ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: গত জুনে ইংল্যান্ডের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিবেদন বেরিয়েছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ সালাহ ইংল্যান্ডে আসার পর ইসলাম বিদ্বেষীদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এবার মুসলিম বিদ্বেষী বেন বার্ডের ইসলাম গ্রহণের মধ্য দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার হলো। ব্রিটেনের জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এ দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বার্ড বর্ণনা করেছেন, তার বদলে যাওয়ার কাহিনী। জানিয়েছেন, কীভাবে মোহাম্মদ সালাহ তাকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার প্রেরণা জুগিয়েছেন।
নটিংহ্যামের মৌসুমি টিকিট বিক্রেতা বার্ড গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘মোহাম্মদ সালাহই প্রথম মুসলিম যার মধ্যে আমি নিজেকে খুঁজে পেয়েছি। তিনি যেভাবে জীবনযাপন করেন, যেভাবে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। একবার দেখলাম তিনি লিভারপুলের একজন ভক্তের সঙ্গে ছবি তুলছেন, যে কিনা ভাঙা নাক নিয়ে তার পেছনে ছুটছিল।
আমি জানি অন্য ফুটবলারও এমন করতে পারে, তবে আপনি শুধু সালাহর কাছেই এমনটা আশা করতে পারেন।’
ছোটবেলা থেকে মিডিয়ায় মুসমিলদের সম্পর্কে নেতিবাচক খবর শুনতে শুনতে এক সময় বার্ডও ঘৃণা করতে শুরু করেন মুসলিমদের। তবে সেই ধারণাও এক সময় পাল্টে গিয়েছিল তার। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময়ই মুসলিমদের ঘৃণা করতাম। আমি আর দশজন শ্বেতাঙ্গ ছাত্রের মতো বিভিন্ন শহরে গিয়েছি। প্রথম আমি ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারি পড়ালেখার মাধ্যমেই। বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে সুযোগ দিয়েছিল সৌদি আরবের ছাত্রদের সঙ্গে সাক্ষাত করার। আমি ভাবতাম, তারা খারাপ মানুষ যারা তলোয়ার নিয়ে চলাফেরা করে। কিন্তু যাদের সঙ্গে মিশেছি, সবাই খুব ভালো মানুষ ছিল। আরব দেশ সম্পর্কে আমার যে ধারণা ছিল তার কিছুই মিল পাইনি।’
মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন সম্পর্কে চমৎকার মন্তব্য করেছেন বার্ড। তিনি বলেন, ‘যখন মানুষ কোরআন পড়ে অথবা ইসলাম সম্পর্কে পড়ালেখা করে, তারা আলাদা কিছুই দেখতে পায়। যেমনটা মিডিয়ায় প্রচার হয় তেমনটা নয়। আমি মুসলিম সম্প্রদায়ে নতুন এবং এখনো শিখছি। এটা কঠিন। পুরো লাইফস্টাইলই আলাদা।’
২০১৭ সালে ইতালিয়ান ক্লাব এএস রোমা থেকে লিভারপুলে যোগ দেন সালাহ। প্রথম মৌসুমেই ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের সর্বাধিক গোলদাতা হন এই মিসরীয় তারকা। ইংল্যান্ডে এখন জনপ্রিয় ফুটবলাদের তালিকায় শীর্ষে সালাহ। ফুটবলার হলেও নিয়মিত নামাজ আদায় করেন তিনি। মাঠে নামেন দোয়া পড়ে। সালাহর লাইফ-স্টাইল ধীরে ধীরে ইসলাম সম্পর্কে দেশটির মানুষের নেতিবাচক মানসিকতা বদলে দিচ্ছে। চলতি বছরের জুনে প্রকাশিত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেদনে উঠে আসে সালাহ ইংল্যান্ডে আসার পর মুসলিম বিদ্বেষী অপরাধ ১৮.৯ শতাংশ কমে গেছে।