গাজীপুরের কালিয়াকৈরে জমে উঠেছে কোরবানি পশুর হাট

আর মাত্র দুদিন বাদেই পবিত্র ঈদুল আজহা। আর আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করেই গাজীপুরের কালিয়াকৈরে কাঞ্চনপুর (চেয়ারম্যান বাড়ি) এলাকায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট।এবার মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে দাম থাকায় ক্রেতা ও বিক্রেতারা উভয়ই স্বাচ্ছন্দে পশু কেনাবেচা করছেন। খামারি, বেপারি ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত গৃহস্থরা আশানুরূপ মূল্য পাচ্ছেন বলে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। এ হাটে ছোট আকারের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা। মাঝারি সাইজের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৮৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আর বড় সাইজের গরু ২ লাখ থেকে শুরু করে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম চাওয়া হচ্ছে। এখানে বিদেশি জাতের বা বড় ধরনের তেমন কোন গরুর দেখা পাওয়া যায়নি।কোরবানির পশুর হাটের মধ্যে কালিয়াকৈরে তিনটি মাত্র বড় হাট বসে। তারমধ্যে কাঞ্চনপুর, জামালপুর চৌরাস্তা ও বেনুপুরের হাট। এছাড়াও কোরবানি উপলক্ষে অস্থায়ীভাবে আরও কয়েকটি হাট বসেছে এই উপজেলায়। কাঞ্চনপুরের হাটটি বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত চলবে। আর বেনুপুরের হাট বসে প্রতি রোববার।
সরজমিনে কাঞ্চনপুর (চেয়ারম্যান বাড়ি) পশুর হাটে গিয়ে দেখা গেল, দিনের প্রথম ভাগে পশু বেচাকেনা কম হলেও দুপুরের পর থেকে ব্যাপক আকারে গরু-ছাগল বিক্রি শুরু হয়েছে। মাঝারি সাইজের গরুর প্রতি ক্রেতাদের ঝোঁক থাকায় এই গরুগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে।পশুর পাশাপাশি এ হাটে কোররবানির গরুর গোস্ত কাটার জন্য গাছের কান্ড দিয়ে গুড়ি বানিয়ে বিক্রি করতে দেখা গেছে।টাঙ্গাইলের নাগরপুর হতে আগত এক বেপারি বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর গরু লালন পালন খরচ অনেক বেশি আবার তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন খরচটাও বাড়তি। তারপরও দুটি গরু বিক্রি করে আমি মুনাফা পেয়েছি। এবার তুলনামূলকভাবে দাম ঠিক আছে।টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার হতে আগত সোহেল নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, আমি চারটি গরু নিয়ে এসেছিলাম সেখান থেকে তিনটি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। তিনটি গরু বিক্রি করে আমার মোটামুটি ভালোই লাভ হয়েছে এতে আমি খুব খুশি।
আতোয়ার নামের এক ক্রেতা বলেন, তুলনামূলকভাবে গরুর দাম স্বাভাবিক আছে। যার যার সাধ্যমত এবার গরু কিনতে পারবে। এই হাটের পরিবেশ ও ব্যবস্থা খুব ভালো হয়েছে।

হাসেম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, আমি ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছি। আমার কাছে মনে হচ্ছে দাম অনুযায়ী গরু ঠিক আছে। এবার গরুর দাম খুব বেশিও না আবার কমও না, স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে।
কালিয়াকৈর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে জানা যায়, উপজেলায় বিভিন্ন পশুর হাট ছাড়াও ছোট-বড় মিলিয়ে আরো প্রায় ৩০টি খামার রয়েছে। উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাটে চারজন ভেটেনারি ফিল্ড সুপারভাইজার মাঠকর্মী হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন।কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকবর আলী খানকে হাট মনিটরিং করতে দেখা গেছে। ক্রেতা বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন ও থানার কর্মকর্তাগণসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন। এমনকি কোন পরিবহনের চাঁদা বা উক্ত হাটে এখন পর্যন্ত জাল টাকার নোট কোন ঘটনাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। মোটামুটি ভাবে স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে।সাজ্জাদ বলেন, ঐতিহ্যবাহী কাঞ্চনপুর পশুর হাটে যথেষ্ট পরিমাণে ক্রেতা বিক্রেতা সমাগম রয়েছে এবং পশু পর্যাপ্ত পরিমাণে দেখা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত দামটাও সহণীয় পর্যায়ে আছে। আমরা বাজার মনিটরিং করছি এবং আগত ক্রেতা বিক্রেতাদের নিরাপত্তা প্রদানে সচেষ্ট রয়েছি।

Advertisement