বিয়ের টাকার জন্য প্রেমিকার কথায় বৃদ্ধাকে খুন

ব্রিট বাংলা ডেস্ক : রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউপির দক্ষিণ কেরোয়া গ্রামের ইমন ও আসমা আক্তার আয়েশা। দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রেম ছিল। একপর্যায়ে তারা পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বিয়ে করার জন্য কোন টাকা-পয়সা ছিল না তাদের কাছে।

এদিকে একই এলাকার মাহফুজা খাতুন নামে এক বৃদ্ধা স্বর্ণালংকার পরে প্রতিদিন বিকেলে হাঁটতে বের হতেন। বিয়ের টাকার জন্য ওই বৃদ্ধাকে হত্যা করে প্রেমিক ইমনকে স্বর্ণালংকার লুট করতে বলেন প্রেমিকা আসমা। পরে তারা হত্যার পরিকল্পনা করেন দুদিন ধরে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় মাহফুজাকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার লুটে নেন ইমন। আর মরদেহ বস্তাবন্দী করে একটি খালে ফেলে দেন। ১৭ অক্টোবর ওই বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সন্দেহজনক ইমন ও আজিজ দুইজনকে আটক করা হয়। আজিজ ওই প্রেমিক যুগলের বার্তাবাহক। শনিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নোয়াখালী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. জহিরুল হক মোবাইল ফোনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ইমন ও আসমার প্রেম ছিল। আজিজ তাদের প্রেমের চিঠি আদান-প্রদানে সহযোগিতা করতেন। একদিন তারা পালিয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ইমনের কাছে টাকা ছিল না। ইমন বিষয়টি আসমাকে জানান। বিষয়টি শুনে বৃদ্ধ মাহফুজাকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার লুটে নিতে আসমা ইমনকে বলেন। এই পরিকল্পনার দুইদিন পর বৃদ্ধা মাহফুজার বাড়ির পাশে ইমন ও আজিজ ওত পেতে থাকেন। ঘটনার দিন মাহফুজা হাঁটতে বের হলে নিজ ঘরে ডেকে নেন ইমন। একপর্যায়ে ইমন ও আজিজ তার গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করেন।

তিনি আরো জানান, হত্যার পর বস্থাবন্দী করে মরদেহ বাড়ির রান্নাঘরের পেছনের বাগানে ফেলে দেন ইমন। এদিকে মাকে না পেয়ে বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেন ছেলেরা। এসব দেখে ইমন ও আজিজ বস্তাবন্দী মরদেহ টেনে নিয়ে পার্শ্ববর্তী খালে ফেলে দেন। পরে বস্তা টেনে নেয়ার চিহ্ন দেখে খাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতের ছেলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আব্দুল ওয়াদুদ শিপন বলেন, মায়ের হত্যাকান্ডের অগ্রগতি না দেখে মামলাটি পিবিআইয়ে হস্তান্তরের জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আবেদন করি। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়া হয়। পিবিআই নোয়াখালীর অ্যাডিশনাল এসপি বসু দত্ত চাকমা বলেন, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আসামিরা। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে তাদের নিরাপদ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement