ব্রিট বাংলা ডেস্ক : বিয়ানীবাজারে কভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিটি পৌরশহরের একটি জুয়েলার্সের কারিগর আকবর হোসেন (৩৫)। গত ১৭ এপ্রিল গাজীপুর শশুড়বাড়ি থেকে তিনি মোটর সাইকেল যুগে রওয়ানা হয়ে পরদিন ১৮ এপ্রিল বিয়ানীবাজারে পৌঁছান।
শুক্রবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন তাঁর ভাড়া বাসাটি লকডাউন করে তাকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসোলেশনে পাঠিয়েছে। একই সাথে তার সংস্পর্শে আসা সবাইকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পৌরসভার মুসলিম টাঙ্গাইল জুয়েলার্সের কারিগর আকবর হোসেন ১৬ এপ্রিল টাঙ্গাইল থেকে যাত্রা করে এক রাত গাজীপুর শশুড়বাড়ি অবস্থান করেন। সেখান থেকে মোটর সাইকেলে করে বিয়ানীবাজারে পৌছান ১৮ এপ্রিল। আসার পথে তিনি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় কিছু সময় বিশ্রাম করেন এবং এ সময় একটি রেস্টুরেন্টে চা নাস্তা করেছিলেন। গত ২১ এপ্রিল তার শরীরে কভিড-১৯ ভাইরাসের উপস্বর্গ দেখা দিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীলরা নমুনা সংগ্রহ করে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশেষ ল্যাবে প্রেরণ করেন। আকবর হোসেন পৌরসভার নয়াগ্রাম মৃত ছয়ফুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তার সাথে একজন কর্মচারী ও একই ভবনের অন্য দুইটি ইউনিটে আরও দুই পরিবার বসবাস করছে। আক্রান্ত আকবরের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়।
করোনাভাইরাসের পজেটিভ ওই রোগীর বাড়িতে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মাহবুব, পৌর মেয়র মো. আব্দুস শুকুর, টিএইচও মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী, ওসি অবনী শংকর করসহ স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীলরা। তারা বাড়িটি লকডাউন করেন এবং এ বাড়ির সকল বাসিন্দাকে বাড়ির বাইরে না যাওয়ার নির্দেশ দেন। একই সাথে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা পরিবারগুলোর খাদ্য সংকট তৈরী হলে দায়িত্বশীলদের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনী শংকর কর।
শিক্ষাবিদ মজির উদ্দিন আনছার বলেন, আমাদের উপজেলার অর্ধেক মানুষ প্রবাসে থাকেন। কভিড-১৯ ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করার পর এ অঞ্চলের অনেক প্রবাসী আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন। কিন্তু বিয়ানীবাজারে ভাইরাস পজেটিভ ব্যক্তিটি কোন প্রবাসী নয়। লকডাউনের এ সময়ে তিনি টাঙ্গাইল থেকে গাজীপুর হয়ে বিয়ানীবাজারে এসেছেন! যদি এই হয় লক ডাউনের অবস্থা তাহলে সারা দেশে আকবরের মতো কত লোক ছড়িয়েছে। সে প্রশ্ন নিঃশ্চয় দায়িত্বশীলরা খতিয়ে দেখবেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তিকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে প্রেরণ করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি যে বাড়িতে বসবাস করতেন সেটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তাছাড়া ইতোমধ্যে তার সংস্পর্শে আসা সকলকে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতেও আমরা কাজ করছি।