ইউনাইটেড ন্যাশন্স এসোসিয়েশন লুটন এবং পূর্বাচলের যৌথ উদ্যোগে ২৭শে ফেব্রুয়ারি বিকেল চারটায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়। এটি ভার্চুয়াল হওয়াতে বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষেরা অংশ নেন। পূর্বাচলের ফেইসবুক পেইজ থেকে এই অনুষ্ঠানটি লাইভ প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন পূর্বাচলের সাধারণ সম্পাদক ডক্টর আনোয়ারুল হক।
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে শুধুমাত্র উর্দুকে জাতীয় ভাষা হিসেবে ঘোষনার প্রতিবাদে বাঙ্গালী ছাত্ররা পাক সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হয়ে উঠে। এই প্রতিবাদের সময় পাকিস্তানি পুলিশের গুলিতে নিহত হয় সালাম, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা আরো অনেকে। ৫২ সালের সেই ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এই অনুষ্ঠানটি শুরু করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পূর্বাচলের সভাপতি ডক্টর নাজিয়া খানম ওবিই ডিএল স্বাগত বক্তব্য রাখেন তিনি বলেন, “নিজের ভাষায় কথা বলা ও তাকে সম্মান দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারন ভাষার মাধ্যমেই আমাদের পরিচিতি ও সংস্কৃতি প্রকাশ পায়। অন্য ভাষা জানাটাও আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটির মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনকে আরো উন্নতির পথে নিতে পারি। পেতে পারি, উচ্চশিক্ষা, আর্থিক সচছলতা এবং পেশাগত দক্ষতা অর্জনের উপায়। প্রতিটি সম্প্রদায়কে অবশ্যই নিজের ভাষাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।” উনি ওয়েলশ এবং পোলিশ দেশকে একটি ইতিবাচক উদাহরণ হিসেবে দেখিয়েছেন। এই দু’টি দেশ শত শত বছর ধরে নিজেদের ভাষা ধরে রেখেছে সযত্নে। হাজারো প্রতিকূলতার মাঝেও অন্যের চাপিয়ে দেওয়া ভাষা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে।
বিভিন্ন ভাষার কোলাহলে অনুষ্ঠানটি মুখরিত হয়েছিল প্রতিটি মুহুর্ত। পূর্বাচলের বিশিষ্ট সদস্য ডক্টর রুখসানা সাফা তাঁর ছেলে ড. সিবগাত রহিমকে সাথে নিয়ে একুশের সর্বোচ্চ জনপ্রিয় গান “আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী” চৌদ্দটি ভাষায় গেয়ে অতিথিদের মধ্যে প্রশংসিত হয়েছেন। বড়দের সাথে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও তাদের পরিবারের সহযোগিতায় বাংলায় পরিবেশন করে নাচ, গান ও আবৃত্তি। এদের অংশগ্রহণে পূর্বাচলের প্রতিটি সদস্য গর্ববোধ করেছেন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার জন্যে। নিজেদের সংস্কৃতির সাথে সাথে অন্য সংস্কৃতিকেও সম্মান দেখানোর যে মনোভাব তা প্রকাশিত হয়েছে এদের অংশগ্রহণে। অনুষ্ঠানে আরো ছিল ভিন্ন ভাষার কবিতা আবৃত্তি, যেমন এরাবিক, হিন্দি, উর্দু, স্পেনিশ, গ্রিক, ক্রিওল, বসনিয়ান, ইংরেজি ইত্যাদি। এই অনুষ্ঠানে বেডফোর্ডশায়ারের লর্ড লেফটেন্যান্ট হেলেন নেলিস ওয়েলস ভাষায় বক্তব্য রাখেন, বেডফোর্ডশায়ারের হাই শেরিফ সুজান লুসাডা এবং লুটন সাউথ এর এমপি রেইচ্যাল হপকিন্স তাদের মত প্রকাশ করেন ভাষাগত বৈচিত্র্যকে সমর্থন করে।
পূর্বাচলের অন্যতম সহ সভাপতি শাহনাজ সা’দ এর সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
Advertisement