হচ্ছিল এ বিল নিয়ে। দেশের ৬২৫ জন বিশিষ্ট নাগরিকও বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন। তবে বুধবার লোকসভায় বিল পাস হওয়ার পর নাগরিক পর্যায়ে প্রতিবাদ শুরু হয়।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের যুক্তি, বিলের সঙ্গে দেশের মুসলিমদের সম্পর্ক নেই। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের ফলে মুসলিমরাই হেনস্থার শিকার হবেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গুজরাট দাঙ্গার পরে চাকরি ছেড়ে দেয়া মন্দার বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পরে আইন অমান্য করতে মুসলিম হিসেবে নাম নথিভুক্ত করাব। তার পরে এনআরসি’তে নথি জমা দিতে অস্বীকার করব। নথির অভাবে নাগরিকত্ব চলে যাওয়া মুসলিমদের যে শাস্তি হবে, ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে, আমাকে সেই শাস্তি দিতে হবে বলে দাবি তুলব।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসির অর্থনীতিবিদ লেখা চক্রবর্তী টুইটারে নিজেকে ‘মুসলিম’ ঘোষণা করে লিখেছেন, আমি মুসলিম। ভারতেই আমার জন্ম। আমি ফতিহা জানি। গায়ত্রীমন্ত্রও জানি। কারণ আমার জন্ম ভারতে।
জওয়াহার লাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়র ছাত্রনেতা উমর খালিদ জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হলে, দেশে এনআরসি হলেও নথি জমা দেবেন না।
এর আগে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছিলেন দেশটির আইএএস কর্মকর্তা কান্নন গোপীনাথন।