বঙ্গবন্ধুর কারণে শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে বাংলাদেশ জাতি সংঘের সদস্য লাভ করে-পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের দিন গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক স্মৃতিচারণমূলক ভার্চুয়াল সভার আয়োজন করে যুক্তরাজ আওয়ামীলীগ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান শরীফ। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ আব্দুল মোমেন এমপি। প্রধান বক্তা ছিলেন প্রবীণ আওয়ামিলীগ নেতা সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ আব্দুল মোমেন বলেন, সেদিন রাজনৈতিক এবং বিশ্ব পরিস্থিতির আলোকে চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সদস্যলাভে বিরোধীতা করেছিলো। যদিও ১৬ ডিসেম্বরের পরে মার্কিনীরা বাংলাদেশের বিরোধীতা আর করেনি কিন্তু তৎকালিন ইউএসএসআর এবং ভারতের সমর্থন অব্যাহত থাকে সদস্যপদ লাভে। ১১ তারিখের ভোটাভুটিতে ভারত, রাশিয়া ইউকে যুগোশ্লাভিয়া আর্জেন্টিনা সহ অন্যদের সমর্থন লাভ করে। ১১ তারিখের পরে পাকিস্তানের সিমলা চুক্তির ইস্যুতে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের বিরোধীতার বিপরীতে সেদিন পরের দিনই সেদিনকার ওয়াশিংটনে বাংলাদেশে চার্জ দ্য এফেয়ার্স আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতিসংঘে আর্গুম্যান্টস সহকারে নিজের যুক্তির স্বপক্ষে পাকিস্তানের ফেইলুরের বহু প্রমাণ সহকারে তুলে ধরে চিঠি দেন।
এ সময় ডঃ মোমেন বলেন, ৯ আগস্ট চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু যখন লন্ডনে তখন সিকিউরিটি কাউন্সিলের চেয়ার বেলজিয়াম এম্বাসাডর সহ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথ বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করে সদস্যপদ লাভের আবেদন না করার পরামর্শ দিলে বঙ্গবন্ধু তাদের জানিয়ে দেন, গতকালই (৮ আগস্ট) জাতিসংঘের সদস্যলাভের জন্য আবেদন সাবমিট করেছি।
তিনি বলেন, শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে আজকের দিনে আমরা সদস্যপদ লাভ করি। এসময় তিনি বলেন, আমাদের মত করে প্যালেস্টাইনও একই পদ্ধতিতে সদস্যপদ লাভ করতে চেষ্টা করছে। বঙ্গবন্ধুর সফরের পর পরই অবশ্য পাকিস্তান চায়নার অবস্থান অনেক পরিবর্তন হতে শুরু করে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কারণেই বাংলাদেশ প্রতিকূলতা কাঠিয়ে জাতি সংঘের সদস্য লাভ করে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর কোন দেশই বাংলাদেশের মত এত কষ্ট ও কাঠখড় পোড়াতে হয়নি সদস্যপদ লাভের জন্য। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর (৩১ আগস্ট ১৯৭৫) চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের জানান, শীগ্রই সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট চালু হচ্ছে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আজকের এই দিনে জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করার সংবাদ শুনে বঙ্গবন্ধু আনন্দে বলে উঠেছিলেন, বাংলাদেশ তার ন্যায্য অধিকার লাভ করেছে। ১৭ সেপ্টেম্বরকে তিনি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে উল্লেখ করেন।
বঙ্গবন্ধুর সাথে তার জীবনের নানা ঘটনার স্মৃতিচারণ করে বলেন, জাতির জনকের কাছে থেকে মনে হয়েছে, এ দিনটির জন্যেই তার জন্ম হয়েছিল।
কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতির স্মৃতিচারণ করে তোফায়েল বলেন, জাতির জনক বলেছিলেন রিক্ত আমি নিঃস্ব আমি দেয়ার কিছু নেই, আছে শুধু ভালোবাসা।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রী এবং প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতারা বলেন, এই তথ্যগুলো যেন ডকুম্যান্টস আকারে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হয়।

Advertisement