ডিবি কার্যালয়ে গয়েশ্বরকে হারুনের আপ্যায়ন

পুরান ঢাকার ধোলাইখালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনার মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। বিএনপির এ জ্যৈষ্ঠ নেতাকে পরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খেয়েছেন গয়েশ্বর। সেই ছবি ও ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।রেজওয়ান ইসলাম নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আঁতাত এবং আন্দোলন একসাথে চলে না…! বাবু গয়েশ্বর রায়কে কি আপ্যায়নটাই না করল হারুন ভাই! বিষয়টা একদমই ক্লিয়ার, রাজনৈতিক কারণে অতি উৎসাহী না হয়ে নিজেকে ভালোবাসি, নিজের পরিবারকে ভালোবাসি’।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর হাসিমুখে ডিবি প্রধানের সঙ্গে বিভিন্ন পদের খাবার খাচ্ছেন। ডিবি প্রধান তার অতিথির পাতে খাবার তুলে দিচ্ছেন। খাবারের তালিকায় খাসি ও মুরগির মাংস, একাধিক মাছের তরকারি, রোস্ট ও সবজি এবং মৌসুমি ফলের মধ্যে আম, মালটা, আঙুর ও ড্রাগন ফল দেখা যায়।খাবার শেষে ডিবির একটি সাদা গাড়িতে করে গয়েশ্বরকে বিএনপি কার্যালয়ে পৌঁছে দেন ডিবির সদস্যরা।এর আগে শনিবার (২৯ জুলাই) বিকেলে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা যখন পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছিল তখন ধাওয়া খেয়ে রাস্তায় পড়ে যান বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। পরে তাকে সেভ করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।

মোহাম্মদ হারুন আরও বলেন, ‘আমরা আগে থেকে আঁচ করেছিলাম যে, তারা কোনো একসময় অরাজকতা সৃষ্টি করবে। তারা প্রতিবারই প্রোগ্রাম করার আগে অনুমতি গ্রহণ করে। তাদের অনুমতি দেওয়াও হয়। এরপর নৈরাজ্য চালায়। আজ ঢাকার চারপাশ বন্ধ করে তারা যে বসে পড়ার কর্মসূচি নিয়েছিল, তার কোনো অনুমতি নেই বলে মিডিয়ার মাধ্যমে জানিয়েছিলেন ডিএমপি কমিশনার।’‘তারা অনুমতি না পেয়েও পুলিশের গায়ে আঘাত করেছে, আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে, গাড়িতে আগুন দিয়েছে। অবশ্য আমাদের কাছে আগে থেকে এমন একটা গোয়েন্দা তথ্য ছিল। সে কারণে আমরাও পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করে রেখেছিলাম। এর মধ্যেও তারা ইটপাটকেল ছুড়ে পুলিশকে আহত করেছে’, যোগ করেন ডিবি প্রধান।তিনি আরও বলেন, এ পরিস্থিতিতে আমরা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে সেফ করার জন্য ডিবিতে নিয়ে আসি। তিনি নেতাকর্মীদের হামলার মধ্যে পড়েছিলেন। নেতাকর্মীরা ঢিল মারছিল। আমরা তাকে সেফ করে নিয়ে আসার পর এখন আবার আমাদের গাড়িতেই বাসায় পৌঁছে দিচ্ছি। তারা আজ ন্যক্কারজনক কাজ ঘটিয়েছেন।হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা যখন শুনলাম সমাবেশ ঘোষণা করেছে, তখন থেকে আমাদের ডিএমপি কমিশনারের কাছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শান্তি সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। বিএনপি অনুমতি চায়নি। তাই, ঢাকার চারপাশের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য ডিএমপি কমিশনার ১৪৪ ধারা জারি করেছিলেন। তারপরও তারা রাস্তায় বসার নামে পুলিশের গায়ে আঘাত করেছে। আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে, আগুন দিয়েছে।তিনি আরও বলেন, তারা (বিএনপি) আজকে ন্যক্কারজনক কাজ ঘটিয়েছে। ১৪৪ ধারা বলার পরও তা ভঙ্গ করে তারা এই অরাজকত চালিয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হবে। যারা পরিকল্পিতভাবে ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।এর আগে, গয়েশ্বরকে হেফাজতে নেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন লালবাগ বিভাগের ডিসি জাফর হোসেন। শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি জানান, এখানে সমাবেশ করার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। মহানগরের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আমরা সকাল থেকে তৎপর আছি। তারা বিভিন্ন গলিতে এসে জড়ো হয়ে তৎপরতা শুরু করে।

Advertisement