:: মোহাম্মদ রেজাউল করিম মৃধা ::
বাংলাদেশ এক আজব দেশ! এদেশে যেন ভালো মানুষ জন্মানোই এক মহা পাপ। এদেশে ভালো মানুষের যে মূল্য নেই সেটা আমরা সবাই জানি। হোক সেটা রাজনীতিক নেতা, আলেম, উপস্থাপক, অভিনেতা, অভিনেত্রী, গায়ক, গায়িকা, ভালো ছাত্র-ছাত্রী সহ যে কোন গুনি মানুষ। যখনই হবেন মেধাবী, তখনই হয়ে উঠবেন সকলের চক্ষুশুল।
পরিবার থেকে, আত্বীয়, এলাকা, মহল্লা, গ্রাম, শহর দেশ সহ সর্বত্র। কোথাও যেনো তার স্থান নেই। যখন সে মেধাবী তখন তার বিপত্তির শেষ নেই। আর এর মধ্যে যদি হয় ক্রিয়েটিভ তাহলে তো সমস্ত তীর তার দিকে। যদি কখনো দেশ বা দশের জন্য চায় কাজ করতে তখন সমস্ত কিছুই তার প্রতিকুলে। যদিও সাময়িকভাবে বেঁচে থাকে কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
এরকম হাজার হাজারটা উদাহরণ আপনাদের জানা তবে খুব সামান্য তুলে ধরার চেস্টা করছি।
যে দেশে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানকে হত্যা করতে পারে, সে দেশে আপনি আর কি আশা করতে পারেন? তিনি কখনো বিশ্বাস করেননি তাকে কেউ হত্যা করতে পারে। যা পাকিস্তান পারেননি তা বংলাদেশ করে দেখিয়েছে। আমরা সেই দেশের নাগরিক! অবাক হওয়ার কিছুই নেই।
কখনো হয় রাজনৈতিক কারনে কখনো হয় সামাজিক কারনে। কখনো না প্রেম বা পারিবারিক কারনে।
মোট কথা বাংলাদেশে ভালো মানুষের কোন স্থান নেই। আমাদের আক্রোশ এতটাই হিংস্র যে কোন কান্ড ঘটাতে কেউ পিছুপা হয় না । আর সেই আক্রোশের সাথে যদি করতে পারেন রাজনীতি সংযোগ তাহলে তো সোনায় সোহাগা।
এ বুদ্ধিমত্তা হত্যা আজ থেকে নয় বহু আগে থেকেই শুরু হয়েছে। স্বাধীনতার প্রাক্কালে শহীদউল্লাহ কায়সার, মুনির চৌধুরী, জহির রায়হান সহ বুদ্ধিদীপ্ত বুদ্ধিজীবিদের হত্যা তখন ই ইংগিত দিলো এদেশে বুদ্ধিদীপ্ত জ্ঞানীদের স্থান নেই।ভাগো যত তাড়াতাড়ি পারো, দূরে বহু দূরে।
যে ভাগতে পেরেছে সে বেঁচে গেছেন আর যে শির উচুঁ করে বুক টান করে দাঁড়িয়েছে তাকে বুলেটে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে। এখানেই শেষ নয়। যে যখন প্রতিবাদ করেছেন হয় গুম হতে হয়েছে নতুবা আসামী হয়ে জেলে পচতে হচ্ছে। নতুবা রাতের অন্ধকারে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। চিত্র নায়ক সালমান শাহ’র কি এমন দোষ ছিল তার যে জীবন দিতে হলো। টিভি উপস্থাপক ব্যরিস্টার রেজুয়ার রহমান আজ কোথায়?
সম্প্রতি আমাদের সবার প্রিয় মিজানুর রহমান আজহারী কেন অন্য দেশে । এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে।
আমাদের দেশে গুনিজনদের কি মূল্যায়ন আমরা করতে পারি? বা পেরেছি? না পারি নাই কোন দিন পারবোও না।
সম্প্রতি প্রবাসীদের নিয়ে কত বিড়ম্বনা । এ প্রবাসীর বাংলাদেশের রেমিটেন্স যোদ্ধা, এক এক জন প্রবাসী মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশকে উজার করে দিয়ে যাচ্ছে অথচ এখন প্রবাসীরা দেশের চক্ষুশুল হয়েছে।
স্বয়ং মন্ত্রী যখন কটাক্ষ করে কথা বলেন তখন অন্য সাধারন মানুষও সুযোগ পেয়ে যান।
ভুলে গেলে চলবে না এই প্রবাসীরাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যত দূর্যোগ এসেছে ক্লান্তিকাল এসেছে দেশের স্বার্থে সব কিছু বিলিয়ে দিয়েছে। ভবিষ্যতেও এগিয়ে আসবেন প্রবাসীরা আর একটি কথা মনে রাখবেন প্রবাসীরাই বাংলাদেশকে বেশী ভালোবাসে।
মনে রাখবেন প্রবাসীরাই দেশকে বেশী ভালোবাসে
Advertisement