রিফলেকশন ১৯৭১’’ বাংলাদেশের গণহত্যার উপর চিত্রপ্রদর্শনী

ইউনিভারসিটি অব লন্ডনে ‘‘ রিফলেকশন-৭১’’ শিরোনামে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এক্সিভিশন বিজয়ের মাসে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশের গণহত্যা ও বর্তমান বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরতে ‘‘ রিফলেকশন ১৯৭১’’ শিরোনামে গতকাল ৪ডিসেম্বর বিকেলে ইউনিভারসিটি কলেজ (ইউ-সি-এল) লন্ডনে ইউ-সি-এল বাংলা সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজন করা হয় বাংলাদেশের গণহত্যার উপর চিত্রপ্রদর্শনী ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার।

গতকাল লন্ডন সময় সন্ধ্যে ৬টা ত্রিশ মিনিটে ইউষ্টন স্টেশনের অদূরে সেডউইক বিল্ডিং জি-ও ৮ হলে এই এক্সিভিশনের সার্বিক সহযোগীতায় ছিল স্বাধীনতা ট্রাষ্ট ও ডিক-পিকসার লাইব্রেরী। শুরুতে বাংলাদেশের উপর একটি ডকুমেন্টারী প্রদর্শন করা হয় এবং মুক্তিযুদ্ধ এবং গণহত্যার উপর শতাধিক আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ব্রিটিশ বাংলাদেশী নাজিফা উল্লার সভাপতিত্বে  আলোচনায় অংশ নেন ড. ডেভিড লুইস, সাইফুল ইসলাম ও রিনি রেখা।

ড. ডেভিট লুইস বলেন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গণহত্যা পৃথিবীর সব চাইতে বরবরচিত হত্যাকান্ডের অন্যতম, খুনি পাকিস্তানী বাহিনী যেমন দেশের সাধারন মানুষকে হত্যা করেছে ঠিক তেমনি ভাবে তাদের দোষর অক্সিলারি বাহিনী রাজাকার আলবদর এবং আলসাম বাহিনীও দেশে নয় মাস ব্যাপী হত্যাযঙ্গ সংগঠিত করে। ধর্মের দোহাই দিয়ে জামাতে ইসলামী এবং অন্যান্য ধর্মভিক্তিক কয়েকটি সংগঠন গণহত্যায় সহযোগীতা করে। বহুদিন পরে হলেও বাংলাদেশে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচার হচ্ছে।

তিনি বলেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করতে কাজ করছে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন শেখ হাসিনার সরকার, নারীর ক্ষমতায়ন, চিকিৎসা, শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়েছে সবচাইতে বেশী।

আর এটিই হলো উন্নয়নের পূর্ব শর্ত। তিনি বলেন বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রের য়াত্রা অব্যাহত রাখতে হলে একাত্তরের দোষর এবং ধর্মীয় উগ্রবাদীদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশকে তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে উগ্রবাদকে দমন করতে হবে।

আলোচক রিনি রেখা নিজকে একজন মুক্তিযুদ্ধার সন্তান পরিচয় দিয়ে বলেন দেশে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় তখন তার বয়স মাত্র ১৫ বছর, কিভাবে তারা ঢাকা থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন তার বর্ণনা দেন তিনি ।

রিনা রেখা বলেন তখন যদি ভারত বাংলাদেশকে সাহায্য না করতো তা হলে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। তিনি তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও দেশের জনগণের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে ভারতের অবদান ভূলার নয়। সাইফুল ইসলাম ১৯৪৭ সালের ভারত বিভক্তি থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরে বলেন আমাদের বাংলাদেশের মুক্তিযদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে।

নজপ্রজন্ম এবং বিদেশীদের কাছে এর সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে। অনুষ্টানের আয়োজক ইউনিভারসিটি বাংলা সোসাইটির অন্যতম কর্ণধার নাজিফা উল্লাহ বলেন মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে পারে সেজন্যে বাংলাদেশের জনগন এবং সরকারকে আরো উদ্যোগী হতে হবে। অনুষ্টানে বিশ্ববিদ্যালযের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনেকেই তাৎক্ষনিক ভাবে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে অংশ নেন।

Advertisement