ইস্ট লন্ডন মসজিদের জন্য ছিলো একটি বিশেষ দিন। ওইদিন সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা হাফিজগন ছুটে এসেছিলেন ইস্ট লন্ডন মসজিদে । সারাদিনই মসজিদজুড়ে শোনা যায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের সুমধুর ধ্বনি । ‘কুরআন রিভিশন ডে’ উপলক্ষে দুই শতাধিক হাফিজ (ছাত্র-শিক্ষক) জমায়েত হয়েছিলেন ইস্ট লন্ডন মসজিদে । বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ছাত্ররা সারাদিন কুরআন তেলাওয়াত করেন এবং শিক্ষকগন তাদের তেলাওয়াত শুনেন ।মাত্র সাড়ে ৬ ঘণ্টায় কোনো ভুল উচ্চারণ ছাড়াই পবিত্র কুরআনের রিভিশন সম্পন্ন করেন লুটনের মসজিদে নুর মক্তবের ছাত্র শ্রীলংকান বংশোদ্ভুত ইলিয়াস হামিদ সুলতান। তাছাড়া একই মক্তবের ছাত্র শ্রীলংকান বংশোদ্ভুত আব্দুল্লাহ হানুকও সাত ঘণ্টার মধ্যে কুরআনের রিভিশন সম্পন্ন করার সম্মান অর্জন করেন।দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এই কুরআন রিভিশন কর্মসূচিতে সারাদেশ থেকে ১৪০ জন হাফিজ অংশগ্রহণ করেন । তাদের সাথে ছিলেন ৭০ জন শিক্ষক। লন্ডনের বাইরের সিটির হাফিজগন শুক্রবার রাতেই এসে পৌঁছেন ইস্ট লন্ডন মসজিদে । তারা মসজিদের গ্রাউন্ড ফ্লোরে রাত্রিযাপন করেন। লন্ডনে বসবাসরত হাফিজগন ফজরের নামাজে অংশগ্রহণ করেন। এরপর একযোগে সকালের নাস্তা শেষ করে শিক্ষকদের কাছে কুরআন তেলাওয়াত শুনাতে শুরু করেন। এই তেলাওয়াত চলতে থাকে এশার নামাজের আজান পর্যন্ত।রিভিশন চলাকালে কুরআনপ্রিয় মানুষ মসজিদে ছুটে আসেন এবং সারাদিনই মসজিদে অবস্থান করে কুরআন তেলাওয়াত শুনেন ও পর্যবেক্ষন করেন। ইস্ট লন্ডন মসজিদ একদিনের জন্য কুরআনে হাফিজদের মিলনক্ষেত্রে পরিনত হয়েছিলো।
এশার জামাত শেষে রাত ৮টার দিকে আয়োজন করা হয় সমাপনী অনুষ্ঠান । কুরআন রিভিশন প্রজেক্টের মুল উদ্যোক্তা নিউক্যাসেলের সৈয়দ আনিসুল হক এর সঞ্চালনায় সমাপনী পর্বে বক্তব্য রাখেন মিশরের বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার শায়খ মোহাম্মদ ফুহাদ ও ইস্ট লন্ডন মসজিদের চেয়ারম্যান আইয়ুব খান। এসময় উপস্থিত ছিলেন মসজিদের প্রধান ইমাম শায়খ আব্দুল কাইয়ুম, সিনিয়র ইমাম হাফিজ মাওলানা আবুল হোসাইন খান, কুরআর রিভিশন প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাজুয়েট আবদুল্লাহ মওদুদ, প্রজেক্ট সমন্বয়কারি সিরাজুস সালেকীন। অতিথিরা অংশগ্রহণকারি হাফিজদের হাতে সার্টিফিকেট ও গিফট বক্স তুলে দেন।ইস্ট লন্ডন মসজিদের চেয়ারম্যান আইয়ুব খান বলেন, এই প্রজেক্টের মাধ্যমে গোটা দেশে ছড়িয়ে থাকা হাফিজদের মধ্যে একটি যোগসুত্র রচনা হবে। একজন আরেকজন সম্পর্কে জানতে পারবেন। আজকের এই রিভিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে হাফিজগনের মধ্যে কুরআন তেলাওয়াতের চর্চা গড়ে ওঠবে। তারা রামাদ্বানের তারাবির নামাজে ইমামতির জন্যও নিজেদের প্রস্তুত করতে পারবেন।উল্লেখ্য, গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি রোববার প্রথমবারের মতো ‘কুরআন রিভিশন দিবস’ অনুষ্ঠিত হয় । ওই সময় ১২০ জন কুরআনে হাফিজ ও ৫০ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেছিলেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি