প্যারিসে পিপলস  ট্রাইব্যুনাল ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

আনসার আহমেদ উল্লাহ: গত ১২ ডিসেম্বর প্যারিস জলবায়ু চুক্তির ২ বছর পূর্তি হলো। এ উপলক্ষে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যক্রনের আমন্ত্রণে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের প্রতিজ্ঞা পুনব্যক্ত করতে সমবেত হয়েছেন।

এবারের সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলি লক্ষ্য হলো, ২০১৫ সালে প্যারিসের জলবায়ু সম্মেলনের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন এবং প্রয়োজনীয় অর্থায়ন তরান্বিত করা এবং চুক্তির অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত হওয়া। বাংলাদেশের প্রধাণমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এতে অংশ নিয়েছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ কার্বন নিঃসরণ কমানোর অঙ্গীকার করলেও বাস্তবিক পক্ষে জলবায়ুর জন্য হুমকিস্বরূপ জীবাশ্ম জ্বালানী নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যহত রেখেছে।

বাংলাদেশ ২০৪১ সাল নাগাদ  মোট জ্বালানীর ৩৫ শতাংশ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে, যা প্যারিস জলবায়ু চুক্তির সাথে সাংঘর্ষিক।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশও এরকম দ্বিমুখী জ্বালানী পরিকল্পনা করেছে। সেকারনে গত ১০ ডিসেম্বর পরিবেশ সতেচন বিভিন্ন সংগঠন প্যারিসে জলবায়ুর পরিবর্তন শীর্ষক গণশুনানি (Peoples Tribunal) আয়োজন করে।

জাতীয় কমিটি ফ্রান্স শাখার পক্ষ থেকে এই ট্রাইবুন্যালে অংশ নেয়া হয় এবং সুন্দরবনের উপর রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রভাব নিয়ে প্রতিনিধিরা আলোচনা করেন। সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করতে পারে, এমন সকল তৎপরতা বন্ধ করার দাবি পুনব্যক্ত করা হয়।

রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করতে ফ্রান্সের এবং বিশ্বের পরিবেশ আন্দোলনকারীদের সহযোগিতা চাওয়া হয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম, জুয়েল দাশ রায় লেনিন, নিলয় সূত্রধর সুমন ও সারদা মনি রায় ছন্দা। 350 France, Tour Alternatiba, Les Amis de Terre France, ANV Action non-violent COP21, Attac France, Biyi Mugi, Le CRID, Oxfam France Le Refedd, ZEA, La Foundation pour la Nature et l`Homme সহ ইউরোপের অনেকগুলো সংগঠনের প্রতিনিধিরা এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।

প্রোগ্রামের ধারাবাহিকতায় আজ  ১২ ডিসেম্বর সকালে আন্দোলনকারীরা এক সমাবেশের আয়োজন করে।

এতে কয়লার রূপক অর্থে কালো চাদর দিয়ে পৃথিবীকে প্রথমে ঢেকে ফেলা হয়, এরপর প্রতিবাদী জনতা সে চাদর ছিন্নভিন্ন করে মুক্ত বাতাসে বের হয়ে আসে এবং মুক্তির গান গেয়ে ও শ্লোগান দিয়ে বিশ্বকে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে বলে।

এই আয়োজনে প্রায় হাজারখানকি মানুষ অংশ নয়ে। বাংলাদেশ তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ- বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ফ্রান্স শাখা এই প্রতিবাদ কর্মসূচির সাথে একাত্মতা জানায়। জাতীয় কমিটি ফ্রান্স শাখার পক্ষ থেকে উপস্থতি ছিলেন আহ্বায়ক ফাহাদ রিপন, সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম, সদস্য আহাম্মেদ আলী দুলাল, তপু বড়ুয়া ও ইয়াসমিন আক্তার সহ অনেকে।

এসময় জাতীয় কমিটির নেতৃবন্দ বাংলাদেশের সুন্দরবন নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। আজকের আয়োজনে ইউরোপের পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর পক্ষে সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন Clemens Dubois, Brett Fleishman, Victoire Guillonneau এবং আরো অনেকে।

গত এক সপ্তাহ ধরে নানা প্রস্তুতি এবং রিহার্সালের মধ্যে দিয়ে এই আয়োজন সফল করা হয়।

Advertisement