বীরাঙ্গনাদের স্মরণে যুক্তরাজ্য যুব মহিলা লীগের সভা

সাজিয়া স্নিগ্ধা : বাঙ্গালী জাতীর শৃঙ্খলমুক্তির দিন, গৌরব ও অহংকারের ৪৮ তম মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার লন্ডনের মক্কা গ্রিলে যুক্তরাজ্য যুব মহিলা লীগ আয়োজন করে এক মুক্ত আলোচনা সভার।আলোচনার প্রতিপাদ্য ছিল, ” মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবদান এবং নারীর ক্ষমতায়নে বর্তমান বাংলাদেশ।”
যুক্তরাজ্য যুব মহিলা লীগের সাধারন সম্পাদক সাজিয়া স্নিগ্ধার সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শাহিন নাহার লিনার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরিফ, বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য মহিলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আঞ্জুমান আরা আঞ্জু, যুক্তরাজ্য যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক জামাল আহমেদ খান, কাউন্সিলর মজিবুর রহমান জসীম, সাবেক কাউন্সিলর রহিমা রহমান। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য গউস সুলতান, বিশেষ আলোচক ছিলেন শহমিকা আগুন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মাওলানা শফিকুর রহমান বিপ্লবী মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ, ৪ লক্ষ মা বোন,স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবার ,সাবেক এমপি রহিমা আক্তার , বনানীর এফ আর টাওয়ারে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন।


মিলাদ ও দোয়া পরেই অনুষ্ঠিত হয় মুক্ত আলোচনা সভার।আলোচনা সভায় আলোচকরা বলেন মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছে ৯ মাস কিন্তু বীরাঙ্গনাদের যুদ্ধ সারাজীবনের। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে নারীদের ভূমিকা ছিল গৌরবোজ্জ্বল। কখনও সহযোদ্ধা হিসেবে কখনও সরাসরি।এছাড়াও অস্ত্রচালনা ও গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ, আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবাশুশ্রশ্বা, তথ্য সরবরাহ , মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অর্থ, বস্ত্র ও ওষুধপত্র সংগ্রহ করে তাদের নিকট পৌঁছে দিয়েও যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে আমাদের নারীরা।মুক্তিযুদ্ধে পাকসেনা কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছে প্রায় চার লক্ষ নারী।১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাক হানাদার বাহিনীর তাদের দোসরদের হাতে নির্যাতিত নারীদের ‘বীরাঙ্গনা’ খেতাবে ভূষিত করেছিলেন।স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৪ বছর পর ২০১৫ সালের অক্টোবরে একাত্তরের পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের হাতে নির্যাতিত বীরাঙ্গনাদের বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধে তাদের অসামান্য অবদানের বিশেষ স্বীকৃতিস্বরূপ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেন।মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি পাওয়ার আগে বীরাঙ্গনাদের প্রশ্ন করা হয়েছিলো তাঁরা টাকা চান কিনা কিন্তু তাঁরা বলেছিলেন তাঁরা টাকা নয় সন্মান চান।পাক হানাদার বাহিনী আত্নসমর্পণের আগে প্রায় ৭০,০০০ নারীকে নিয়ে পাকিস্তানে পালিয়ে যায়। সেখানে বেশীরভাগ নারীদের পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়া হয় আর বাকিদের অত্যাচার করে মেরে ফেলা হয়। ১৯৭৩ সালে কয়েকজনকে ফেরত আনা হয়েছিলো মানসিক ভারসাম্যহীন অসুস্থ অবস্থায় কিন্তু কিছুদিন পরে তাঁরা মারা যান।আমরা যখন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরবো তখন মুক্তিযুদ্ধে বীরাঙ্গনাদের অবদানের কথাও তুলে ধরতে হবে কারন মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের অবদান অপরিসীম।
আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন লিটন,লন্ডন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম চৌধুরী, ইতালি মহিলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি শাহনাজ সুমি, কর্মজীবী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল বাসির, বিশিষ্ট আলেম শাফিকুর রহমান বিপ্লবী , সাংবাদিক মাতিয়ার চৌধুরী সায়েক আহমেদ, গুলাব আলী, আলিমুদ্দিন আহমেদ , রিনা মোশারাফ, ফারজানা ইসলাম, সাংবাদিক নুরুন নাবী আলী ,আবু হেলাল, আমিনুল খান, কবি হাফসা ইসলাম, রেডিও প্রেজেনটার মিফাতুল নূর, যুক্তরাজ্য যুবলীগ সদস্য খালেদ আহমেদ জয়, সাংবাদিক মাসুদ, সাংবাদিক কয়েস, সাংবাদিক শুভ, সাংবাদিক ইমাম হোসেন, কবি মুনিরা মলি,মাহমুদা মনি, হাসিনা হুসাইন, দুদু মিয়া প্রমুখ ।

Advertisement