চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখ্যযোগ্যভাবে বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনার থাবায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার লোকের। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছয় লাখ ৮৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
সর্বশেষ এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। অপর দিকে দৈনিক মৃত্যুতে এখনো শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২১ কোটির ঘর ছাড়িয়েছে। অন্য দিকে এতে প্রাণ হারানোদের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৪৪ লাখ চার হাজার ছাড়িয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গেল ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বব্যাপী করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১০ হাজার ৪০৩ জন রোগী। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় আক্রান্তদের মৃত্যু বেড়েছে পাঁচ শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪৪ লাখ চার হাজার ২৩৬ জনে পৌঁছেছে।এছাড়া নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ছয় লাখ ৮৮ হাজার ৭৭৫ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৫ হাজারের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসে শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২১ কোটি ৫৫ হাজার ৭৫১ জনে দাঁড়িয়েছে।
গেল এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৫৮ হাজার ১২৭ জন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ৫৫ জন। করোনার থাবায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত তিন কোটি ৮০ লাখ ৭২ হাজার ৬৫৬ জন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ছয় লাখ ৪১ হাজার ৩৪৬ জন রোগী।অপর দিকে শেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনার থাবায় মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ১২৮ জন রোগী। আর নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ১৫ হাজার ৭৬৮ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৯ লাখ আট হাজার ২৪৭ জন। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ১৪১ জন রোগীর।এ দিকে করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনার ভয়াল থাবায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৪৪ জন। আর নতুন করে প্রাণঘাতী করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪০ হাজার ৬৯৩ জন। ভিন্ন দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৮৯৭ জনে পৌঁছেছে। আর মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৭১ হাজার ৬৬২ জন রোগীর।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখনো তৃতীয়। গেল ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনার থাবায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫১১ জন। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩৫ হাজার ৭৯৭ জন। এতে দেশটিতে মোট শনাক্ত তিন কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার ৮৯৮ জন ছাড়িয়েছে। আর মৃত্যুবরণকারীদের সংখ্যা চার লাখ ৩৩ হাজার ৬৩ জনে দাঁড়িয়েছে।গত এক দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৮৩ জন। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৯ হাজার ১৭৪ জন। প্রাণঘাতী ভাইরাসটি থাবা বসানোর শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৫ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৭ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৯ হাজার ৬৯১ জন।
এছাড়া ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত ৬৫ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৩ জন, রাশিয়ায় ৬৬ লাখ ৬৩ হাজার ৪৭৩ জন, আর যুক্তরাজ্যে ৬৩ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮৭ জন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে ৪৪ লাখ ৫৬ হাজার ৭৬৫ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৬১ লাখ ৩৮ হাজার ৪৫২ জন, আর ৪৭ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫৮ জন স্পেনে, এছাড়া ৩৮ লাখ ৪৬ হাজার ১৮৬ জন জার্মানিতে এবং ৩১ লাখ ২৩ হাজার ২৫২ জন মেক্সিকোতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।অপর দিকে করোনার ভয়াল থাবায় এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১২ হাজার ৯৭৬ জন, আর রাশিয়ায় এক লাখ ৭২ হাজার ৯০৯ জন, এছাড়া এক লাখ ৩১ হাজার ২৬০ জন যুক্তরাজ্যে, ইউরোপের দেশ ইতালিতে এক লাখ ২৮ হাজার ৫৭৯ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৫৩ হাজার ৬৭৫ জন, এছাড়া ৮২ হাজার ৮৮৩ জন স্পেনে, জার্মানিতে ৯২ হাজার ৪২৮ জন এবং দুই লাখ ৪৯ হাজার ৫২৯ জন মেক্সিকোতে মৃত্যুবরণ করেছেন।উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করেছিল সংস্থাটি।