দু:খের মাঝে সুখের খবর : যুক্তরাজ্যে মানব দেহে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ হচ্ছে

              :: মো: রেজাউল করিম মৃধা ::

বর্তমান বিশ্ব করোনাভাইরস মহামারিতে আক্রান্ত।
এই মহামারি থেকে বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেস্টা প্রতিটি মানুষের। করোনাভাইরসের চিকিৎসার জন্য কোন সুনির্দিষ্ট ঔষধ বা কনো ভ্যাকসিন না থাকায় বিনা চিকিৎসায় প্রাণ দিয়েছেন কতো হাজার লোক তা আমাদের সবার জানা।প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলে যাচ্ছেন পৃথিবী ছেড়ে। শত চেস্টা করেও বাঁচানো যাচ্ছে না। চোখের সামনে চলে যাচ্ছেন তারা। আবার নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে। এই মাহামারিতে সেবা দিতে গিয়ে ডাক্তার এবং নার্সরা মারা যাচ্ছেন।বিশ্ব শুধু বিষ্ময়করভাবে তাকিয়ে থাকে নিরুপায় হয়ে। সেই নিরুপায় থেকে আশার আলো হল এই ভ্যাকসিন আবিস্কার ।
এই করোনাভাইরস মহামারি থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা ঔষধ বা ভ্যাকসিন আবিস্কারের জন্য যথাসাধ্য চেস্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু এখনো আলোর মুখ দেখেনি। অনেক দেশে ভ্যাকসিন আবিস্কার করে সরাসরি মানব দেহে প্রয়োগ করেনি কিন্তু যুক্তরাজ্যে
ভ্যাকসিন আবিস্কারের পর বৃহস্পতিবার থেকে মানবদেহে প্রয়োগ শুরু হচ্ছে।
ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের তৈরি করা করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন মানবেদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ হেলথ সেক্রেটারী ম্যাট হ্যানকক।

তিনি জানান, বিশ্বে প্রথম অক্সফোর্ড বিজ্ঞানীদের করোনার এই ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টায় সব ধরনের সহায়তা করেছে ব্রিটিশ সরকার। ভ্যাকসিন তৈরির এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য ব্রিটিশ সরকার বিজ্ঞানীদেরকে অতিরিক্ত ২০ মিলিয়ন পাউন্ড দেবে।
সিএইচএডিওএক্স১ এনকোভ-১৯ নামের এই ভ্যাকসিনটি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের যৌথ প্রচেষ্টায় মানবদেহে প্রয়োগ করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের তৈরি এটিই প্রথম ভ্যাকসিন; যা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হচ্ছে।
ম্যাট হ্যানকক বলেন, তারা (বিজ্ঞানীরা) এই প্রকল্পটির ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দ্রুত অগ্রগতি সাধন করছেন। তিনি বলেন, করোনার ভ্যাকসিনের গবেষণায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে ব্রিটেন সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করছে।
করোনাভাইরসের ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগে সুফল বয়ে আনবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
যেখানে যুক্তরাজ্যে প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে নতুন রোগী। কখনো বা হাজারের কাছে। যখন দিশাহীন আমরা সবাই , তখন এধরনের আবিস্কারের খবর আশার আলো দেখায়। ভরসা পায় বেঁচে থাকার। এই ভ্যাকসিন কার্যকর হলে বৃটেন সহ সারা বিশ্বের মানুষ উপকৃত হবেন। অন্তত বিনা চিকিৎসায় কেউ মারা যাবেন না।
জন্ম গ্রহন করলে মৃত্যু বরণ করিতে হবে। এই চিরন্তন কথাটি আমরা সবাই জানি। তারপরও এই সুন্দর পৃথিবী বেঁচে থাকতে চাই। কবি বলেন ”মরিতে চাহিনা এই সুন্দর ভূবনে।” করোনাভাইরস মহামারি থেকে বেঁচে থাকার সর্বশেষ চেস্টা আমাদের অব্যাহত থাকে। এই ভ্যাকসিন আবিস্কার দু:খের মাঝেও সুখের খবর নিয়ে এলো। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন।
বৃটিশ বিজ্ঞানীদের প্রতি রইলো অসংখ্য অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা এবং কৃতজ্ঞতা।
বৃহস্পতিবার হচ্ছে বৃটেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। একই দিনে বৃটেনে স্থানীয় এবং জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সেই সাথে এন এইচ এসকে অভিনন্দন সহ বড় বড় ও মহত কাজের শুরু হয় বৃহস্পতিবার । সেই গুরুত্বপূর্ণ দিন বৃহস্পতিবারে আরো একটি অবিস্মরণীয় কাজ শুরু হচ্ছে। আশাকরি করোনাভাইরস মহামারি রোধে এই ভ্যাকসিনও কার্যকরি হবে।

Advertisement