ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: জঙ্গিবাদী-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন আওয়ামী যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও মৎস্যজীবী লীগ। রোববার রাজধানীতে পৃথক কর্মসূচি থেকে সংগঠনগুলোর নেতারা এই ঘোষণা দেন। তারা বলেন, বিএনপি-জামায়াতের মদদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের বিরোধিতার নামে ধর্মান্ধ মামুনুল হকরা জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছেন। তাকে দেশের কোথাও ওয়াজ করতে দেয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে তার মতো ধর্মান্ধদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে।
যুবলীগের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ : বিকালে গুলিস্তান কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে আওয়ামী যুবলীগ। এতে কেন্দ্রীয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখার নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
এ সময় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা নতুন নাটক শুরু করেছে। তারা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু দেশের আলেম সমাজ, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরাসহ দেশবাসী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার পক্ষে রয়েছেন। যুব সমাজ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। সারা দেশের যুবসমাজকে নিয়ে যুবলীগ সাম্প্রদায়িকতার অপচেষ্টা প্রতিহত করবে।
সমাবেশে প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মামনুর রশিদ, তাজউদ্দিন আহমেদ, মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মতিউর রহমান বাদশা, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাঈনউদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবুসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মামুনুল হককে প্রতিহত করার ঘোষণা : বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সংগঠনের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বাংলার ঐতিহ্য, ভাস্কর্য বাঁচিয়ে রাখে ইতিহাস। বিএনপি জামায়াতের মদদপুষ্ট উগ্র সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠী ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে জাতির পিতার ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতার নামে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে চলেছে।
সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বলেন, জাতির পিতার ভাস্কর্য সভ্যতার ধারা বিবরণী। ভাস্কর্য আর মূর্তি এক জিনিস নয়। বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে ভাস্কর্য তাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের গুরুত্ব বহন করে আসছে। স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। ধর্মের অপব্যাখ্যাকারী ফতোয়াবাজ কথিত মাওলানা মামুনুল হককে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে প্রতিহত করা হবে। এ সময় সিনিয়র সহ-সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সহ-সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, মজিবুর রহমান স্বপন, আবদুল আলীম বেপারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক কেএম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান নাঈম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
‘ষড়যন্ত্র’ প্রতিহতের ঘোষণা মৎস্যজীবী লীগের : ভাস্কর্য নিয়ে মামুনুল হকের বক্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ। সকালে ধানমণ্ডির রাসেল স্কয়ারের সামনে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এ সময় সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হাজী সায়ীদুর রহমান, কার্যকরী সভাপতি সাইফুল আলম মানিক, সাধারণ সম্পাদক লায়ন শেখ আজগর লস্কর প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে ধর্মান্ধ এবং সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য মানেই হল- মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়া এবং স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতিকে স্বীকার করে নেয়া। মামুনুল হক হয়তো জেনেও না জানার ভান করেছেন। কারণ তুরস্ক, ইরান, মিসরেও ভাস্কর্য আছে। মামুনুল হক জামায়াত-তালেবান গোষ্ঠীর প্রতিনিধি বিধায় বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান। স্বাধীনতাবিরোধী চক্ররা কোনো ইস্যু না পেয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন ভাস্কর্য উপড়ে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে। যে কোনো মূল্যে তাদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে। কর্মসূচিতে সংগঠনটির সহ-সভাপতি আবুল বাশার, আব্দুল গফুর চোকদার, মুহাম্মদ আলম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল আলিম, রফিকুল ইসলাম খাঁ, ফিরোজ আহম্মেদ তালুকদার, প্রচার সম্পাদক মো. শফিউল আলম শফিক, দপ্তর সম্পাদক এম.এইচ এনামুল হক রাজু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতির এক বছর পূর্তিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। পরে সংগঠনের প্রধান কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।