ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: আড়াই বছর পর উইকিপিডিয়ার উপর থেকে নিষধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে তুরস্ক। বুধবার থেকে সর্বসাধারণের জন্য দেশটিতে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে অইনলাইন বিশ্বকোষটি। এর একমাস আগে দেশটির শীর্ষ আদালত এক রায়ে জানায়, অনলাইন বিশ্বকোষটিতে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে রাখা অসাংবিধানিক। এ খবর দিয়েছে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।
খবরে বলা হয়, ২০১৭ সালে উইকিপিডিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় তুর্কি সরকারের। ওয়েবসাইটটিতে তুরস্কের সঙ্গে সিরীয় জঙ্গি ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসবাদের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করা হয়। তুর্কি সরকার এ তথ্যগুলো সরিয়ে নিতে বললে অস্বিকৃতী জানায় উইকিপিডিয়া। এরপরই তুরস্কে ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। প্রায় আড়াই বছর পর বুধবার ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
এদিন, তুরস্কের সরকারি গ্যাজেট ডিসেম্বরে দেয়া দেশটির সাংবিধানিক আদালতের রায় প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পরই উইকিপিডিয়ায় প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। গত ডিসেম্বরে আদালত এক রায়ে জানায়, উইকিপিডিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা মত প্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে, যা সংবিধান পরিপন্থী।
সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সংগঠন নেটব্লকস জানিয়েছে, বুধবারের মধ্যে তুরস্কের বেশিরভাগ অংশেই উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে উইকিপিডিয়া। তবে অধিকারকর্মীরা জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞাটি প্রত্যাহার করে নিতে অনেক বিলম্ব করেছে সরকার। উইকিপিডিয়ার মালিকানা প্রতিষ্ঠান উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের এক আইনজীবী গনেন্স গুরকায়নাক এক টুইটে লিখেন, বিষয়টি সাংবিধানিক আদালত বা ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস এ যাওয়াই উচিৎ ছিল না। প্রসঙ্গত, তুরস্কে উইকিপিডিয়া নিষিদ্ধের ব্যাপারে ইউরোপের আদালতেও একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। সেখানে এখনো মামলাটি ঝুলে আছে।
তুরস্কে ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা নতুন নয়। এর আগে ২০১৪ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার ও ভিডিও-শেয়ারিং ওয়েবসাইট ইউটিউব নিষিদ্ধ করে দেয় তুর্কি সরকার। তবে দেশটির সাংবিধানিক আদালত সেসময় তাৎক্ষণিকভাবে নিষেধাজ্ঞাগুলোকে অসাংবিধানিক ঘোষনা করেছিল।
তুরস্কে উইকিপিডিয়া নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে লড়া এক আইনজীবী ইয়ামান আকদেনিজ বলেন, তুরস্কে এখনো হাজারো ওয়েবসাইট বন্ধ রয়েছে। উইকিপিডিয়া উন্মুক্ত হওয়া কেবল শুরুর পদক্ষেপ।
কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট অনুসারে, তুরস্কে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে রয়েছে। বিশেষ করে, ২৩০১৬ সালের এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর তা আরো জোরদার হয়েছে। অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে একাধিক গণমাধ্যম। কারাবন্দি করা হয়েছে অসংখ্যা সাংবাদিককে। এখনো জেলে রয়েছেন অন্তত ৪৭ জন সংবাদকর্মী।