ব্রিট বাংলা ডেস্ক : এখন থেকে প্রতি বছরই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি) এমপিওভুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। এর ফলে এমপিওভুক্তি নিয়ে আর বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষা করতে হবে না। পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের চাপ এবং তদবিরও কমে আসবে।
এ লক্ষ্যে এমপিওভুক্তির বিদ্যমান নীতিমালা সংশোধনের লক্ষ্যে একটি কমিটি কাজ করছে। কমিটির সুপারিশসহ প্রতিবেদন সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা সাপেক্ষে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
এমপিওভুক্তির খাতে ৪২০ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। এ অর্থ দিয়ে সংশোধিত নীতিমালার আওতায় যাচাই-বাছাই করে চলতি অর্থবছরই আরও যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হতে পারে।
সম্প্রতি বিভিন্ন সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রীকে তাদের নির্বাচনী এলাকায় একটি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য অনুরোধ করেন। তারা বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান ভুলক্রমে এমপিওভুক্ত হয়েছে, সেগুলো বাতিল করে কমিটির সুপারিশক্রমে সংশোধিত নীতিমালার ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘প্রত্যেক বছরই দেশের যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করা হবে। এক্ষেত্রে প্রতি বছরই এমপিওর জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আবেদন জমা দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার প্রতি বছর দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পর্যালোচনা করবে। যোগ্য বিবেচিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিও দেওয়া হবে। একই সঙ্গে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর এমপিও মান ধরে রাখতে না পারলে স্থগিত করা হবে।’
বর্তমানে সারাদেশে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। বছরে প্রতিটি ডিগ্রি কলেজ এমপিওভুক্ত করতে লাগে ৬৯ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে লাগে ৬৮ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা এবং নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লাগে ১৫ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫০ টাকা।
সর্বশেষ গত বছরের ২৩ অক্টোবর টানা সাড়ে ৯ বছর পরে সারাদেশের দুই হাজার ৭৩০টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে সরকারি বেতনের আওতায় আনা হয়। নতুন এই এমপিওভুক্তির কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগে মোট ৮৮১ কোটি টাকা ব্যয় বেড়েছে। এমপিওভুক্ত ২৮ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেতন-ভাতা বাবদ সরকার প্রতি বছর প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা বছরে ব্যয় করে।
এমপিওভুক্তির নীতিমালা-২০১৮-এর ১৪ ধারা অনুযায়ী, চারটি মানদণ্ডে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাচাই করা হয়। এগুলো হলো- প্রতিষ্ঠানের বয়স বা সরকারি স্বীকৃতি (২৫ নম্বর), শিক্ষার্থীর সংখ্যা (২৫ নম্বর), পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা (২৫ নম্বর) এবং পাসের হার (২৫ নম্বর)। কমপক্ষে ৭০ নম্বর পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য বলে সর্বশেষবার বিবেচিত হয়েছে।
প্রতি বছর এমপিওভুক্ত করা প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন সমকালকে বলেন, সম্প্রতি এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রতি বছর এমপিওভুক্ত করা হলে মন্ত্রণালয়ের অনেক চাপ কমবে। এজন্য নীতিমালা সংশোধনের জন্য একটি কমিটি কাজ করছে।
এমপিওভুক্তি প্রতি বছরই
Advertisement