ইইউ দেশভূক্ত নাগরিকদের জন্য এটা একটা অনিশ্চিত সময় -জন বিগস

১ জানুয়ারী ব্রেক্সিটের প্রাক্কালে টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র জন বিগস বারায় বসবাসরত ২৭টি দেশের ৪১ হাজার ইইউ দেশভূক্ত নাগরিকদের সকল ধরনের সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন।

৩১ জানুয়ারী ব্রেক্সিট ডে উপলক্ষে দেয়া বিশেষ বিবৃতিতে মেয়র বলেন, ইইউ দেশভূক্ত নাগরিকদের জন্য এটা একটা অনিশ্চিত সময়। কিন্তু মেয়র হিসাবে আমি এই আশ্বাস দিয়ে বলতে চাই যে, এই দেশ তাদেরও।

তাই টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল তাদের বসবাস এবং কাজ চালিয়ে যাবার জন্য ইইউ সেটেলম্যান্ট পোগ্রামের অধীনে সকল ধরনের সহযোগিতা করবে। এছাড়া কাউন্সিল তার পার্টনারদের সাথেও কাজ করছে ব্রেক্সিট পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য।

গত বছর টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ব্রেক্সিট কমিশন কতৃক প্রকাশিত রিপোর্টে ব্রেক্সিটের কারনে টাওয়ার হ্যামলেটসে কী প্রতিক্রিয়া হবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে স্থানীয় অর্থনীতি, পাবলিক সার্ভিস এবং সিভিল সোসাইটিতে এর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া এমনকী ইইউ নাগরিকদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এসময় মেয়র বিশেষ করে এনএইচএসে স্টাফ সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

এব্যাপারে মেয়র জন বিগস বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটসের অধিকাংশ মানুষই ইইউতে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ইস্ট এন্ড সব সময়ই যে কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষমতা দেখিয়েছে এবং জয়ী হয়েছে। আমাদের বারাতে ইইউভুক্ত ২৭ টি দেশের ৪১ হাজার নাগরিক বসবাস করেন এবং এদেশে তাদের অবদান অনেক। স্থানীয় কাউন্সিল হিসাবে তারা যাতে এদেশে থাকতে পারেন এজন্য তাদেরকে আমরা সকল ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাব।

ইইউ নাগরিকদের উদ্দেশ্যে আমাদের পরিষ্কার বার্তা হচ্চেছ এটা আপনাদেরই দেশ। মেয়র আরো বলেন, আমি খুবই মর্মাহত যে সরকার ইইউ থেকে বের হবার চুক্তি থেকে বিভিন্ন জিনিস বাদ দিয়েছে অথবা সংশোধন করেছে। এসবের মধ্যে রয়েছে ওয়ার্কাস রাইট, রিফিউজি চিলন্ড্রেনদের সুরক্ষা, বায়ু দূষণ মোকাবেলা ইত্যাদি আইন। এরচেয়েও বড় কথা হচ্চেছ তারা অর্ন্তবর্তী সময় শেষে অর্থ্ াবছর শেষে নো ডিল ব্রেক্সিটের পথ খোলা রেখেছে। এটা হলে আমাদের অর্থনীতির জন্য মারাত“ক ক্ষতি বয়ে আনবে।

কেবিনেট মে“ার ফর কালচার আর্ট এন্ড ব্রেক্সিট কাউন্সিলার সাবিনা আক্তার বলেন সরকার তাদের নির্বাচনী শ্লোগানে ব্রেক্সিট সম্পন্ন করার ঘোষনা দিলেও আমাদের জন্য অনেক অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। এক বছরের অর্ন্তবর্তী সময়ের মানে হচ্চেছ আমরা জানি না দীর্ঘ মেয়াদে দেশের পরিকল্পনাটা কী। দুই বছর আগে আমরা ব্রেক্সিট কমিশন গঠন করেছিলাম টাওয়ার হ্যামলেটসে এর প্রতিক্রিয়া দেখতে এবং প্রস্তুতি নিতে। এখন আমরা আমাদের পার্টনারদের সাথে কাজ করছি যাতে ভবিষ্যতে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে মেয়র জন বিগসের চিঠি: কাউন্সিলের বাজেট ফিরিয়ে দেয়ার আহধ্বান টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র জন বিগস লোকাল কাউন্সিলগুলোর বাজেট ফিরিয়ে দেয়ার আহধ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে লেখা এক বিশেষ চিঠিতে তিনি এই আহধ্বান জানান।

চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন সরকারের ব্যয় সংকোচনের কারনে ২০১০ সালের পর টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলকে ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ড সাশ্রয় করতে হয়েছে এবং একই সাথে সার্ভিসের উপরও চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয় ২০২৩ সালের মধ্যে কাউন্সিলকে আরো ৩৯ মিলিয়ন পাউন্ড সাশ্রয় করতে হবে।

চিঠিতে মেয়র বলেন, ২০১০ সালের পর সারা দেশের লোকাল কাউন্সিলগুলোর বাজেট কমেছে ৪৩% টাকার অংকে যার পরিমাণ হচ্চেছ ১০ বিলিয়ন পাউন্ড। মেয়র উল্লেখ করেন, কাউন্সিলগুলোর কর্মীর সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ কমেছে এবং বিভিন্ন ধরনের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অন্যান্য সাশ্রয়ও করা হয়েছে। এখন কাউন্সিলের পক্ষে আর কিছু করা সম্ভব নয়

কাউন্সিলকে দশকব্যাপী সরকারের ব্যয় সংকোচনের বিপরীতে অব্যাহত সার্ভিস বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে তার নিজস্ব বাজেট করতে হচ্চেছ। বিশেষ করে স্পেশাল নিডস এবং এডাব্ব সোশাল কেয়ার খাতে চাহিদা বাড়ছে। বাজেটে কাউন্সিলগুলো তাদেরকে প্রধান্য দিলেও টোরী সরকার এসব খাতে বাজেট বাড়ানোর কোন প্রতিশ্রুতি দিচ্চেছ না। কাউন্সিলকেই এই বাজেট গ্যাপ পূরন করতে হচ্চেছ।

জন বিগস বলেন, কোর ফান্ডিং কাটের কারনে টাওয়ার হ্যামলেটসের মতো কাউন্সিলগুলোকে বিজনেস রেটের উপর নির্ভর করতে হচ্চেছ। কিন্তু প্রত্যেক বছর বিজনেস রেট বাড়লেও সরকার এই বাড়তি রেট কাউন্সিলকে দিচ্চেছ না।

মেয়র বলেন, সরকার দিনের পর দিন এভাবে কাউন্সিলের বাজেট কাটতে পারেনা এবং আশা করতে পারেনা যে এর কোন নেতিবাচক প্রভাব নেই। ব্যয় সংকোচন যদি সত্যিকার অর্থে শেষ হয়ে থাকে তাহলে প্রধানমন্ত্রীর উচ্ িকাউন্সিলগুলোর বাজেট ফিরিয়ে দেয়া।

কেবিনেট মে“ার ফর রিসোর্স এন্ড ভলান্টারী সেক্টর কাউন্সিলার ক্যান্ডিডা রোনাহ্ব বলেন, কাউন্সিলগুলোকে টোরীদের বাজেট কাটের কারনে কঠিন সময় পার করতে হচ্চেছ। স্পেশাল নিডস এবং সোশাল কেয়ারের মতো বিষয়গুলোকে সরকার কাউন্সিলের কাছে রেখে দিয়েছে অতিরিক্ত ব্যয়ের ভার বহন করার জন্য। এটা কোনভাবেই স্থায়ী কোন সমাধান হতে পারে না।

Advertisement