চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ফের বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে চার লাখ ৭৩ হাজার।সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্য দিকে দৈনিক মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৯ কোটি ৯৫ লাখের ঘর। অন্য দিকে মৃতের সংখ্যা ৪২ লাখ ৪৭ হাজার ছাড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাত হাজার ৫৯৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে সাড়ে তিনশর বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪২ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭০ জনে।এছাড়া একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন চার লাখ ৭৩ হাজার ৪০২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ৯৫ লাখ ৫৮ হাজার ৯২ জনে।গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ হাজার ৯৬২ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত তিন কোটি ৫৮ লাখ ৯৪ হাজার ২৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ছয় লাখ ২৯ হাজার ৮৬২ জন মারা গেছেন।
অন্য দিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার ৫৬৮ জন এবং নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৪০৪ জন।এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩৪ লাখ ৬২ হাজার ৮০০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯৭ হাজার ২৯১ জনের। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৭৮৫ জনের।এ দিকে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৭৩ জন এবং নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ১৪৩ জন।অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক কোটি ৯৯ লাখ ৫৩ হাজার ৫০১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৫৭ হাজার ৩৫৯ জনের।
অন্য দিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪২০ জন এবং নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৩১ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত তিন কোটি ১৭ লাখ ২৫ হাজার ৩৯৯ জন এবং মারা গেছেন চার লাখ ২৫ হাজার ২২৮ জন।এছাড়া এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে ৬১ লাখ ৫১ হাজার ৮০৩ জন, রাশিয়ায় ৬৩ লাখ ১২ হাজার ১৮৫ জন, যুক্তরাজ্যে ৫৯ লাখ ২ হাজার ৩৫৪ জন, ইতালিতে ৪৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩৩ জন, তুরস্কে ৫৭ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৩ জন, স্পেনে ৪৫ লাখ ২ হাজার ৯৮৩ জন, জার্মানিতে ৩৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭৭৮ জন এবং মেক্সিকোতে ২৮ লাখ ৫৪ হাজার ৯৯২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।অন্য দিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১১ হাজার ৯৩৬ জন, রাশিয়ায় এক লাখ ৬০ হাজার ১৩৭ জন, যুক্তরাজ্যে এক লাখ ২৯ হাজার ৭৪৩ জন, ইতালিতে এক লাখ ২৮ হাজার ৮৮ জন, তুরস্কে ৫১ হাজার ৫১৯ জন, স্পেনে ৮১ হাজার ৬৪৩ জন, জার্মানিতে ৯২ হাজার ১৮৩ জন এবং মেক্সিকোতে দুই লাখ ৪১ হাজার ৩৪ জন মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
