কেন বাংলাদেশ এতো ঝুঁকি নিচ্ছে?

ব্রিটবাংলা ডেস্ক : করোনা ভাইরাসের মহামারীতে বড় ঝুঁকি বাড়ছে বাংলাদেশে। একদিকে প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা অন্যদিকে খুলে দেওয়া হয়েছে সব সরকারী আধা সরকারী অফিস আদালত। চালু করা হচ্ছে দেশের গণপরিবহন। এসবে কতোটা সংক্রমন প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং তা কতজনই বা মানবে এবং না মানলে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ রয়েছে। বরং করোনার অজুহাতে গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে! কেন সরকার করোনার দুর্যোগে কর্মজীবি সাধারণ মানুষের পকেট কাটার ব্যবস্থা করে দিল তাও কারো বোধগম্য হচ্ছে না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেটের তাগিদে মানুষ যখন ঘর থেকে বের হবে তখন সরকারের উচিত ছিল তাদের বাস এবং ট্রেন ভাড়া না বাড়িয়ে করোনাকালিন সময়ে অন্তত অর্ধেকে নামিয়ে আনা। বাংলাদেশ সরকার করেছে তার উল্টো। কিন্তু কেন এবং কার স্বার্থে বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশের মানুষকে এতো ঝুঁকিতে ফেলছেন এবং নিজেই বা কেন এতো ঝুঁকি নিচ্ছেন?

যে সময়টাতে বাংলাদেশ লকডাউনে থাকার কথা সেই পিক সময়টাতে বাংলাদেশ করোনাকে ডোন্ট কেয়ার ভাব দেখাচ্ছে। দেশকে এবং দেশের মানুষকে এর কত মুল্য পরিশোধ করতে হবে বা কি পরিনাম ভুগ করতে হবে তা সবার ধারণার বাইরে।

একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু এবং শনাক্ত

করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মারা গেছেন ৪০ জন। আর গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ৫৪৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।এ পর্যন্ত মোট মারা গেলেন ৬৫০ জন।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এমন তথ্য জানানো হয়। নতুন করে মারা যাওয়া ৪০ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৩ জন ও নারী ৭ জন।সব মিলে দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন মোট ৪৭ হাজার ১৫৩ জন।

এর আগে বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় সংক্রমিত ১ হাজার ৭৬৪ জন শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। মারা গিয়েছিলেন ২৮ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪০৬ জন।এ নিয়ে সর্বমোট ৯ হাজার ৭৮১ জন সুস্থ হয়েছেন।

ব্রিফিংয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৮৭৬ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়।গতকাল ৯ হাজার ৯৯৭ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩ লাখ ৮ হাজার ৯৪০টি নমুনা।

দেশে এখন ৫২টি ল্যাবে (পরীক্ষাগার) করোনা পরীক্ষা করা হয়। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্তের ঘোষণা আসে। আর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

করোনার ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মানায় জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, লকডাউন উঠে গেছে।এখন সবাইকে সাবধান থাকতে হবে।ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে, করোনা প্রতিরোধে যা সবাইকে মেনে চলতে হবে।মাস্ক পড়া অত্যাবশ্যক।

চালু হচ্ছে গণ পরিবহন 

অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে পহেলা জুন থেকে বাংলাদেশে বাস চলাচল শুরু হচ্ছে। এ সময় ভাড়া আশি শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি। যদিও শেষ পর্যন্ত ষাট শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এদিকে রোববার থেকে আট জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল এবং ৩ জুন থেকে আরো ১১ জোড়া ট্রেন যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন/ রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। সব ট্রেনের টিকেট অনলাইনে এবং যাত্রার পাঁচদিন আগে টিকেট কেনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ট্রেনে এবং বাসে বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
সরকারী ছুটি
এদিকে সরকারী ছুটি আর না বাড়ানোয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাংলাদেশে রোববার থেকে খুলেছে সরকারী ও বেসরকারী সব অফিস আদালত। কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার দিতে গণ পরিবহন চালু না হওয়ায় বিকল্প পথে রাজধানী ঢাকায় ফিরছে কর্মজীবিরা। সামাজিক দূরত্ব উপেক্ষা করে পায়ে হেঁটে এবং ছোট ছোট যানবাহনে ছড়ে যে, যেভাবে পারছেন ঢাকায় ফিরছেন।

Advertisement