বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৪৪ লাখ ১৬ হাজার ছাড়ালো

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখ্যযোগ্যভাবে বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে মহামারি আঁকারে থাবা বসানো করোনায় শনাক্ত মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ১১ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা সাত লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়েছে।সর্বশেষ এক দিকে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখল যুক্তরাষ্ট্রে। অন্য দিকে দৈনিক মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় শনাক্তের সংখ্যা ২১ কোটি ৭ লাখের ঘর ছাড়িয়ে গেছে। অপর দিকে মৃতের সংখ্যা ৪৪ লাখ ১৬ হাজারে পৌঁছেছে।

শুক্রবার (২০ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ হাজার ৮৭৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় এদিন মৃত্যু বেড়েছে চার শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৪৪ লাখ ১৬ হাজার ২২৪ জনে পৌঁছেছে।এছাড়া নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন সাত লাখ ২০ হাজার ১৫১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় এদিন নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ল ৩১ হাজারের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসটিতে শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২১ কোটি সাত লাখ ৯৭ হাজার ২১৯ জনে দাঁড়িয়েছে।

গত এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৫৪ হাজার ৯১৭ জন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৬৭ জন। মহামারি করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত তিন কোটি ৮২ লাখ ৩১ হাজার ৭৮৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া মারা গেছেন ছয় লাখ ৪৩ হাজার ১১২ জন করোনা রোগী।অপর দিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখেছে দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ৪৯২ জন রোগী। আর নতুন করে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে ২২ হাজার ৫৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৩৯ লাখ ৩০ হাজার ৩০০ জনে পৌঁছে গেছে। আর এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন এক লাখ ২২ হাজার ৬৩৩ জনের।

এ দিকে করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ৩০ জন। আর নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৯৯১ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি চার লাখ ৯৪ হাজার ২১২ জন। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৩ জন করোনা রোগীর।করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসের থাবায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশটি। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৫৯ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে শনাক্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৩১২ জন। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্ত তিন কোটি ২৩ লাখ ৫৮ হাজার ২১০ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মারা গেছেন চার লাখ ৩৩ হাজার ৬২২ জন।গত ২৪ ঘণ্টায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে করোনার থাবায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৬৪ জন। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে ভাইরাসটিতে শনাক্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ২৬৬ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত ৪৫ লাখ ৮৭ হাজার ৬৮৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন এক লাখ ২৫৫ জন।

এছাড়া এখন পর্যন্ত ৬৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩৫৬ জন ফ্রান্সে, আর রাশিয়ায় ৬৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫৩১ জন, এছাড়া যুক্তরাজ্যে ৬৩ লাখ ৯২ হাজার ১৬০ জন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে ৪৪ লাখ ৬৪ হাজার পাঁচজন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৬১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৭২ জন, তাছাড়া ৪৭ লাখ ৫৮ হাজার তিনজন স্পেনে, আর জার্মানিতে ৩৮ লাখ ৫৪ হাজার ৫০৯ জন এবং ৩১ লাখ ৫২ হাজার ২০৫ জন মেক্সিকোতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।অন্য দিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১৩ হাজার একশ তিনজন, রাশিয়ায় এক লাখ ৭৩ হাজার ৭০০ জন, আর যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৩১ হাজার ৩৭৩ জন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে এক লাখ ২৮ হাজার ৬৩৪ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৫৩ হাজার ৮৯১ জন, স্পেনে ৮৩ হাজার চারজন, জার্মানিতে ৯২ হাজার ৪৪৭ জন এবং দুই লাখ ৫০ হাজার ৪৬৯ জন মেক্সিকোতে মৃত্যুবরণ করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।

Advertisement