‘উন্নয়ন’ আর ‘বহিরাগত’ ইস্যুতে পরস্পরের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের মধ্যে রোববার দেখা হলো সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর।সাক্ষাতে দুজনই ছিলেন হাস্যোজ্জ্বল। পরস্পরের কুশল বিনিময়ও করেন তারা। তবে মিনিটখানেকের এই সাক্ষাতে তেমন কোন আলাপ হয়নি। রোববার বিকেলে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে তারা পরস্পরের দেখা পান।নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে ইভিএমে। ২৩ মে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই ও প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে প্রতীক বরাদ্দ হবে ২ জুন।সিলেটে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচনে না এলেও দলটির মনোনয়নে টানা দুবার মেয়র হওয়া আরিফুল হক চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন বলে নগরে গুঞ্জন আছে।
আরিফের মেয়াদকালে সিলেটের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনামূখর আনোয়ারুজ্জামান। আরিফের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগও তুলেছেন তিনি। অপরদিকে দুজনই একে অপরকে নগরে ‘বহিরাগত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এনিয়ে তাদের দুজনের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতি বিকেলে দুই নেতার সাক্ষাত হয়।আনোয়ারুজ্জামান ও আরিফুল হকের ঘনিষ্ঠজনেরা জানান, বিকেল চারটায় নগরের দরগাহ গেট এলাকায় কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সোলেমান হলে প্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী ও লেখক আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সম্মিলিত নাগরিক উদ্যোগ’- ব্যানারে স্মরণসভার আয়োজন করা হয় সেখানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।স্মরণসভায় বক্তব্য দেওয়ার পর বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে মিলনায়তন থেকে বের হন আরিফুল হক চৌধুরী। তখন ওই সভায় যোগ দিতে মিলনায়তনে ঢুকছিলেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। সিঁড়িতে তাঁদের দেখা হয়। দেখামাত্রই আনোয়ারুজ্জামান ‘বড় ভাই’ বলে আরিফুলকে জড়িয়ে ধরতে যান। এ সময় আরিফুলও তাকে জড়িয়ে ধরেন। এরপর দুজনে কোলাকুলি করলেও তাদের মধ্যে কোনো বাক্যবিনিময় হয়নি।আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্মরণসভা আয়োজনকারী সংগঠন সম্মিলিত নাগরিক উদ্যোগের সদস্যসচিব, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আহমেদ নূর বলেন, সিলেট রাজনৈতিক সম্প্রীতির অঞ্চল হিসেবেই সুপরিচিত। মত-পথের ভিন্নতা থাকলেও এখানকার রাজনীতিবিদদের মধ্যে সব সময় সম্প্রীতি বজায় থাকে। আরিফুল ও আনোয়ারুজ্জামানের একে অন্যকে জড়িয়ে ধরার বিষয়টিও এরই ধারাবাহিকতা।