করোনার তাণ্ডবে ঘরবন্দি হয়ে যেতে পারেন বয়স্করা!

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: চীনের উহান থেকেই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। বিশ্বের প্রায় ৯৪টি দেশ ও অঞ্চলে কামড় বসিয়েছে প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা। এক লাখেরও বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত। মৃতের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের কাছাকাছি। করোনার তাণ্ডবে ঘরবন্দি হয়ে যেতে পারেন বয়স্ক নারী-পুরুষরা।

আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ব্রিটিশ বয়স্ক নাগরিকরা ঘর থেকে বের হতে পারবেন না বলে বলা হচ্ছে। বৃটিশ সরকার এই সংক্রান্ত এক নতুন নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে। সেই নির্দেশিকায় দেশটির বয়স্ক নাগরিকদের ঘরবন্দি করে দেওয়ার চিন্ত-ভবনা করছে সরকার। বর্তমানে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা দেশটির প্রতিটি নাগরিকদের বয়স্কদের দিকে বেশি করে খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের সরকারি সূত্র আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বয়স্কদের ‘সামাজিক দূরত্ব’ নীতি মেনে চলতে হতে পারে। আগামী সপ্তাহে এই সংক্রান্ত এমন একটি নির্দেশিকার জারি করতে চলেছে সরকার। বয়স্কদের ঘরে বসে থাকা এবং জনাকীর্ণ অঞ্চলগুলোতে এড়িয়ে চলতে বলা হবে।

যুক্তরাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দু’জন মানুষ মারা গেছেন। বৃটেনের মাটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৪ জন। যে দু’জন মারা গেছেন তাদের সবাই বয়স্ক। আর আক্রান্তদের অধিকাংশই আবার বয়স বেশি।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক নারী মারা গেছেন বৃটেনে। তার বয়সও ৭০ বছরের বেশি। এরপর শুক্রবারে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। এদিক থেকে হিসেব করলে দেশটিতে যারা বয়স্ক তারাই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন।

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের ভয় দিনদিন বাড়ছেই। দেশটির বিজ্ঞানমন্ত্রী আমন্ডা সোলোয় বলেন, বৃটেনের সকল নাগরিকদের উচিত বাড়ির বয়স্কদের প্রতি বিশেষ নজর রাখা। করোনাভাইরাসের কারণে তারা সমাজের অনেকের থেকেই বিচ্ছিন হয়ে যেতে পারেন।

দেশটির চিফ মেডিক্যাল অফিসার প্রফেসর ক্রিস হুইটি বলেন, করোনার সময়ে বয়স্ক নাগরিকদের বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। তাদের উচিত ঘরের ভেতরে থাকা। তবে এখনো এই পরিস্থিতি বৃটিনে সৃষ্টি হয়নি। তাই ধারণা করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহ থেকে ঘরবন্দির নোটিশ আসতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও চীনা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রবীণ ও অসুস্থরা করোনভাইরাসের বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাদেরই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। আর তারাই সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন। যদি হৃদরোগে আক্রান্তরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন তাহলে তাদের মধ্যে ১০ দশমিক পাঁচ শতাংশ মারা যেতে পারেন। তারা আরো জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে নারীদের চেয়ে বেশি মারা যাবেন পুরুষরাই।

এদিকে, ক্রমেই বেড়ে চলে চলেছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও নিহতের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ৯১৪ জন। আর প্রাণহানি ঘটেছে তিন হাজার ৪৬৬ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৬ হাজার ১২৩ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এখনো চিকিৎসাধীন আছেন ৪২ হাজার ৩২৫ জন। এর মধ্যে ছয় হাজার ৪০১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Advertisement