কৃষি উন্নয়নে সুনামগঞ্জে নতুন দ্বার উন্মোচন

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা : হাওর বেষ্টিত জেলা সুনামগঞ্জে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। জেলায় এমন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হওয়ায় কৃষক মনে উচ্ছ¡াস ছড়িয়ে পড়ছে। গণপূর্ত প্রকৌশলী সুত্রে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার একটি কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ হবে যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৩.৫৪ লাখ টাকা। কাজটি পেয়েছেন সুচনা ট্রেডিং নামে একটি প্রতিষ্ঠান। জগন্নাথপুর উপজেলায় কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৩.৫৪ লাখ টাকা। কাজটি পেয়েছেন শিবলী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ধর্মপাশা উপজেলায় কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৩.৫৪ লাখ টাকা। কাজটি পেয়েছেন এনকে নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই তিনটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র একই আদলে হচ্ছে এবং কাজ তিনটি প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে জানা গেছে।

হাওরের কৃষকরা জানান, আমাদের আদি পেশা কৃষি। প্রতিবারেই প্রকৃতির সাথে সংগ্রাম করে ফসল আবাদ করে থাকি। কখনও ফসল ঘরে উঠে, কখনও ফসলহারা হই। এমনকি কোন বছর উৎপাদন খরচ পর্যন্ত উঠে না। এর কারণ হিসেবে প্রকৃতিকে যেমন দায়ী করা হচ্ছে তেমনি কৃষকের আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর প্রশিক্ষণের অভাবে অনেকটা বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে বলে তারা মনে করছেন।

হাওর ঘুরে আরও জানা গেছে, কৃষকরা বাপ দাদার শেখানো পদ্ধতিতেই কৃষি আবাদ করে থাকেন। এখনো লাঙ্গল জোয়াল গরুর সাথে বেঁধে হালচাষ ও কাঁচি হাতে ধান কেটে থাকেন। ইতিমধ্যে দেশে নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন হয়েছে। বিশেষ করে ধান কাটার কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেশিন ও মারাই মেশিনসহ নানাবিধ যন্ত্রপাতি আবিস্কার হলেও এসবের সাথে অনেক কৃষকের পরিচয় না থাকা এমনকি এর কলাকৌশল সম্পর্কে প্রশিক্ষণ না থাকায় কৃষকরা পিছিয়ে আছেন। সরকার সবদিক বিবেচনা করে কৃষিকে বাঁচিয়ে রাখতে কৃষকদের প্রশিক্ষণের কথা বিবেচনা করে এমন প্রশিক্ষণ সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন।

হাওরের কৃষক নেতা ছদরুল ইসলাম জানান, কৃষিকে বাঁচিয়ে রাখতে নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। এতে করে কৃষক সহজেই উৎপাদনমুখী হবে এবং কৃষিতে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সফর উদ্দিন বলেন, সুনামগঞ্জ জেলায় এই প্রথম তিনটি কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। অত্যাধুনিক দ্বিতল এ ভবনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি অফিসসহ কৃষকদের নতুন নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সাথে পরিচয় করে দেবার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এটি নির্মাণ শেষে কৃষক এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিলে লাভবান হবেন।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আল আমিন জানান, সুনামগঞ্জে এই প্রথম তিনটি কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। এটি হাওরাঞ্চলের কৃষকদের জন্য সুখবর। কাজ তিনটি প্রায় শেষ পর্যায়ে। আশাকরি ২/৩ মাসের মধ্যেই ভবনগুলো হস্তান্তর করতে পারব।

Advertisement