রোহিঙ্গাদের দেখভাল করায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডামিনিক রাব। রোহিঙ্গারা যেন রাখাইনে ফিরতে পারে সে জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশে রোহিঙ্গা জীবনমান উন্নয়নে সহায়তারও প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।সোমবার রাতে ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।হাইকমিশন জানায়, বৈঠকে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে অভিনন্দন জানান এবং ঢাকা ও লন্ডনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে স্বাগত জানান।
বৈঠকে রাব আফগানিস্তানে ইস্যুতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার লক্ষে একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ বিষয়ে সাড়াদানের ওপর জোর দেন। তিনি কপ-২৬ সম্মেলন এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশ যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।মোমেন-রাবের বৈঠক নিয়ে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, ড. মোমেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে করোনা ইস্যুতে বাংলাদেশি নাগরিকদের যুক্তরাজ্যের লাল তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অনুরোধ করেন।এ প্রসঙ্গে রাব বলেন, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের হ্রাস সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছে যুক্তরাজ্য। তবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত পর্যালোচনা করেন। আমি আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমাদের দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের কারণে ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশকে লাল তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী চলমান আফগান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে উভয় পক্ষ আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আফগানিস্তানের জনগণ যেন টেকসই ভবিষ্যত পায় সেজন্য তাদের পাশে থাকবে বাংলাদেশ।বৈঠকে ব্রেক্সিটপরবর্তী বাণিজ্য ইস্যুতে মোমেন ব্রিটেনের শূন্য শুল্কের জিএসপি সুবিধা বাংলাদেশের জন্য ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি করোনা ইস্যুতে পোশাক শিল্প যে ক্ষতির মুখে পড়েছে তা তুলে ধরেন।এ ছাড়া তিনি আইটি, গ্রিন আরএমজি ও পোশাক শিল্পের পাশাপাশি অফশোর সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বৈদ্যুতিক যানবাহন ও ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক গণপরিবহন এবং রেলওয়ে খাতে ব্রিটেনকে নতুন বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।ভার্চুয়াল বৈঠকে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম উপস্থিত ছিলেন।