বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং প্রতিষ্ঠার ৩৭ বছর উদযাপন করল ব্রিটিশ চ্যারিটি সংস্থা আপাসেন

বিশাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং নিজের গৌরবময় পথ চলার ৩৭ বছর পূর্তি উদযাপন করল ব্রিটেনে বাঙালিদের পরিচালনাধীন আন্তর্জাতিক চ্যারিটি সংস্থা আপাসেন।

গত ৫ ডিসেম্বর, রবিবার পূর্ব লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির পিপলস প্যালেস গ্রেট হলে নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এতে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিবিসির কিংবদন্তি সাংবাদিক স্যার মার্ক টালি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে মিশে থাকা নাম মার্ক টালি ছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রিন্স চালর্স ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন আপাসেনের প্রধান নির্বাহী মাহমুদ হাসান এমবিই। স্বাগত বক্তব্যে আপাসেনের সূচনালগ্ন থেকে আজ অবধি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সাথে সংগঠটির নিবিড় সংযোগের কথা তুলে ধরেন তিনি।

আপাসেনের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান বুলবুল হাসান ও কাউন্সিলর সৈয়দা সায়মা আহমেদের সঞ্চালনায় পরিচালিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিষয়ক অল পার্টি পার্লামেন্টারী গ্ৰুপের চেয়ারম্যান রুশনারা আলী এমপি, আপসানা বেগম এমপি, যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম এবং টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিলেতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদেরকে আপাসেনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়। বিলেতের প্রথিতযশা শিল্পীদের অংশগ্রহণে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন জাগরণের গান দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব। সাড়ে তিন ঘন্টার অনুষ্ঠানের পুরোটা জুড়েই ছিল লোক ও আধুনিক নৃত্য, কবিতাপাঠ এবং মুক্তিযুদ্ধ ও আপাসেনের কার্যক্রম নিয়ে প্রামাণ্যচিত্রের ব্যতিক্রমী পরিবেশনা। পুরো অনুষ্ঠানে মঞ্চে স্থাপিত বিশালায়তন পর্দা জুড়ে ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকা বাংলাদেশের প্রকৃতি ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভিডিওচিত্রের আসা যাওয়া দর্শকদের নজর কাড়ে। সাংস্কৃতিক আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান ছাড়াও চিরায়ত লোকসঙ্গীত, ব্যান্ড, চলচ্চিত্রের গান এবং আধুনিক বাংলাদেশের বিভিন্ন দশকের জনপ্রিয় সব পরিবেশনা। মঞ্চে শুরু হওয়া মূল অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে চলতে থাকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, যুক্তরাজ্যে ১৯৭১ সালের কার্যক্রম ও আপাসেনের ৩৭ বছরের পথচলা নিয়ে স্থিরচিত্র প্রদর্শনী। সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের সমাপ্তি ঘটে আপাসেন বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান আমীর হোসেনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। এ সময় ট্রাস্টির সদস্যদেরকে উৎসব মঞ্চে আমন্ত্রণ জানিয়ে দর্শকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে আপাসেনের উদ্যোগে একটি স্মারক প্রকাশনাও বের করা হয়।

Advertisement