ব্যারিস্টার আবুল কালাম চৌধুরী
সারা দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে ১৩ দিনে নিহত ১২২ জনের মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হক একজন, যিনি গত ২৬ মে রাতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন বলে র্যাবের ভাষ্য।
নিহত ১২২ জনের মধ্যে ১২১ জনের পক্ষে মাদক চোরাচালানিতে জড়িত ছিলেননা এরকম কোন অভিযোগ না থাকলেও এই একজনের বেলায় ঘটেছে এর ব্যতিক্রম। নিহত একরামের পরিবার, স্থানীয় রাজনৈতিক মহল এবং সর্বোপরি তার নিজ সংগঠন স্থানীয় আওয়ামীলীগ এটিকে সহজ ভাবে নেয়নি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ভাবে প্রতিবাদ অব্যাহত আছে।
সম্প্রতি একরামের স্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে একটি অডিও প্রকাশ করেন। যা খুবই লোমহর্ষক, হৃদয় বিদারক এবং মর্মস্পর্শী।
একরামুলের স্ত্রীর কথোপোকথন শুনার সাহস ৬ মিনিটের বেশি হয়নি। আমি মনে করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাদক বিরুধী অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ব করতে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা একটি চক্র যারা এই মাদকের সাথে সরাসরি জড়িত তারা পরিকল্পিত ভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। তারা একঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করেছে:
১. এই হত্যা দিয়ে মাদক বিরোধী অভিযানের বিরুদ্বে জনরোষ তৈরী করা;
২. জনরোষ তৈরী করে অভিযান বন্ধ করে তাদের নিজেদের সাম্রাজ্য রক্ষা করা;
৩. রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা;
আমি এই ঘটনার সাথে নারায়ণগঞ্জের ৭ মার্ডারের সাথে সুস্পষ্ট সম্পর্ক খুঁজে পাই। ঠিক একই কায়দায় নারায়ণগঞ্জের ঘটনাটি ঘটানো হয়েছিলো।
চট্টগ্রামের স্থানীয় আওয়ামীলীগের সন্দেহ একরাম প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার। আর তাই স্বভাবিকভাবে ঘটনার তীর প্রতিপক্ষ এমপি বদির দিকে হলেও তিনি বর্তমানে সৌদিআরবে বিনাবাধায় ওমরাহ পালনে চলেযেতে পারলেন।
যদি এই ঘটনা পেছনে এমপি বদির যদি হাত থেকে থাকে তাহলে এই অভিযুক্ত কিভাবে বিদেশে গেলেন। আর এই এক ব্যক্তির জন্য গোটা প্রশাসন, সরকার কিংবা আওয়ামীলীগ কেন বধির হলেন? এই বদি সাহেব কি এতোই মহামূল্যবান?
আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই শত প্রতিকূলতার মধ্যে ও দেশ ও জাতির স্বার্থে অভিযান অব্যাহত রাখার সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি আশ্বস্ত করেছেন নিরপরাধ মানুষ হত্যার বিচার করবেন। আমি চলমান এই অভিযানের বিরুদ্বে নই। তবে প্রশাসন, দল এবং সরকারে ঘাপটি মেরে থাকা এই অঘটন ঘটানোর নায়কদের লাঘাম টেনে না ধরতে পারলে সরকারের সকল ভালো কাজ প্রশ্নবিদ্ব হবে এবং সকল অর্জন বিসর্জন হবে।
তাই আমি একরাম হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
লেখক: ব্যরিস্টার আবুল কালাম চৌধুরী,
তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ,
সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সহসভাপতি দি সোসাইটি অব ব্রিটিশ- বাংলাদেশী সলিসিটিরস,
প্রিন্সিপাল কেসি সলিসিটর্স