ব্রিটেনের ক্যাপ্টেন মোর, দবিরুল চৌধুরী আর বাংলাদেশের ফকির নাজিম উদ্দিন

॥ ব্যারিস্টার আবুল কালাম চৌধুরী ॥

ব্রিটেনের ক্যাপ্টেন মোর আর দবিরুল ইসলাম চৌধুরী অসহায় মানুষের সাহায্যার্থে দুজনই ১০০ তম জন্ম বার্ষিকীতে মাত্ৰ এক হাজার পাউন্ড উত্তোলনের টার্গেট নিয়ে মিডিয়ায় আসেন আর মিডিয়ার বদৌলতে ক্যাপ্টেন মোরের সংগ্রহ ৩০ মিলিয়ন পাউন্ডের উপরে আর দবিরুল চৌধুরীর সংগ্রহ এ পর্যন্ত ১৫০ হাজার পাউন্ডের উপরে। খবরগুলো মিডিয়াতে না আসলে চুপিসারে হলে তারা কি এই অসম্ভব কাজ করতে পারতেন? কেউই বলেনি তারা তাদের নাম ফাটানোর জন্য এসেছেন? একজন লোককেও সমালোচনা করতে শুনিনি। সবাই হাত খোলে তাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন এবং তাদের প্রশংসা করেছেন। আর এজন্য তারা তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছেন।

বাংলাদেশের ফকির নাজিম উদ্দিনইবা কম কিসে? ভিক্ষা করে সারাজীবনের সঞ্চিত ১০ হাজার টাকা মানবতার সেবায় সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে তৈরী করেছেন অনন্য উদাহরণ। ফকির নাজিম উদ্দিন তার নাম ফাটাতে দিয়েছেন কিনা জানিনা। তবে আমরা তার বাহিরের মানুষকে দেখেছি এবং প্রশংসা করেছি। ভিতরটা দেখার কি আমাদের প্রয়োজন আছে? নিঃসন্দেহে এই খবরগুলো মিডিয়াতে আসার কারণে মানুষ উৎসাহিত হয়েছে আর প্রানখুলে দাঁড়িয়েছে মানুষেরই পাশে। এগুলো সমাজের ইতিবাচক দিক।

সকল সমস্যা আমাদের দেশে। সমালোচনা আর সমালোচনা। কে দান করে বেহেস্তে যাচ্ছে আর কে দান করে দোজখে যাচ্ছে। মানুষ আছে প্রাণ বাঁচানোর ধান্দায় আর আমরা আছি কার নাম কোনদিকে ফেটে যাচ্ছে। কে গোপনে করছে আর কে প্রকাশ্যে করছে। প্রকাশ্যে করার কারণে সে কোন দোজখে যাবে আর গোপনে করার কারণে সে কোন বেহেস্ত যাবে। চলছে চুল চেরা বিশ্লেষণ। মনে হয় পৃথিবীতে আর কোন কাজ নাই। সব কিছুতে খুঁতখুঁতি ভাব ভালোনা। এই মহাদুর্যোগ যে মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসে তাকে সাদরে গ্রহণ করা উচিত। কি ভাবে আসছে, সেটা বিবেচনা করার সময় এখন নয়। মানুষকে নিরুৎসাহিত করে এমন কর্ম থেকে আমাদের বিরত থাকা এবং মানুষের সকল ভালো কাজের প্রশংসা করা উচিত।

লেখক:
ব্যারিস্টার আবুল কালাম চৌধুরী
কন্ট্রিবিউটর, ব্রিট বাংলা২৪ এবং প্রিন্সিপাল সলিসিটার, কেসি সলিসিটর্স, লন্ডন।

Advertisement